দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি ::
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার ঘিলাছড়া স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক পদটি দীর্ঘদিন ধরে শূণ্য থাকায় এবং নিয়োগে জেলা শিক্ষা অফিসের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় পিছিয়ে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রম। এব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে সম্প্রতি প্রতিষ্ঠান গভর্নিংবডির সভাপতি মোঃ মোশাহিদ আলী সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের নিকট একটি লিখিত আবেদন করেছেন।
প্রতিষ্ঠানসূত্রে জানাযায়, ২০১৯ সালে ঘিলাছড়া স্কুল এন্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীর সাথে অনৈতিক আচরণ করার দায়ে তৎকালীন প্রধান শিক্ষক একেএম মজিবুর রহমানকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় গভর্নিংবডি কর্তৃক বরখাস্ত করা হয়, যা সিলেট শিক্ষা বোর্ডের আরবিট্রেশন বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত হয়। বোর্ড সাত দিনের মধ্যে তাঁকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দিলে তিনি তৎকালীন গভর্নিং বডির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে পদত্যাগ পত্র জমা দেন এবং বিধি মোতাবেক বেতন বাতাসহ সকল পাওনা বুঝে নেন।
পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২০২০ সালের ১০ নভেম্বর প্রত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। একইসময়ে একেএম মজিবুর রহমানের নাম এমপিও থেকে বাদ দেওয়ার জন্য জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট লিখিত ভাবে আবেদন করা হয়। কিন্তু জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবেদনটি গ্রহণ না করে মামলা শেষ করার কথা বলে আবেদন ফেরত পাঠান।
এদিকে বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক একেএম মজিবুর রহমানকে জোরপূর্বক পদত্যাগ পত্রে সাক্ষর করা হয়েছে মর্মে আমল গ্রহণকারী হাকিম আদালত, দোয়ারাবাজারে একটি অভিযোগ দাখিল করেন। আদালতের নির্দেশে প্রশাসনের তদন্তে ওই অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় আদালত অভিযোগটি খারিজ করে দেন।
সম্প্রতি এমপিও থেকে একেএক মজিবুর রহমানের নাম বাদ দেওয়ার জন্য পুনরায় জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের নিকট অনলাইনে লিখিত ভাবে আবেদন করা হয়। তিনি এই আবেদনটিও অপ্রত্যাশিত ভাবে ফেরত পাঠান। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় জেলা শিক্ষা কর্তকর্তার এমন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির কারণে প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদে নিয়োগ প্রদান করা যাচ্ছে না। ফলে প্রধান শিক্ষক বিহীন অবস্থায় প্রতিষ্ঠানটি সার্বিক ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়েছে।
স্থানীয় শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সচেতন মহল জানিয়েছেন ঘিলাছড়া স্কুল এন্ড কলেজে দীর্ঘদিন থেকে প্রধান শিক্ষক না থাকায় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। দিনদিন প্রতিষ্ঠানের ফলাফল বিপর্যয় হচ্ছে।
ঘিলাছড়া স্কুল এন্ড কলেজের গভর্নিংবডির সভাপতি মোঃ মোশাহিদ আলী বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক নিয়োগে জেলা শিক্ষা অফিসারের অহেতুক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির কারণে বার বার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরও প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাচ্ছে না। এতে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রমের অবনতি হচ্ছে।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘মামলা যেহেতু খারিজ হয়েগেছে এখন শিঘ্রই ঘিলাছড়া স্কুল এন্ড কলেজে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। এব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট চিঠিও দেওয়া হয়েছে।’