দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি ::
দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে নি:স্ব হয়ে সৌদি আরব ফেরত হোসনা বেগম (৪০) এখন মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তিনি সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার দোহালিয়া ইউনিয়নের পানাইল নতুন পাড়া গ্রামের আব্দুল আলীর স্ত্রী।
বুধবার সকালে হোসনা বেগম তাঁর বাড়িতে এক সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে দালাল চক্র সৌদি আরব পাঠিয়ে সেখানে তাঁকে শারীরিক ও মানসিকভাবে অকথ্য নির্যাতনের লোমহর্ষক বর্ণনা করেছেন।
তাঁর দেয়া তথ্যমতে, একবছর পূর্বে ছাতক উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাউসা (কেসবপুর) গ্রামের মৃত মনোহর আলীর পুত্র দালাল নজরুল ইসলাম ভুক্তভোগী হোসনা বেগমকে গৃহপরিচারিকার চাকুরী দেওয়ার কথা বলে বিনা খরচে সৌদি আরবে পাঠায়।
সেখানে দালালের যোগসাজশে কফিল তাঁর ওপর অমানবিক নির্যাতন চালাতে থাকে। এ নিয়ে নির্যাতিতা হোসনা বেগম তাঁকে উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনার আকুতি জানালেও দালাল নজরুল ইসলাম তাঁকে কোনও সহযোগিতা করেনি। অবশেষে তাঁর স্বামী জমিজমা বিক্রি করে ট্রাভেল এজেন্সির সহায়তায় দীর্ঘ ৮ মাস পর বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন।
প্রায় তিন মাস পূর্বে হোসনা বেগম বাড়ি ফিরলেও শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে এখনও হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য দৌড়াচ্ছেন। এখন মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছেন তিনি।
হোসনা বেগম কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, ‘
দালাল নজরুল ইসলাম মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে আমাকে বিনা খরচে সৌদি আরব পাঠিয়ে বখাটে কফিলের হাতে তুলে দেয়। সেখানে কফিল আমার ওপর অমানবিক নির্যাতন এবং তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গরম তেল দিয়ে ছ্যাঁকা দেয়। আমি দেশে থাকা দালাল নজরুল কে বারবার ফোন করলেও সে আমাকে উদ্ধার করেনি।
৮ মাসে বাংলাদেশী টাকায় ৩২ হাজার টাকা বাড়িতে পাঠিয়েছি। বাকি টাকা কফিলের কাছ থেকে দালাল নজরুল নিয়ে নেয়। আমার পাওনা তার কাছ আরও ২ লাখ টাকা। আমি দালালের কাছ থেকে পাওনা টাকা এবং নারী পাচারকারী হিসেবে তার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চাই।
ভুক্তভোগী হোসনা বেগমের স্বামী আবদুল আলী বলেন, আমার স্ত্রীকে প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা বেতনে গৃহপরিচারিকর চাকুরী দেওয়ার কথা বলে সৌদি আরবে নেয়। সেখানে যাওয়ার পর কফিল অকথ্য নির্যাতন করে এবং স্ত্রী কে কফিলের কাছে বিক্রি করে সমস্ত টাকা পয়সা দালাল নজরুল ইসলাম নিয়ে আসে। দালালের স্ত্রীর নামও হোসনা বেগম।
সে স্বামী পরিচয়ে এই নামের ব্যাংক একাউন্টে কফিলের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আসে। আমি জমিজমা বিক্রি করে তাঁকে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরিয়ে আনি। দালালের কাছে পাওনা টাকা ও পাচারের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চাই।