জেলা প্রতিনিধি,
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চাপের মুখে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গত সোমবার (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনার সরকারের পতন হওয়ার পর পরই আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা দেশ ছেড়ে পালানো শুরু করেন। আবার অনেকে পালাতে না পেরে দেশেই আত্মগোপনে রয়েছেন।
দীর্ঘ ১৬ বছর দেশের ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের এমন পতনের পর মানিকগঞ্জে দলটির নেতা-কর্মীরাও বিপদে রয়েছেন। চলমান পরিস্থিতির কথা বিবেচনায় আত্মগোপনে রয়েছেন মানিকগঞ্জ-২ (সিংগাইর-হরিরামপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম।
যদিও তার আত্মগোপন নিয়েও নানা রকম তথ্য শোনা যাচ্ছে। কেউ বলছে, তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। আবার কারো মতে, মমতাজ মানিকগঞ্জে নেই তবে ঢাকায় নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন।
মমতাজ বেগমের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেখা গেছে, গত ৪ আগস্ট নিজ নামে তৈরি হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। একইদিনে আরও একটি পোস্ট শেয়ার করেন। তবে এরপর থেকেই সামাজিক মাধ্যমেও দেখা মিলছে না এই গায়িকার।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকার মনোনিত প্রার্থী ছিলেন মমতাজ বেগম। তবে নিজ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুর কাছে নির্বাচনে পরাজিত হন তিনি। তবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত না হলেও তিনি সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন দীর্ঘদিন ধরে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর থেকে মমতাজ নিজ এলাকায় তেমন আসতেন না। এছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতেও তেমন সরব ছিলেন না। গানের জগতের মানুষ মমতাজ, তাই গান নিয়েই আবার ব্যস্ত হয়েছিলেন।
এরই মধ্যে মাসখানেক আগেও যুক্তরাষ্ট্রে কয়েকটি প্রোগ্রামে অংশ নেন মমতজা। সবশেষ নিউয়র্কের জ্যামাইকায় একটি অনুষ্ঠান শেষে ১৯ মে দেশে ফেরেন তিনি। চলতি মাসেই আবারও আমেরিকা সফরে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। তবে দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতিতে আর যেতে পারেননি সাবেক এই সংসদ সদস্য।
বর্তমানে মমতাজ সিংগাইরের জয়মন্টপের বাড়িতে আছেন নাকি ঢাকার মহাখালির বাসায় অবস্থান করছেন সেটা নিশ্চিত করা যায়নি। তার ঘনিষ্ঠজনেরা বলছেন, সাবেক এই সংসদ সদস্য দেশেই রয়েছেন আত্মগোপনে। তবে মানিকগঞ্জের সিংগাইরের বাড়িতে নেই।
এদিকে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর মানিকগঞ্জে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়সহ সরকারি বিভিন্ন অফিস, দলের নেতা-কর্মীদের বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়। সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সংসদ মমতাজ বেগমের প্রাক্তণ স্বামীর ভাগনে শহীদুর রহমান ওরফে ভিপি শহীদের বাড়ি ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়। তবে সিংগাইরের জয়মন্টপ গ্রামে মমতাজের বাউল কমপ্লেক্স বাড়িতে ভাঙচুর বা আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি।
এ বিষয়ে কথা বলতে বুধবার সন্ধ্যা ৬ টায় মমতাজ বেগমের ব্যবহৃত মুঠোফোন নাম্বারে কল করা হয়। তবে কলটি কয়েকবার বাজলেও অপরপ্রান্ত থেকে তিনি রিসিভ করেননি। ফলে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।