নিজস্ব প্রতিবেদক,
সিলেটে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। আজ মঙ্গলববার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নগরীর কোর্ট পয়েন্টের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে, বিকেল থেকে সিলেট নগরীর কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা অবস্থান নেয়। এসময় নগরীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হয়ে মিছিল নিয়ে বের হয় ছাত্রলীগ নেতা–কর্মীরা। পরে দেশীয় অস্ত্র সহকারে মিছিল নিয়ে কোর্ট পয়েন্টে এসে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ নেতা–কর্মীরা। প্রায় ১০ মিনিট চলে সংঘর্ষ। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
সিলেট কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মইন উদ্দিন বলেন, ‘বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নগরীর কোর্ট পয়েন্টে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’
এদিকে, সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধ করেছে কোট সংস্কার আন্দোলনকারীরা।
এদিকে, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবি ও এ নিয়ে আন্দোলনরতদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন সড়কেও আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। এর আগে, গতকাল সোমবার দিনভর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগের দফায় দফায় সংঘর্ষ আর পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। এতে আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নেন প্রায় ৩০০ জন।
২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি-১ শাখা নবম গ্রেড এবং ১০ম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত সরাসরি নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে একটি পরিপত্র জারি করা করে। ফলে সরকারি চাকরিতে ১০ শতাংশ নারী কোটা, ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা এবং ১০ শতাংশ জেলা কোটা বাতিল হয়ে যায়।
পরে ওই পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলাম তুষারসহ সাত জন হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করে। ওই রিটের শুনানি শেষে গত ৫ জুন সরকারের জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। এতে সরকারি চাকরিতে আবারও কোটা ফিরে আসে।
আপিলে গেলে গত ৯ জুন হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে বিষয়টি আপিল বিভাগের বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান চেম্বার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম। ৪ জুলাই আপিল বেঞ্চ জানায়, হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর মামলাটির শুনানি শুরু হবে।
গত ১১ জুলাই আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়ের ওপর এক মাসের স্থগিতাদেশ দেন। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানায়, ঝুলন্ত কোনো সিদ্ধান্ত তারা মানবেন না। এরপর থেকেই এই আন্দোলন নিয়ে উত্তেজনা বাড়তে থাকে।