স্পোর্টস ডেস্ক,
ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালই যেন অঘোষিত এক ফাইনাল। শেষ চারের রোমাঞ্চকর দ্বৈরথটা ছিল স্পেনের আক্রমণাত্মক ফুটবলের সঙ্গে ফ্রান্সের জমাট রক্ষণের। জমজমাট সেই ম্যাচে ফ্রান্সকে হতাশায় ডুবিয়ে এক যুগ পর ফাইনাল নিশ্চিত করল স্পেন। সর্বশেষ ২০১২ সালে ফাইনাল খেলেছিল স্প্যানিশরা। ওই আসরে শিরোপাও জিতেছিল দলটি।
আজ বুধবার (১০ জুলাই) জার্মানির মিউনিখ ফুটবল এরিনাতে ২-১ গোলে জয় পায় স্পেন। দলের হয়ে গোল করেন লামিন ইয়ামাল ও দানি ওলমো। আর ফ্রান্সের হয়ে গোল করেন কোলো মুয়ানি। এক যুগ পর আবার স্পেনের সামনে শিরোপা জয়ের সুযোগ। এই জয়ের মাধ্যমে প্রথম দল হিসেবে ইউরোতে টানা ছয় ম্যাচ জেতার রেকর্ড গড়ল স্পেন।
ম্যাচের শুরুতে আক্রমণে এগিয়ে ছিল স্পেন। দ্বিতীয় মিনিটেই সুযোগ পেয়েছিল দলটি। তবে, ফ্যাবিয়ান রুইজ ক্রস করলেও অপরপ্রান্তে কেউ ছিল না। পঞ্চম মিনিটে অসাধারণ এক ক্রসে ইয়ামালের ভাসিয়ে দেওয়া বলে লাফিয়ে উঠে হেড করেন রুইজ। তবে, এবারও দলকে এগিয়ে নিতে পারেননি তিনি। গোলবারের ওপর দিয়ে চলে যায় বল।
অবশ্য বল দখলে পিছিয়ে থাকলেও গোল পেতে সময় লাগেনি ফ্রান্সের। ম্যাচের অষ্টম মিনিটে বাঁ প্রান্ত দিয়ে কিলিয়ান এমবাপ্পের দারুণ ক্রসে কোলো মুয়ানি মাপা হেডে দলকে এগিয়ে নেন। ১-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে স্পেন। যদিও কিছুতেই তারা গোলের দেখা পাচ্ছিল না।
ম্যাচের ১৮তম মিনিটে আরও একবার এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল ফ্রান্স। এমবাপ্পের জোরালো শট ঠেকিয়ে দলকে রক্ষা করেন স্প্যানিশ রক্ষণভাগের খেলোয়াড়রা। একের পর এক আক্রমণের ফল হিসেবে সমতায় ফিরতে সময় লাগেনি স্পেনের। ম্যাচের ২০তম মিনিটে দলকে সমতায় ফেরান তরুণ লামিন ইয়ামাল। আলভারো মোরাতার অ্যাসিস্ট থেকে বাঁ-পায়ের দারুণ শটে ফরাসিদের হতাশায় ডোবান ১৬ বছর বয়সী এই কিশোর।
কে জানত প্রথম গোলের পর দ্বিতীয় গোল পেতেও সময় লাগবে না স্পেনের। ৪ মিনিট পরই দ্বিতীয় গোলের দেখা পেয়ে যায় দলটি। দানি ওলমোর গোলে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায় লুইস ডি লা ফুয়েন্তে শিষ্যরা। ডি-বক্সে দুই ফরাসি ডিফেন্ডারের মাঝখান দিয়ে শট নিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন স্প্যানিশ অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ওলমো।
বাকি সময়ে তেমন জোরালো আক্রমণ না হওয়ায় ২-১ গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় স্পেন। বিরতির পর অবশ্য বল দখলে আধিপত্য দেখায় ফরাসিরা। ম্যাচের ৫১তম মিনিটে সুযোগ পেয়েছিল ফ্রান্স। এমবাপ্পের বাড়িয়ে দেওয়া বলে দেম্বেলে গোল অভিমুখে শট নিলেও তা সহজেই তালুবন্দী করেন স্প্যানিশ গোলরক্ষক উনাই সিমন।
পরবর্তীতে ম্যাচের ৫৯তম মিনিটে একক প্রচেষ্টায় ডি-বক্সের ভেতর প্রবেশ করেন দেম্বেলে। গোলের দেখা প্রায় পেয়েই গিয়েছিলেন তিনি। তবে,ভাগ্য সহায় হয়নি। গোলরক্ষক উনাই সিমনে হাতে লেগে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় তার শট।
৭৫তম মিনিটে ফের সুযোগ পায় ফ্রান্স। এবারও দেম্বেলের ক্রস থেকে ঠিক জায়গায় শট না নিতে পারায় সুযোগ হাতছাড়া হয় দিদিয়ের দেশম শিষ্যদের। ৮১তম মিনিটে ফের একবার ডি-বক্সের বেশ খানিকটা দূর থেকে শট করেন ইয়ামাল। এবার আর জালের দেখা পাননি তিনি। বাকি সময়ে আরও বেশ কিছু আক্রমণ করলেও গোলের দেখা পায়নি কোনো দল। ২-১ ব্যবধানের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে স্প্যানিশরা।