স্টাফ রিপোর্টার,
চার পয়েন্টে কুশিয়ারা, একটিতে সুরমার পানি বিপদসীমার উপরে থাকায় সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে। যে কারণে এখনো ১১৮০টি গ্রাম প্লাবিত রয়েছে ১৩ উপজেলায়।
এসব উপজেলায় বন্যাকবলিত মানুষের দুর্ভোগ দীর্ঘস্থায়ী হয়ে পড়েছে। এবার কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী বাসিন্দারা দীর্ঘস্থায়ী বন্যার কবলে পড়ে ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন সাত উপজেলার মানুষ। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সিলেটের জকিগঞ্জে।
বৃহস্পতিবারে কুশিয়ারার পানি ওই পয়েন্টে বিপদসীমার ১৫৬ সেন্টিমিটার উপরে ওঠায় বিগত বন্যায় ভাঙা ডাইকগুলো ডুবিয়ে পানি ঢুকেছে লোকালয়ে। প্লাবিত করেছে ৮৭টি গ্রাম। আর উপজেলার লাখের উপর মানুষ বন্যাকবলিত হয়েছেন। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে কৃষি ও মৎস্য খামারের। স্থানীয়রা জানান, বিগত বন্যারে পানিতে বাজার, রাস্তাঘাট, ঘরবাড়িতে পানি উঠেছিল।
এখনো সেভাবেই আছে। বরং এখন বন্যা আরও বিস্তৃৃত হয়েছে। গতকাল কুশিয়ারায় জকিগঞ্জের অমলশীদ পয়েন্টে পানি সকালে ছিল বিপদসীমার ১৪৩ সেন্টিমিটার উপরে। সন্ধ্যা ৬টায় ১৩৩ সেন্টিমিটারে নেমে এসেছে।
তবে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় কুশিয়ারার তীরবর্তী ফেষ্ণুগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দারা।
বিগত বন্যার পানিবন্দি থাকাবস্থায়ই আবারো প্লাবিত হয় ফেষ্ণুগঞ্জ। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিপদসীমার ১০২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারার এই পয়েন্টে বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ১০৩ সেন্টিমিটার ছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ৬৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এ ছাড়া সিলেট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার নিচে নেমেছে। কুশিয়ারা নদীর পানি বিয়ানীবাজারের শেওলা পয়েন্টে সকাল থেকে বিপদসীমার এক সেন্টিমিটার কমে ৩৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জকিগঞ্জের অমলসিদ পয়েন্টে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার গতকাল দুপুরে ছিল ১৫৪ সেন্টিমিটার, গতকাল সকালে ১৪৩ থেকে ১৩৩ সেন্টিমিটারে নেমে এসেছে। ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে কুশিয়ারার পানি বিপদসীমার ১০২ সেন্টিমিটার এবং শেরপুর পয়েন্টে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ২৫ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
জেলা প্রশাসন থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২৪ ঘণ্টায় আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিতের সংখ্যা বেড়েছে। বর্তমানে আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন ৯ হাজার ৩৬৭ জন।
সিলেট জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, সিলেটের ১৩টি উপজেলার এ পর্যন্ত পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা ৬ লাখ ২৬ হাজার ১৩৮ জন দেখানো গয়েছে। ১০১টি ইউনিয়নের ১১৮০টি গ্রাম বন্যাকবলিত হয়েছে।