Sunday, November 24, 2024
Homeসিলেট বিভাগসুনামগঞ্জপুকুরের মাছ ভেসে গেছে বানের জলে, ৪০ লাখ টাকা ঋন নিয়ে দিশেহারা...

পুকুরের মাছ ভেসে গেছে বানের জলে, ৪০ লাখ টাকা ঋন নিয়ে দিশেহারা মৎস্যখামারী আব্দুর রহিম 

 

 

দোয়ারাবাজার, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

 

পাহাড়ি ঢলে দুই দফা বন্যায় পথে বসার উপক্রম হয়েছে দোয়ারাবাজারের মৎস্যখামারীদের। বানের জলে পুকুরের মাছ ভেসে গিয়ে এ উপজেলায় অন্তত ২৪ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে। উপজেলার সুরমা, লক্ষ্মীপুর ও সদর ইউনিয়নে কোন খামারী পুকুর অবশিষ্ট নেই। ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যায় ব্যাপক ক্ষতির রেশ কাটতে না কাটতে একবছর বিরতির পর ফের কয়েক দফা বন্যায় কপাল পুড়েছে মৎস্যখামারীদের।

চলতি বছর ৪০ লাখ টাকা ব্যাংক থেক ঋণ নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা ছিল উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের মৎস্যখামারী আব্দুর রহিমের। তিনি নিজের ৭ একর জমিতে ১২টি পুকুরে মাছ চাষ করেছিলেন। ওই মাছ বিক্রি করে কৃষি ব্যাংকের ঋন পরিশোধ করতেন। কিন্তু দুই দফা বন্যায় সবক’টি পুকুরের কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে বানের জলে। স্থানীয় কৃষি ব্যাংকের মোটা অংকের ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে তিনি এখন দিশেহারা।

বৃহস্পতিবার বিকেলে সরজমিন ক্ষয়ক্ষতি দেখতে গেলে হাউমাউ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন আলীপুর গ্রামের মৎস্যখামারী আব্দুর রহিম। তিনি বলেন, ২০০৩ সাল থেকে আমি মৎস্য চাষ করে আসছি। এর আয় থেকেই চলে আমার সংসার-পরিবার। প্রতিবছরই লাখ লাখ টাকা আয় হয়ে থাকে।

২০২২ সালের বন্যায় ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হই। এরপর স্থানীয় কৃষি ব্যাংক থেকে ৪০ লাখ টাকা ঋণ উত্তোলন করে সবগুলো পুকুর নতুন করে মেরামত করে মোটা অংকের পুঁজি বিনিয়োগ করে মাছ চাষ করি। এবারের বন্যায় আমার সব স্বপ্ন শেষ। আমি এখন যাবো কোথায়? ঋণের কি হবে।

একই গ্রামের আশিস রহমান কয়েকটি বড় পুকুরে প্রায় কয়েক লাখ টাকার মাছ চাষ করেছিলেন। কিন্তু যখন মাছ বিক্রির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখনই বন্যায় তলিয়ে যায় তাঁর পুকুর গুলো। এক রাতেই পানির তোড়ে ভেঙে যায় তাঁর পুকুরগুলোর পাড়। ভেসে যায় মাছ।

তিনি বলেন, ‘হঠাৎই পানি বেড়ে যায়। এক রাতেই সব পুকুরে পানি ঢুকে পড়ে। বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে খামারের। কী করব, বুঝতে পারছি না।’

স্থানীয়রা জানান, এবারের বন্যায় দোয়ারাবাজার উপজেলার অন্তত ১হাজার ৬শ’ পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এ কারণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এখানকার মাছচাষিরা। ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারের কাছ থেকে সহযোগিতা দাবি করেছেন তাঁরা।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তুষার কান্তি বর্মণ বলেছেন, দুই দফা বন্যায় মৎস্যখামারী আব্দুর রহিমের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে।

এ ছাড়া উপজেলার প্রত্যেক এলাকার ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে ইতিমধ্যে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। প্রতিদিনই আমি নৌকাযোগে মৎস্যখামারীদের ক্ষয়ক্ষতি সরজমিন পরিদর্শন করে আসছি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments