নিজস্ব প্রতিবেদক,
সুনামগঞ্জ ও ভারতের চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। পাহাড়ি ঢল কম নামায় কমতে শুরু করেছে সুরমা, কুশিয়ারা, যাদুকাটা-সহ জেলার সব নদ-নদীর পানি। এতে সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। সেই সঙ্গে ঢলের পানিতে তলিয়ে যাওয়া পৌর শহরের রাস্তাঘাট থেকেও পানি নেমে গেছে। তবে এখনও পানিতে তলিয়ে আছে নিম্নাঞ্চলের গ্রামীণ সড়ক ও কিছু ঘরবাড়ি।
এদিকে সুনামগঞ্জ পৌর শহরে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও এখনও আতঙ্ক কমেনি হাওর অঞ্চলের মানুষদের। তারা বলছেন, পাহাড়ি ঢলের পানির কোনো বিশ্বাস নেই। এক বন্যার রেশ না কাটতে আবারও পাহাড়ি ঢলের পানিতে সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতিতে সৃষ্টি হওয়ায় আমরা খুব কষ্টে আছি।
এদিকে, দূর্গাপুর, শক্তিয়ারখলা সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গত চারদিন ধরে জেলা শহরের সঙ্গে তাহিরপুর উপজেলার সরাসরি সড়ক পথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে এমনকি দোয়ারা বাজার উপজেলা সদরের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সুরমা, লক্ষ্মীপুরসহ কয়েকটি ইউনিয়নের। এতে পানি কমলেও চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন দুই লক্ষাধিক মানুষ।
বড়পাড়া এলাকার বাসিন্দা অ্যাডভোকেট আফজল হোসেন বলেন, মঙ্গলবার জুলাই সকাল পর্যন্ত পানি বাড়লেও সারাদিন রৌদ্রময় থাকায় দিনের পাশাপাশি রাতেও তেমন বৃষ্টিপাত হয়নি। বুধবার সকাল পর্যন্ত বৃষ্টি কম থাকায় ঢলের পানি কমেছে। এতে আমাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।
শক্তিয়ারখলা দুর্গাপুরের বাসিন্দা অদুদ আহমেদ বলেন, সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়কে ঢলের পানিপ্রবাহ অনেক কমেছে। এভাবে কমতে থাকলে এই সড়ক দিয়ে তাহিরপুর উপজেলার সঙ্গে দ্রুতই যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
ভাদেরটেক গ্রামের শাওন আহমেদ বলেন, লোকালয়ের পানি কমেছে। বৃষ্টি কমে যাওয়ায় পানি অনেকটা কমে গেছে। রাতে বৃষ্টি না হওয়ায় বন্যার শঙ্কা অনেকটা কেটে গেছে।
দোয়ারাবাজার উপজেলার জালালপুর গ্রামের বাসিন্দা ইদ্রিস আলী বলেন, নদী থেকে হাওরে পানি ঢুকছে। তাই নদীর পানি কমছে। তবে দ্বিতীয় দফা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা দিয়ে পাহাড়ি ঢলের পানি হাওরে ঢুকছে। যদি বৃষ্টি না হয় তাহলে দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় সুরমা নদীর পানি ২৮ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় চেরাপুঞ্জি ও সুনামগঞ্জে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় পানি কমতে শুরু করেছে। এতে নতুন করে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তবে সুরমা নদীর পাঁচটি পয়েন্টের মধ্যে ছাতক ও সুনামগঞ্জে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। মেঘালয়ে বৃষ্টিপাত কম হলে সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সকালে দোয়ারাবাজারে বানের পানির স্রোতে নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ ৩ জনের সন্ধান এখনো (এ রিপোর্ট লেখার সময়) মেলেনি।