Sunday, November 24, 2024
Homeসিলেট বিভাগমৌলভীবাজারভারি বৃষ্টিতে মৌলভীবাজারে পানিবন্দি লক্ষাধিক মানুষ

ভারি বৃষ্টিতে মৌলভীবাজারে পানিবন্দি লক্ষাধিক মানুষ

 

রকিবুল ইসলাম রকি, মৌলভীবাজার সদর ::

উজানের পাহাড়ি ঢলে ও ভারি বৃষ্টিতে মৌলভীবাজার সদর, রাজনগরসহ সাতটি উপজেলারই নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বন্যা হয়েছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় ঈদুল আজহার দিনেও ভোগান্তিতে পড়েন মুসল্লিরা। পানিবন্দি অনেক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠছেন।

জানা যায়, সোমবার (১৭ জুন) ভোর থেকেই মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় টানা বৃষ্টিপাত হয়। এতে করে ডুবে যায় নিম্নাঞ্চলের রাস্তা ঘাট। ঈদের দিনে এই টানা বৃষ্টিপাত ও বন্যার কারণে মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন।

অনেক ঈদগাহে পানি উঠে যাওয়ায় ঈদের নামাজ হয় উচুঁস্থান ও মসজিদে। অনেক রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে করে জেলার প্রায় সাতটি উপজেলার প্রায় ২০টি ইউনিয়নের ৫ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের ১,২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড পানিতে তলিয়ে গেছে। মনুমুখ ইউনিয়নেরও কয়েকটি ওয়ার্ডে পানি বেড়ে বন্যা হয়েছে। ঈদের দিন নামাজ ঈদগাহে গিয়ে আদায় করতে পারেননি নিম্নাঞ্চলের মানুষ।

পশু কোরবানি দিতে গিয়ে পড়ছেন বিড়ম্বনায়। চারদিকে পানি থাকায় ও অঝোর ধারায় বৃষ্টিপাত হওয়ায় এ সমস্যায় পড়েন মানুষ। বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করায় আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছেন অনেকে। কুশিয়ারা নদীর পানি বেড়ে রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ও ফহেতপুরসহ কয়েকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে।

এছাড়া মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, জুড়ি ও বড়লেখা উপজেলার হাকালুকি হাওর এলাকা, রাজনগর ও সদর কুশিয়ারি নদীর পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলার নিচু এলাকায় ভারি বর্ষণে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

খলিলপুর ইউনিয়নের হামরেকোনা গ্রামের বাসিন্দা মামুন জানান, দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে এবার পানি বেশি বেড়েছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। যার কারণে বাড়ি থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। পানি বাড়তেই আছে। ঈদের দিন নামাজ আদায় ও পশু কোরবানি দিতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে মুসল্লিদের।

শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার সকালে মাত্র ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আজ বেড়ে গিয়ে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ১২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টায় এই অঞ্চলে ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বিকেলে মৌলভীবাজারের কুশিয়ারা নদীর শেরপুর পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই হয়ে প্রবাহিত হয়েছে। যার কারণে ওই এলাকার কিছু জায়গা প্লাবিত হয়েছে। কয়েকটি ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

মৌলভীবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাসরিন চৌধুরী জানান, আমার খলিলপুর ও মনুমুখ ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়েছে। মাইকিং করা হয়েছে যাতে সবাই আশ্রয়কেন্দ্রে যান। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্রে হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম জানান, মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগরের কয়েকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। জুড়ি ও বড়লেখা উপজেলায় বন্যা কবলিতদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। আরও বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস থাকায় আমরা সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়েছি। জেলার প্রতিটি উপজেলার ইউএনওদের নিয়ে কমিটি করা হয়েছে। সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে। আমাদের সব প্রস্তুতি আছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments