স্টাফ রিপোর্টার,
সীমান্তের ওপার থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে সুনামগঞ্জের প্রধান সব নদ-নদীর পানি আবারও বাড়ছে। জেলার ১২টি উপজেলার হাওরগুলো এখন পানিতে টইটুম্বুর। এ অবস্থায় নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন বাসিন্দারা।
শুক্রবার (১৪ জুন) দুপুর ১২টায় সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জের পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তারা জানায়, সুরমা নদীর ছাতক পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জানা যায়, গত ২৮ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাত এবং ভারতের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জি থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছিল। ফলে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। ৫ জুন থেকে সুনামগঞ্জ ও ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি কম হওয়ায় জেলার সব নদ নদীর পানি কমতে শুরু করে। ঝলমলে রোদ ওঠায় মানুষের মধ্যেও স্বস্তি ফেরে। আবারও পাহাড়ি ঢল আর বর্ষণের কারণে সুরমাসহ সীমান্তনদী পাটলাই, যাদুকাটা, চলতি চেলা, রক্তি, বৌলাই ও খাসীয়ামারের পানি বেড়ে চলছে। এতে ঈদ উদযাপন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে মানুষের মাঝে।
তাহিরপুর উপজেলার চারাগাও থেকে সুনামগঞ্জ শহরে আসা সাদ্দাম তালুকদার বলেন, ‘ভারতে বৃষ্টি হলেই আমাদের চারাগাও দিয়ে ঢল নামে। আমাদের গ্রামের নদ-নদীর পানি বেড়ে যায়। বাড়িঘরে পানি ঢুকে যায়। হাওরগুলোও ভরে গেছে এখন। ঢল নামতে থাকলে আমাদের ঈদ বন্যা ভাসিয়ে নিবে।’
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের লঞ্চঘাট এলাকারে তানবীর হোসেন বলেন, ‘গত কিছুদিনে নদীর পানি কমে অনেক নিছে চলে যায়। এখন আবাবো পানি বাড়ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতেও বৃষ্টি হয়েছে। সকাল থেকে একটু পর পর বৃষ্টি হচ্ছে। এখন আমাদের হাওর পানিতে ভরপুর। পানি নামার জায়গা নেই। এখন নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করবে। তাই আমরা খুব আতঙ্কে আছি।’
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, ‘উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে আবার জেলার নদ-নদীর পানি বাড়ছে। উজানে বৃষ্টিপাত আরও বাড়লে পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি দ্রুতই বৃদ্ধি পাবে। তবে এখনই সুনামগঞ্জ জেলায় বন্যা হওয়ার আশঙ্কা নেই। হয়তো নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে উঠতে পারে।’