দোয়ারাবাজার সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
নার্সারি করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন দোয়ারাবাজার উপজেলার বড়খাল গ্রামের বৃক্ষপ্রেমিক ছাদেক আলী। পারিবারিক ভাবে তিনি নার্সারীতে এ সফলতা পেয়েছেন। তাঁর পিতা শাহাব উদ্দিন দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে বাংলাবাজার ইউনিয়নের বড়খাল গ্রামের বিভিন্ন স্থানে গাছের চারা সংগ্রহ করে নার্সারী গড়ে তুলেছিলেন। বর্তমানে পিতার হাত ধরেই ছাদেক আলী বড়খাল স্কুল ও কলেজ সড়ক সংলগ্ন ৪০ শতক জমি লিজ নিয়ে দীর্ঘ একযুগ ধরে গড়ে তুলেছেন দেশি-বিদেশি গাছের ভান্ডার। নাম দিয়েছেন ‘ মা-বাবার স্বপ্ন নার্সারী’। এখন বাণিজ্যিকভাবে সফলতাও পাচ্ছেন তিনি। প্রতিবছর নতুন নতুন জাত সংগ্রহ করে এলাকায় বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন। বেকার যুবক ছাদেক আলী পারিবারিক দৈন্যদশার কারণে লেখাপড়া করতে পারেননি। পিতার হাতধরে তিনি নার্সারীতে এসে খুলে যায় তাঁর ভাগ্যের চাকা। তাঁর নার্সারীতে প্রতিবছর অন্তত ১০/১১ লাখ টাকার গাছের চারা বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবে তিনি লাভবান হচ্ছেন। বর্তমানে তাঁর নার্সারিতে পাঁচ-ছয়জন শ্রমিক কাজ করেন। পাশাপাশি ছেলে ও স্ত্রী তাঁকে সহযোগিতা করেন।
ছাদেক আলীর নার্সারিতে আম বারি-৪, সূর্যডিম, কাটিমন,সুবর্ণরেখা,আম্রপালিসহ প্রায় ৫০ জাতের দেশি-বিদেশি আমের চারা রয়েছে। এ ছাড়া চায়না-৩ লিচু, বেদানা লিচু, মুম্বাই লিচু, জাম, আঙ্গুর ভিয়েতনামি কাঁঠাল, পেয়ারা, রাম্বুটান, সাতকরা, থাই পেয়ারা, লটকন, আমলকি, কদবেল, পেঁপে, সফেদা, ভিয়েতনামি নারিকেল, জামরুল, বেদেনা, ডালিম, আপেল, সাদা আপেল, কমলা, নাশপাতি, বেল, চালতা, আমড়া, ড্রাগন ফল, মিষ্টি জলপাই, করমচা, বুবি, চায়না কমলা, কাশ্মীরি কুল, বাউকুলসহ প্রায় শতাধিক দেশি–বিদেশি ফল ও ফুলের চারা রয়েছে।
এ ছাড়া বারোমাসী শজনে, এলাচি, দারুচিনি, লবঙ্গ, তেজপাতা, গোলমরিচ, লোভেরা, শতমূলী, তুলসীসহ বিভিন্ন মসলা, ঔষধি গাছ, কাঠের গাছ, সবজির চারা পাওয়া যায়।
ছাদেক আলী বলেন, পারিবারিকভাবে আমি নার্সারী করে আসছি। এর আয় থেকে চলে আমার পরিবার। বাবার পর আমি ১২ বছর ধরে এখানে নার্সারী করছি। বাণিজ্যিকভাবে সফল হয়েছি। কিন্তু কখনো পাইনি সরকারী বেসরকারি কোনো সহযোগিতা। স্থানীয়ভাবে চারা বিক্রিসহ বর্তমানে অনলাইনেও দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছে আমার নার্সারীর উন্নত জাতের চারা। আমার এখান থেকে সরাসরিসহ অনলাইনে ডেলিভারি নিতে যে কেউ যোগাযোগ করতে পারেন ০১৮১৬০৯৪২৪৫ নাম্বারে। আমি সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
উপজেলা কৃষি অফিসার শেখ মো. মহসিন বলেন, অজপাড়াগাঁয়ে একটি নার্সারিতে এভাবে ফুল, ফলদ, সবজি, ঔষধি চারার ব্যাপক সংগ্রহ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় উদ্যোগ। তাঁর নার্সারী থেকে উৎসাহ পেয়ে গাছ লাগানোটা হতে পারে সামাজিক বন্ধন ও সুস্থ বিনোদনের উৎস। তা ছাড়া পরিবর্তিত জলবায়ুর বিরূপ প্রতিক্রিয়া থেকে বাঁচতে বৃক্ষ রোপণের বিকল্প নেই।