বিশেষ প্রতিনিধি,
সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। জেলার নদ-নদীগুলোর মধ্যে কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্ট ছাড়া সব পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচে আছে। ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি নামছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা।
এদিকে সাত দিন বন্ধ রাখার পর জেলার পর্যটনকেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুর থেকে পর্যটনকেন্দ্রে শর্ত সাপেক্ষে ঘোরা যাবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্রে আসা লোকজন বাড়ি ফিরছেন। সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ ঢলের পানি যাতে দ্রুত নেমে যায়, সে জন্য নগরের অভ্যন্তরের ছড়া–খালগুলোতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালাচ্ছে। এ ছাড়া পানি নেমে যাওয়া এলাকাগুলোও পরিষ্কার করা হচ্ছে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর বলেন, সিলেট সিটি করপোরেশনের ৪২টি ওয়ার্ডে ২০টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৭টি কেন্দ্রে কাউকে পাওয়া যায়নি। বেলা দুইটার পর ফের অন্য আশ্রয়কেন্দ্রগুলো পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তবে সিটি করপোরেশনের আশ্রয়কেন্দ্রগুলো বন্ধ করা হয়নি। পানি বৃদ্ধি পেলে সেগুলোতে ফের আশ্রয় নেওয়ার জন্য ব্যবস্থা রয়েছে।
পাউবো সূত্রে জানা গেছে, কুশিয়ারা নদীর শেওলা পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ১৩ দশমিক শূন্য ৫ সেন্টিমিটার। সেখানে আজ দুপুর ১২টায় পানি ১১ দশমিক ৮৭ সেন্টিমিটারে অবস্থান করছিল। ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমা ৯ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার; সেখানে আজ দুপুর ১২টায় ৯ দশমিক ৯৬ সেন্টিমিটারে অবস্থান করছিল।
পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, সিলেটের নদ-নদীর পানিগুলো পূরিপূর্ণ থাকায় পানি ধীরগতিতে নামছে। নতুন করে কোথাও পানি বৃদ্ধি পায়নি। এদিকে ভারতের চেরাপুঞ্জিতেও গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি না হওয়ায় নতুন কারে পাহাড়ি ঢল নামেনি। এতে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। আর কয়েক দিন এমন পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাবে।
খুলে দেওয়া হয়েছে পর্যটনকেন্দ্র
পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে সিলেটে প্রায় ১০ দিন আগে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়। এ সময় নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে অবস্থান করছিল। ওই পরিস্থিতিতে গত ৩০ মে সিলেটের সব কটি পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর ৩১ মে থেকে সিলেটের সব কটি পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ রাখা হয়। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় সাত দিন পর আজ থেকে ফের পর্যটনকেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে।
এ সম্পর্কে জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, শর্ত সাপেক্ষে পর্যটনকেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। পর্যটকবাহী নৌকা চড়া ও পানিতে নামার সময় পর্যটকদের লাইফ জ্যাকেট পরতে হবে। জেলার ১৩টি উপজেলার মধ্যে প্রায় সব কটি উপজেলা বন্যাকবলিত ছিল। অনেকেই বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছিলেন। আজ শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শুধু জকিগঞ্জ উপজেলায় কয়েকজন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। অন্যরা বাড়িঘরে ফিরেছেন।
জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ সকাল থেকে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়। এরপর দুপুরের পর থেকে রাতারগুল, বিছানাকান্দি, জাফলংসহ অন্যান্য পর্যটনকেন্দ্রও খুলে দেওয়া হয়।