স্টাফ রিপোর্টার,
সুনামগঞ্জে পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণ অব্যাহত থাকায় নদ-নদী টইটম্বুর থাকলেও পানি নেই অধিকাংশ হাওরে।
এখনও সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে ও স্থিতিশীল আছে। তবে পাহাড়ি ঢলের তোড়ে সীমান্ত এলাকার আভ্যন্তরীণ সড়ক প্লাবিত হয়ে বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে।
হাওর আন্দোলনের নেতারা জানান, ফসলরক্ষা বাঁধ ভেঙে না দেওয়ায় এবং যত্রতত্র ফসলরক্ষা বাঁধ তৈরি করায় হাওরে পানি ঢুকতে পারছে না। এ কারণে পাহাড়ি ঢলের চাপে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্রামীণ আভ্যন্তরীণ সড়ক।
তাই হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের নির্ধারিত পয়েন্ট কেটে পানি ঢোকানোর দাবি জানিয়েছেন কৃষক ও পরিবেশবিদরা।
হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় বলেন, প্রতিবছরই অপ্রয়োজনীয় ও অপরিকল্পিত বাঁধ তৈরি করে প্রকৃতির ক্ষতির সঙ্গে সরকারের অর্থ অপচয় হচ্ছে। এসব বাঁধের ফলে হাওরে পানি নিষ্কাশন ও মৌসুমে পানি ঢুকতে সমস্যা হচ্ছে।
“এখন নদ-নদী টইটম্বুর থাকলেও জেলার অধিকাংশ বড় হাওরে পানি নেই। পানিশূন্য বিভিন্ন হাওরে গরু ঘাস খেতে দেখা যাচ্ছে। তাই অবিলম্বে নির্দিষ্ট পয়েন্টে বাঁধ কেটে পানি ঢুকানো জরুরি।”
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী-১ মামুন হাওলাদার বলেন, জেলা কমিটি উপজেলা কমিটিগুলোতে নির্দিষ্ট পয়েন্টে বাঁধ কেটে পানি ঢুকানোর নির্দেশনা দিয়েছে। বিভিন্ন উপজেলাতেই পানি ঢুকানো হচ্ছে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে মাঝারি ও ভারী বর্ষণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতেও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম থাকায় সুনামগঞ্জে বড় বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা নেই।
তবে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রতিটি উপজেলায় জরুরি সভা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা। নৌকা, আশ্রয়কেন্দ্র, শুকনো খাবার মজুদ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী-১ মামুন হাওলাদার বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ৭৫ মিলিমিটার। মঙ্গলবার সকালে ভারী বর্ষণ হলেও দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত বন্ধ থাকায় পানি স্থিতিশীল আছে। তবে ভারী বর্ষণ ও ঢল অব্যাহত থাকলে পানি বাড়বে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় সুনামগঞ্জ পয়েন্টে সুরমার পানি ৭.৫৫ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হয়। যা বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নীচে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, এখনও বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। তবে জেলা ও উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি সভা করা হয়েছে। নৌকা, আশ্রয়কেন্দ্র ও শুকনো খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে ত্রাণ ও অন্যান্য উপকরণের জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি লেখা হয়েছে।