Saturday, November 23, 2024
Homeনির্বাচনসিলেটের বন্যা: নগরে উন্নতি, ভাটিতে জলাবদ্ধতা

সিলেটের বন্যা: নগরে উন্নতি, ভাটিতে জলাবদ্ধতা

বিশেষ প্রতিনিধি,

 

বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সিলেট নগরেও বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বহু বাড়িঘরের ভেতর ঢুকেছে পানি। গতকাল নগরের তেরোরতন এলাকা থেকে তোলা। সিলেটের কাগজ :

 

সিটি করপোরেশনের জলাবদ্ধ এলাকাগুলোতে পানি কমতে শুরু করেছে। পাশাপাশি ব্যাপকভাবে বন্যাকবলিত পাঁচ উপজেলা ও আংশিকভাবে প্লাবিত উপজেলাগুলোতেও বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।

 

সিলেট নগরের কুশিঘাট, মেন্দিবাগ, উপশহর, সোবহানীঘাট, তালতলাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আগের দিনের তুলনায় গতকাল মঙ্গলবার পানি অনেকটাই কমেছে। তবে ভাটির দিকে পানি নামতে শুরু করায় সদর ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলার নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতার বিস্তৃতি ঘটেছে।

 

 

সদর উপজেলার সাতটি এলাকা এবং দক্ষিণ সুরমার একটি ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেট কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সুরমা নদীর পানি সিলেট পয়েন্টে বিপত্সীমার নিচে নেমে এখন মাইনাস ১১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি আগের দিনের তুলনায় ৭ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপত্সীমার ৬৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদী জকিগঞ্জের অমলসিদে ২৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

 

 

একইভাবে কুশিয়ারা নদী ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় ২৪ সেন্টিমিটার বেড়ে মঙ্গলবার বিপত্সীমার ৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেট কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সিলেটে ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার সকাল ৬টা থেকে গতকাল সকাল ৬টা পর্যন্ত) মোট বৃষ্টিপাত হয়েছে ৫২.২ মিলিমিটার। আর গতকাল সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ৯ ঘণ্টায় ৬০.৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

 

জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘সকালে কিছুটা বৃষ্টিপাত হলেও নদীর পানি হ্রাস পাওয়ায় সিটি করপোরেশন এলাকার ২৮ ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে।

 

সদর ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলার নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতার কিছুটা বিস্তৃতি ঘটলেও সার্বিকভাবে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।’

 

প্লাবিত ৩০০ গ্রাম, তবু ভোটের প্রস্তুতি

 

আকস্মিক বন্যায় এখনো কমবেশি ভাসছে সিলেটের অন্তত ৯টি উপজেলা। এই ৯ উপজেলার মধ্যে কানাইঘাট ও জকিগঞ্জে আজ বুধবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। সরকারি হিসাবেই এই দুই উপজেলার ৩০৩টি গ্রামের দুই লাখ ৩৬ হাজার ৭৫৭ জন মানুষ বন্যা আক্রান্ত।

 

জকিগঞ্জের এক চেয়ারম্যান প্রার্থী ভোট পেছানোর আবেদন করেছিলেন।

 

তবে নির্বাচনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, যথাসময়ে ভোটগ্রহণ হবে।

দুটি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমরুল হাসান বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে আমরা নির্বাচন কমিশনকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। এখনো কোনো সিদ্ধান্ত পাইনি। তাই বুধবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, এমনটা ধরে নিয়েই সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে।’

 

জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী মরতুজা আহমদ জানান, তাঁর উপজেলার ৭৭টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩০টি কেন্দ্রেই বন্যার পানি আছে। অন্তত ১৫০টি গ্রামের লোকজন পানিবন্দি। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন স্থগিতের অনুরোধ জানিয়ে গত শনিবার তিনি সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফসানা তাসলিমের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।

 

এ বিষয়ে আফসানা তাসলিম বলেন, ‘আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী সামনে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ার আশঙ্কা আছে। তাই ভোটগ্রহণের বিষয়টি নির্দিষ্ট তারিখেই শেষ করার উদ্দেশ্যে কাজ চলছে।’

 

এ বিষয়ে সিলেটের জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান জানান, জকিগঞ্জ উপজেলার পাঁচটি কেন্দ্র এবং কানাইঘাট উপজেলার চারটি কেন্দ্র প্লাবিত হওয়ায় বিকল্প কেন্দ্রের তালিকা নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments