বিশেষ প্রতিনিধি,
‘লাশ উদ্ধার অইমু হয়তো,, জীবিত উদ্ধার অইতে পারতাম না,,, হয়তো এইটা শেষ পোস্ট।’ সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় ফেরিঘাট এলাকার সাজিদুর রহমান সাজন নামে এক যুবক বন্যার পানিতে আটকা পড়ে বুধবার (২৯ মে) রাত ১১টা ৯ মিনিটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেন।
এর আগে রাত ১০টার দিকে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে লিখেন, ‘আমি দৌলা চেয়ারম্যান অর ভাতিজা দিলু মিয়ার পোয়া বাড়ি ফেরিঘাট,, আমরারে কেউ বাঁচাও,, আমরার মরণ সামনে কেউ বাঁচাও আমরারে মা ভাই লইয়া আটকি গেছি’।
সাজিদুরের মতো জৈন্তাপুর উপজেলার আরও কয়েকজন নৌকা চেয়ে পোস্ট দেন। জৈন্তাপুরের ময়নাহাটি খেয়াঘাট এলাকার আহমেদ নাইম রাত সাড়ে ১০টায় ফেসবুকে পোস্ট দেন ‘একটা ইঞ্জিন নৌকার দরকার, কেউ বাঁচাও আমরারে।’
এদিকে উদ্ধার কাজে সেনাবাহিনী দাবি করে জৈন্তাপুর উপজেলার ইমরান আহমদ সরকারি মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মো. খায়রুল ইসলাম তার ফেসবুক আইডিতে লিখেন, ‘উদ্ধার কাজে সেনাবাহিনী চাই। জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাটে সর্বকালের ভয়াবহ বন্যা।’
বন্যার পানিতে আটকে থাকা মানুষজনকে উদ্ধারের ব্যাপারে কথা বলতে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালিক রুমাইয়া মোবাইল ফোনে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। জৈন্তাপুরে টানা বৃষ্টি ও ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার সারি, বড় নয়াগং ও রাংপানি নদের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন জৈন্তাপুর সদর, নিজপাট ও চারিকাটা ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা।
উপজেলার নিজপাট লামাপড়া, বন্দরহাটি, ময়নাহাটি, জাঙ্গালহাটি, বড়খেল, মেঘলী, তিলকৈপাড়া, ফুলবাড়ী, নয়াবাড়ী, হর্নি, বাইরাখেল, গোয়াবাড়ী, ডিবির হাওর, ঘিলাতৈল, মুক্তাপুর, বিরাইমারা হাওর, খারুবিল, লমানীগ্রাম, কাটাখাল, বাউরভাগ, চাতলারপাড়, ডুলটিরপাড়সহ বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে নদীর পানি। তাই পানিবন্দি মানুষের বাড়ছে আতংক।