ধর্ম ডেস্ক,
কোরবানি আল্লাহ তায়ালার বিধান। প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্ক ও নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক মুসলিম নর-নারীর ওপর কোরবানি ওয়াজিব।
জাকাত ও কোরবানির নিসাব একই। ফলে যাদের ওপর জাকাত ওয়াজিব, তাদের ওপর কোরবানিও ওয়াজিব।
কোরবানির দিনগুলোতে যাদের কাছে সাড়ে সাত ভরি সোনা, সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা বা ওই পরিমাণ রুপার সমমূল্যের নগদ অর্থ অথবা বর্তমানে বসবাস ও খাবারের প্রয়োজন আসে না এমন জমি, প্রয়োজনাতিরিক্ত বাড়ি, ব্যাবসায়িক পণ্য ও প্রয়োজনাতিরিক্ত অন্য আসবাবপত্রের মালিক হবে, তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে। (রাদ্দুল মুহতার : ৬/৬৫; মাবসুতে সারাখসি ১২/৮)
আর সোনা বা রুপা কিংবা টাকা-পয়সা এগুলোর কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নিসাব পরিমাণ না থাকে, কিন্তু প্রয়োজনাতিরিক্ত একাধিক বস্তু মিলে সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমমূল্যের হয়ে যায়, তাহলেও তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব।
যেমন কারো কাছে কিছু স্বর্ণ ও কিছু টাকা আছে, যা সর্বমোট সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার মূল্যের সমান, তাহলে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব। (রদ্দুল মুহতার : ৫/২১৯)
কোরবানির গোশতের এক-তৃতীয়াংশ গরিব-মিসকিনকে এবং এক-তৃতীয়াংশ আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীকে দেওয়া উত্তম। অবশ্য পুরো মাংস যদি নিজে রেখে দেয়, তাতেও কোনও অসুবিধা নেই। (বাদায়েউস সানায়ি : ৪/২২৪; আলমগিরি : ৫/৩০০)
কোরবানির গোশত গরিবদের দেওয়ার ক্ষেত্রে মুসলিম প্রতিবেশি বা গরিবকে দেওয়া উত্তম। তবে অমুসলিম প্রতিবেশী দুস্থ-অভাবীদেরও কোরবানির গোশত দেওয়া যাবে। এতে কোনো সমস্যা নেই।
সাহাবীগণ অমুসলিম প্রতিবেশীর হকের প্রতি সবিশেষ লক্ষ্য রাখতেন।
আব্দুল্লাজ ইবনে আমর রা.-এর বাড়িতে একবার একটি বকরি (ছাগল) জবেহ করা হল। যখন তিনি বাড়িতে ফিরলেন জিজ্ঞস করলেন, তোমরা কি আমাদের ইহুদী প্রতিবেশীকে এ গোশত হাদিয়া (দান) পাঠিয়েছ? এভাবে দুবার জিজ্ঞেস করলেন।
আমি রাসূলুল্লাহ সা.-কে বলতে শুনেছি। প্রতিবেশীর অধিকার প্রসঙ্গে জিবরাইল আ. আমাকে অবিরত উপদেশ দিতেন। এমনকি আমার ধারনা হল যে হয়ত শীঘ্রই প্রতিবেশীকে উত্তরাধিকারী বানিয়ে দিবে। (জামে তিরমিজি, হাদীস ১৯৪৩)
সুতরাং অমুসলিমকে কোরবানির মাংসসহ অন্যান্য যে কোনো জিনিস দান করা যাবে।
(আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৩৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০০; ইমদাদুল আহকাম ৪/২০৬)