জালাল উদ্দিন লস্কর ,হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি::
দাখিল পরীক্ষা চলাকালে মাওলানা আসাদ আলী ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে দৈনিক কালবেলার মাধবপুর প্রতিনিধি মুজাহিদ মসি সহ ৪ জনের নামে ১৩ মে মামলা হয়েছে।মামলা নং ২০। মামলার বাদী মাধবপুর পৌর দাখিল মাদ্রাসার সুপারিন্টেন্ডেন্ট ও ওই কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান।
মামলা সূত্রে ও বাদীর সাথে আলাপ করে জানা যায়, গত ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ সালের দাখিল পরীক্ষা শুরুর আধাঘন্টা আগে মৌলানা আসাদ আলী ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্রের অফিসে কমলপুর হযরত শাহজালাল (রঃ) আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আনিছুর রহমান আদিল কেন্দ্র সচিব সিদ্দিকুর রহমানের কাছে তার মাদ্রাসার একজন অতিরিক্ত শিক্ষককে অফিসে রাখার প্রস্তাব দেন।কেন্দ্র সচিব তার এই প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় আনিছুর কেন্দ্র সচিবের সাথে বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন এবং কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শাহানা সুলতানার উপস্থিতিতে হুমকি দিয়ে বলেন, কিভাবে এখানে কেন্দ্র থাকে তা তিনি দেখে নেবেন।এই ঘটনার জেরে ২০ ফেব্রুয়ারী বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা চলার কিছু সময় পর কেন্দ্র সচিব সিদ্দিকুর রহমান কক্ষ পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে থাকা কমলপুর হযরত শাহজালাল (র:) মাদ্রাসার দুই শিক্ষকের (মাহমুদুল হাসান তামিম ও হামিদুর রহমান) কাছে মোবাইল ফোন থাকার বিষয়টি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানতে পেরে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোনগুলো জব্দ করেন।এর আগে হাবিবুর রহমান নামক কমলপুর মাদ্রাসার শিক্ষক একই কক্ষে দায়িত্বরত আব্দাল মিয়াকে কেন্দ্রে সাংবাদিক আসতে পারেন বলে জানান।এর আধাঘন্টার মধ্যেই দৈনিক কালবেলার মাধবপুর প্রতিনিধি মুজাহিদ মসি সহ আরো কয়েকজন সাংবাদিক পরীক্ষা কেন্দ্রে অনধিকার প্রবেশ পূর্বক সাথে থাকা মোবাইল ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস দিয়ে ছবি ও ভিডিও ধারন করেন।এই ঘটনার পিছনে সাংবাদিক মুজাহিদ মসির সহোদর কমলপুর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আনিছুর রহমান আদিলের উসকানি আছে বলে মামলার এজাহারে দাবি করা হয়।
মামলায় মুজাহিদ মসি,তার ভাই কমলপুর হযরত শাহজালাল (রঃ) আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আনিছুর রহমান আদিল,একই মাদ্রাসার শিক্ষক মাহমুদুল হাসান তামিম ও হামিদুর রহমানকে আসামী করা হয়েছে।মামলার বাদী মাধবপুর দরগাবাড়ী পৌর দাখিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও কেন্দ্র সচিব সিদ্দিকুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে ‘এ বিষয়ে পরে কথা বলি’ বলে ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
সাংবাদিক মুজাহিদ মসি দাবি করেছেন ওইদিন পেশাগত দায়িত্ব পালনের উদ্দেশ্যে নিয়ম মেনে কেন্দ্রের দায়িত্বশীলদের অনুমতি নিয়েই কেন্দ্রে প্রবেশ করেছিলেন তিনি।কেন্দ্রে প্রবেশের পর সেখানে নকলের ‘মহোৎসব’ দেখতে পান।দরগাবাড়ী পৌর দাখিল মাদ্রাসার সহকারী সুপারিন্টেন্ডেন্ট সেলিম মিয়াকে একটি কক্ষে পরীক্ষার্থীদের উত্তর বলে দিতে দেখতে পেয়ে কৌশলে তা রেকর্ড করে দায়িত্বশীল বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছে সেই অডিও ক্লিপ পাঠান তিনি।একপর্যায়ে সেলিম মিয়াকে আটক করে পুলিশ হেফাজতে দেন ইউএনও একেএম ফয়সাল।সেলিম মিয়ার নামে পরদিন কেন্দ্র সচিব সিদ্দিকুর রহমান বাদি হয়ে থানায় মামলা করেন।আদালত থেকে সেলিম মিয়া জামিন পেলেও মামলাটি চলমান রয়েছে। মুজাহিদ মসিহ জানান,তিনি কোনো অনিয়ম করেন নি।তাকে হয়রানি করার জন্যই এতোদিন পরে এই সাজানো মামলা করা হয়েছে।