ফল ঘোষণার শুরু থেকেই টানটান উত্তেজনা। একবার গিয়াস উদ্দিন আহমেদ এগিয়ে যান তো আরেকবার সুহেল আহমদ চৌধুরী। উত্তেজনার কারণে কিছুক্ষণ বন্ধও থাকে ফল ঘোষণা। ফল ঘোষণার আগেই দুই প্রার্থীর সমর্থকরা বিজয় মিছিল শুরু করে দেন।
অবশেষে মধ্যরাতে ঘোষণা করা হয় বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাচনের ফলাফল। এতে নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন বিএনপির বহিস্কৃত নেতা সুহেল আহমদ চৌধুরী।
সিলেটে চার উপজেলায় বুধবার (৮ মে) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেগুলা হলো- সিলেট সদর, দক্ষিণ সুরমা, বিশ্বনাথ ও গোলাপগঞ্জ। এর মধ্যে ৩ উপজেলার ফলাফল সন্ধ্যারাতে মিললেও মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত আটকে ছিলো বিশ্বনাথ।
অবশেষে রাত সাড়ে ১২টার দিকে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন সহকারী রিটার্নিং ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা স্বর্ণালী চক্রবর্তী।
ঘোষিত ফলাফলে বিশ্বনাথ উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মোহাম্মদ সুহেল আহমদ চৌধুরী। তিনি কাপ পিরিচ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পেয়েছেন সর্বোচ্চ ১৩ হাজার ৩২২ ভোট। তার নিকতম প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা পরিষদের সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন আহমেদ আনারস প্রতীকে ১২ হাজার ৯৬৮টি ভোট পেয়েছেন।
জানা গেছে, রাত ৯টার ভেতরেই উপজেলার ৭৪টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৬৫টির ফলাফল মিলে যায়। কিন্তু এসময় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে খাজাঞ্চি ইউনিয়নের নোয়ারাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইটিং অফিসার মো. বিল্লাহ হোসেনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসেন।
অভিযোগপত্রে তারা উল্লেখ করেন- নোয়ারাই কেন্দ্রে ভোগ গণনা শেষে প্রিজাইটিং অফিসার তড়িঘড়ি করে ফলাফলের কাগজ কোনো এজেন্টের স্বাক্ষর না নিয়ে চলে আসেন। কিন্তু রাত ৯টা পর্যন্তও তিনি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় না পৌঁছালে কর্মকর্তা তাকে পুলিশ পাঠিয়ে নিজ বাসা থেকে ডেকে আনেন। আসার পর তিনি নোয়ারাই কেন্দ্রের রিজাল্ট শিট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে দিলে দেখা যায়- এতে কোনো এজেন্টের স্বাক্ষর নেই।
এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, কাগজে ভোটের সংখ্যা এবং গণনা শেষে কেন্দ্রে ঘোষণার সংখ্যার মধ্যে তারতম্য রয়েছে।
এসব বিষয় নিয়ে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কার্যালয়ে তিনি সকল চেয়ারম্যান প্রার্থীকে নিয়ে সমাধানের জন্য আলোচনা করে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন।
এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ১০ জন প্রার্থী লড়াই করেছেন। তারা হলেন- যুক্তরাজ্যের ডরসেট আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রবাসী আব্দুল রোশন চেরাগ আলী (ঘোড়া), উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মোহাম্মদ সুহেল আহমদ চৌধুরী (কাপ পিরিচ), উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক যুক্তরাজ্য প্রবাসী গৌছ খান (কই মাছ), উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী আকদ্দুছ আলী (হেলিকাপ্টার), যুক্তরাজ্য বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও বিশ্বনাথ স্পোটর্স ডেভোলাপমেন্ট ট্রাস্ট ইউকের যুগ্ম সম্পাদক যুক্তরাজ্য প্রবাসী মো. সেবুল মিয়া (দোয়াত-কলম), যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও যুবলীগের সহসভাপতি প্রবাসী শমসাদুর রহমান রাহিন (শালিক), যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ এস. আলী এনামুল হক চৌধুরী (মোটর সাইকেল), জেলা পরিষদের সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন আহমেদ (আনারস), যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিএনপি নেতা সফিক উদ্দিন (উট) এবং বিশ্বনাথ পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক আলতাব হোসেন (টেলিফোন)।