নিজস্ব প্রতিবেদক,
প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হয়ে সংসদে আসা ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের ফেসবুক মন্তব্য নিয়ে বেজায় চটেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু। সুমনের নাম না নিলেও চুন্নুর অভিযোগ, একজন সংসদ সদস্য সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জন করতে গিয়ে ৩৪৯ এমপির জন্য মর্যাদাহানিকর ঘটনা ঘটিয়েছেন। এজন্য তিনি স্পিকারের কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সংসদের বৈঠকে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তিনি এই অভিযোগ তোলেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদের বৈঠকে সভাপতিত্ব করছিলেন।
ব্যারিস্টার সুমনের ফেসবুক পোস্ট নিয়ে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘এই হাউসের একজন সংসদ সদস্য। নামটা বলতে চাই না। তিনি নতুন নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ফেসবুকে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে আমরা সবাই ভুক্তভোগী।’
মুজিবুল হক বলেন, ‘তিনি বলেছেন, আপনারা জানেন, এমপিরা কত টাকা বেতন পান? তারা তো বলে না, গোপন করে। তিনি বলেছেন, ১ লাখ ৭২ হাজার টাকা বেতন (মাসিক) পেয়েছেন। আমরা কত টাকা বেতন পাই তা লুকানোর কিছু নেই, ওয়েবসাইটে গেলে পাওয়া যাবে। তিনি আরও বলেছেন, তিন মাসের মধ্যে ২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। সেটা কীভাবে পেলেন ৩ কোটি টাকা গমের জন্য। আর বাকি ২৫ কোটি টাকা পেয়েছেন রাস্তার জন্য।’
স্পিকারকে উদ্দেশ করে মুজিবুল হক বলেন, ‘এই ২৮ কোটি টাকা কি আমি পেয়েছি, আপনি (স্পিকার) পেয়েছেন? প্রধানমন্ত্রী পেয়েছেন? ইতিমধ্যে ফেসবুক দেখে আমাকে অনেকেই বলছেন, ২৮ কোটি টাকা পেয়েছেন, এই টাকা কই? তিনি বলেছেন, ২৫ কোটি টাকা পেয়েছেন, কিন্তু আমরা তো পাইনি।’
স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে পাঁচ বছরে ২০ কোটি টাকা এমপিদের অনুকূলে বরাদ্দ দেওয়ার কথা উল্লেখ করে চুন্নু বলেন, পাঁচ বছরের জন্য ২৫ কোটি টাকার প্রকল্পের নাম দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরের জন্য কয়টা প্রকল্প করা হবে তার নাম দেওয়া হয়েছে। টাকার সঙ্গে তো তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই। সংসদ সদস্যরা না দিলে স্থানীয় সরকার বিভাগ জরিপ করে টেন্ডার করে, তার পর বাস্তবায়ন করে। কিন্তু এই সংসদ সদস্য বলছেন, ‘আমরা ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। শুধু তাই না, তিনি আরও বলেছেন, এমপি হলে যদি এত লাভ হয়, তাহলে আরও আগে এমপি হতাম।’
চুন্নু বলেন, ‘আপনি (স্পিকার) হলেন এ সংসদের অভিভাবক। আমাদের কোনো সদস্য যদি এমন কোনো কথা বলেন, যে কথায় প্রধানমন্ত্রী, স্পিকারসহ ৩৪৯ জন এমপি (একজন ছাড়া) সম্পর্কে ভুল বার্তা যাবে। তাঁর সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জন করার জন্য যদি এ ধরনের কথায় ভুল বার্তা যায়, বিষয়টা আপনি দেখতে পারেন। আমরা এখানে অনেক কথা বলব, বির্তক করব। এমন কথা বলবার অধিকার নেই, যাতে ৩৪৯ এমপির ইজ্জত যাবে। তাই অভিভাবক হিসেবে ওই সংসদ সদস্যকে ডেকে তাঁকে কী করবেন, এটা ব্যবস্থা নেবেন।