Sunday, November 24, 2024
Homeসিলেট বিভাগহবিগঞ্জহবিগঞ্জে কাজে আসছে না ৯ কোটি টাকার পানি শোধনাগার

হবিগঞ্জে কাজে আসছে না ৯ কোটি টাকার পানি শোধনাগার

বিশেষ প্রতিনিধি,

 

 

হবিগঞ্জ পৌরসভার বাসিন্দাদের জন্য পানি সরবরাহ করতে প্রায় ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে পানি শোধনাগার। এরপর স্থানীয় সরকারমন্ত্রীকে দিয়ে সেই প্রকল্প উদ্বোধনও করানো হয়েছে। তবে ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও এই শোধনাগার থেকে একফোঁটা পানিও পায়নি পৌরবাসী।

এদিকে নির্মাণকাজ শেষ হলেও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর প্রকল্পটি এখনো পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করেনি। এটি কবে উৎপাদনে যাবে কিংবা শোধনাগার থেকে কবে পানি পাওয়া যাবে, তা-ও কারও জানা নেই।

 

হবিগঞ্জ পৌরসভা ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৫ সালে প্রায় ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে হবিগঞ্জে পানি শোধনাগার প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। একপর্যায়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে টানাপোড়েন দেখা দেয়। ফলে নির্মাণকাজ বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকে। অবশেষে ২০২২ সালের মাঝামাঝি কাজ শেষ হয়।

তবে নতুন জটিলতা দেখা দেয় বিদ্যুৎ-সংযোগ নিয়ে। পৌর কর্তৃপক্ষ পোস্টপেইড মিটার দাবি করলেও বিদ্যুৎ বিভাগ প্রিপেইড মিটার ছাড়া সংযোগ দিতে নারাজ। এভাবে কেটে যায় ১ বছর। শেষমেশ প্রিপেইড মিটার নিতে সম্মত হয় পৌরসভা।

 

মিটার নিয়ে যখন বিদ্যুৎ বিভাগ ও পৌরসভা টানাপোড়েন চলছিল, ঠিক সেই সময় পানি শোধনাগারের প্রায় ১৫ লাখ টাকার সরঞ্জাম ও তার চুরি হয়ে যায়। এসব পুনঃস্থাপন না করেই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে গত ১১ নভেম্বর স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামকে দিয়ে উদ্বোধন করানো হয়। এ দিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিদ্যুতের মিটার স্থাপন না করায় পানি শোধনাগারটি পরীক্ষা করা যায়নি।

ফলে পৌরবাসী এখনো সেখান থেকে পানি পাচ্ছে না। সংকট বাড়ছে হবিগঞ্জে বর্তমানে দুটি কেন্দ্র থেকে সরবরাহ করা পানির তুলনায় গ্রাহকসংখ্যা বেশি হওয়ায় চাহিদা পূরণ হচ্ছে না।

 

সূত্র বলছে, পৌর এলাকার প্রায় ২৫ শতাংশ গ্রাহকের বাসাবাড়িতে ঠিকঠাক পানি যাচ্ছে না। আবার পানি না পেয়েও লাইন বিচ্ছিন্নের আশঙ্কায় মাসে মাসে পানির বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে অনেককে। অপরদিকে পানির স্তর নেমে যাওয়ায় নলকূপেও কাঙ্ক্ষিত পানি উঠছে না। এই দাবদাহের মধ্যে পানির তীব্র সংকটের মধ্যে রয়েছে নগরবাসী।

 

এব্যাপারে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর হবিগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী তাহমিনা তানভীন বলেন, এ প্রকল্প থেকে ঘণ্টায় ৩৫০ ঘনমিটার পানি শোধন করা যাবে। ঠিকাদারকে অবিলম্বে বিদ্যুৎ-সংযোগ ও মিটার স্থাপনের জন্য বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, হবিগঞ্জ পৌরসভার বিভিন্ন রাস্তা ও ড্রেনের উন্নয়নকাজ চলছে। বিদ্যুৎ-সংযোগ না পেলে এসব উন্নয়নকাজের সময় পাইপলাইনসহ অন্যান্য জিনিসপত্রের ক্ষতি হয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করা সম্ভব নয়। সবকিছু ঠিকঠাক হলে পৌরসভার কাছে পানি শোধনাগারটি হস্তান্তর করা হবে। কবে নাগাদ হস্তান্তর সম্ভব, তা এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।

 

 

হবিগঞ্জ পৌর পানি সরবরাহ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল কদ্দুছ শামীম বলেন, বিদ্যুতের মিটার নিয়ে যে ঝামেলা ছিল, তা শেষ হয়েছে। জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর এখনো পৌরসভার কাছে পানি শোধনাগারটি হস্তান্তর করেনি। কবে হস্তান্তর করবে, তা-ও জানি না।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments