Friday, November 8, 2024
Homeসারাদেশমে দিবস : শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন আজ

মে দিবস : শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন আজ

বিশেষ প্রতিনিধি,

 

বিশ্বজুড়ে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় পালন করা হয় মে দিবস। ১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের শ্রমিকেরা আটঘণ্টা কর্মদিবসের দাবিতে নিজেদের রক্ত দিয়েছিলেন। এরপর থেকে দিনটি ‘মে দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

 

কিন্তু যাদের নিয়ে এই দিবস, তারা এ সম্পর্কে কতটা অবগত? অনেক শ্রমিক জানেনই না এর ইতিহাস। শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে এ দিবস পালনের এত বছর পরও শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য মজুরির দাবি এখনও উপেক্ষিত, এখনও তাদের বিরাট অংশ মৌলিক মানবাধিকার থেকেও বঞ্চিত।

 

১৮৮২ সালের ৫ সেপ্টেম্বরেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক তাদের অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে নিউইয়র্কে শহরে সমাবেশ করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে আন্দোলন ও হতাহতের ঘটনা ঘটলেও শ্রমিক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয় ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে, সেটা ১৮৮৯ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক কংগ্রেসে।

 

বিশ্বের ৯০টি দেশে সরকারিভাবে মে মাসের প্রথম দিনটিকে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের শ্রমিক আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসের উৎপত্তি হলেও যুক্তরাষ্ট্রে শ্রমিক দিবস হিসেবে পালিত হয় সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সোমবার।

 

 

বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শিল্পে সবচেয়ে বেশি শ্রমিক কর্মরত। প্রতিটি তৈরি পোশাক কারখানায় আট ঘণ্টার বেশি কাজ হয় প্রতিদিন। ওভারটাইম করতে আগ্রহী না থাকলেও বাধ্য হয়ে তা করতে হয়। সেই ওভারটাইমের টাকাও ঠিকমতো পাওয়া যায় না বা দিতে নানান ছলচাতুরী করে মালিকপক্ষ। শুধু গার্মেন্ট শিল্প নয়, অধিকাংশ খাতে এমন পরিস্থিতি আমরা দেখতে পাই।

 

কর্মক্ষেত্রে নিহত, আহত বা ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের কর্মদিবসের আয় অনুযায়ী আর্থিক বা দৈহিক ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে। সামর্থ্যের বাইরে শ্রমিকদের ওপর কাজের বোঝা চাপানো যাবে না এবং তাদের সঙ্গে সৌজন্যমূলক সদাচরণ করতে হবে। অথচ বাস্তব জীবনে কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় মৃত্যু ও স্থায়ী পঙ্গুত্ব যেন শ্রমিকের নিয়তি! অগ্নিকাণ্ড বা মর্মান্তিক কোনো দুর্ঘটনার পর নিহত শ্রমিকের পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণের নিশ্চয়তা যেন আরেক ট্র্যাজেডি!

 

বর্তমান বাজার অনুযায়ী একটি শ্রমজীবী পরিবারের জীবনযাপনের সাধারণ মানের কথা বিবেচনায় রেখে শ্রমিকদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা উচিত। আজীবনের জন্য যে শ্রমিকের পুরো পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হলো এবং সারা জীবনে তিনি কত আয় করতেন, এসব দিক বিশেষভাবে মানবিক বিবেচনায় রাখতে হবে।

 

শ্রমিকের অধিকারসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কনভেনশন অনুসারে জাতীয়ভাবে শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য মানদণ্ড নির্ধারণ করতে হবে। আর দুর্ঘটনার জন্য দায়ী মালিকপক্ষগুলোকে শ্রমিকদের এ ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করতে হবে। মালিকপক্ষ শ্রমিকদের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেবে অথবা যথাসময় এমন মজুরি দেবে, যাতে তাদের প্রয়োজন মিটে যায়। তাতে শ্রমিক ও মালিকপক্ষের দূরত্ব অনেকখানি লাঘব হবে। এর মাধ্যমে গড়ে উঠবে একটি বৈষম্যহীন শ্রমিক সংঘ।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments