বিশেষ প্রতিনিধি,
হবিগঞ্জ সদরে ব্যবসায়ী হারুন মিয়া হত্যা মামলায় ২১ বছর পর সাতজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত; একই সঙ্গে আরও ১০ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ এর বিচারক আজিজুল হক আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্তরা হলেন উপজেলার রাজিউড়া ইউনিয়নের হুরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা জালাল আহমেদ, মিলন মিয়া, ফজল মিয়া, কুতুব আলী, রফিক মিয়া, জাকির হোসেন ও আব্বাস মিয়া।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন একই গ্রামের ছায়েদ আলী, নিমতাজ আলী, মতলিব মিয়া, কুতুব উদ্দিন, সালাম মিয়া, জিয়াউর রহমান, আয়াত আলী, ইছাক আলী, জজ মিয়া ও ইব্রাহিম মিয়া।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর সালেহ উদ্দিন আহমেদ জানান, সদর উপজেলার হুরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য মিলন আহমেদ এবং হারুন আহমেদের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছিল।
২০০৩ সালে ইউপি নির্বাচনের পর এ বিরোধ আরও তীব্র হয়। ওই বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি সকালে হারুন আহমেদসহ ৭ থেকে ৮ জন নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল আহমেদকে দাওয়াত দিতে যান।
এ সময় পথে মিলন আহমেদের নেতৃত্বে ৪০ থেকে ৫০ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় হারুন আহমেদ ঘটনাস্থলেই মারা যান। তার শরীরে ৩২টি ফিকলের আঘাতের চিহ্ন পায় পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই সুমন আহমেদ বাদী হয়ে পরদিন সদর থানায় ৪৭ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে একই বছরের ১৮ আগস্ট পুলিশ সব আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।
এর মধ্যে বিচার চলাকালে আটজন মারা যান।
মামলায় ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক মঙ্গলবার ৩৯জন আসামীর উপস্থিতিতে সাতজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। পাশাপাশি বিচারক প্রত্যেক দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করেছেন। মামলায় ২২ আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
রায় ঘোষণার সময় আদালত প্রাঙ্গণে আসামির স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
উক্ত মামলায় রাষ্টপক্ষের আইনজীবীকে সহযোগিতা করেন সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর পারভীন আক্তার। আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন চৌধুরী আশরাফুল বারী নোমান।