বিশেষ প্রতিনিধি,
কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ‘লন্ডভন্ড’ হয়েছে শ্রীমঙ্গল উপজেলা। বিদ্যুৎহীন এলাকায় মানুষের চরম দূর্ভোগে পড়েছেন।
গত রবিবার বিকালে জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এছাড়াও গাছপালা উপড়ে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙ্গে তার ছিঁড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ অধিকাংশই এলাকায় বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রচন্ড ঝড়ে উপড়ে পড়েছে সহস্রারাধিক গাছপালা, বিভিন্ন স্থানে পড়ে গেছে বিদ্যুতের খুটি এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাড়িঘর-দোকানপাট গুলোতে।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের মাগুরছড়া এলাকায় ঢাকা সিলেট রেলপথে গাছপালা ভেঙ্গে ও উপড়ে পড়ে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরে রাত আটটার দিকে সারাদেশের সাথে রেলযোগাযোগ স্বাভাবিক হয়। একাধিক স্থানে বিদ্যুতের খুটি ভেঙ্গে ও মূল সঞ্চালন লাইন ছিঁড়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়ে।
শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমান বলেন, ‘রবিবার বিকাল ৪টা ৪২ মিনিট থেকে ৪টা ৪৮ মিনিট পর্যন্ত মৌলভীবাজারের উপর দিয়ে প্রচন্ড ঝড় বয়ে যায়। ঝড়ের গতিবেগ ছিল ৮৯ কিলোমিটার। এ সময়ে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় ১৭.৮ মিলিমিটার।
সরেজমিনে দেখা যায়, কালবৈশাখি ঝড়ে বিদ্যুতের খুঁটি ওপর বিশাল আকৃতির গাছ পড়ে বিদ্যুতের খুঁটি ও লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শ্রীমঙ্গল শহরের ভানুগাছ সড়কে শতাধিক দোকান ঘরের চালা উড়ে গেছে। ‘ক্ষতিগ্রস্ত দোকানমালিক সোলেমান মিয়া ও মিজান মিয়া জানান, ঝড়-তুফানে দোকানের চালা উড়ে যায়। এতে কয়েক লক্ষ টাকার চা পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে।’
বিশেষ করে শ্রীমঙ্গল শহর এবং শহরতলী এলাকায় বিদ্যুৎ লাইন ছিঁড়ে পড়ার কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে। মানুষের দূর্ভোগের শেষ নেই। শহরের আমজাদ আলী সড়ক, আছদ্দর আলী রোড, আরামবাগ, ক্যাথলিক মিশন রোড এলাকার নটরডেম স্কুল এন্ড কলেজে গেইটের সামনে বিদ্যুৎ লাইন ছিঁড়ে নিচে পড়েছে।
এ ছাড়াও বিরাইমপুর, সুরভি পাড়া, জেটি রোড ও পৌর শহরের পূর্বাশা এলাকায় দূর্গতির শেষ নেই।
অপরদিকে আশিদ্রোন ইউনিয়নের রামনগর, সিন্দুরখানসহ সব-কটি ইউনিয়নে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
শ্রীমঙ্গল পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. জাহাঙ্গীর আলম সোহাগ বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন ছাড়াই সেচ্ছাশ্রমে রাত জেগে গাছ কেটে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন।’
মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহা-ব্যবস্থাপক এ বি এম মিজানুর রহমান বলেন, ঝড়ে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শত শত বিদ্যুৎতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে। অনেক স্থানে তার ছিঁড়ে গেছে।
এসব জায়গায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার জন্য কাজ চলছে। তবে কিছু কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ স্বাভাবিক হয়েছে। তিনি আরও বলেন, পুরো এলাকায় বিদ্যুৎ স্বাভাবিক হতে আর ২/৩ দিন সময় লাগবে।’
মৌলভীবাজার জেলা ত্রাণ পূর্ণবাসন কর্মকর্তা মো. ছাদু মিয়া বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ক্ষয়ক্ষতির তালিকা পাইনি। তবে কমলগঞ্জ উপজেলার ৪৯০ টি বাড়ি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রতিবেদন পেয়েছি। আর ২/১ দিন সময় পুরো তালিকা পেতে।