স্টাফ রিপোর্টার:::
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নানান অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে একই প্রতিষ্ঠানের সাবেক কর্মচারী ইসলাম উদ্দিনের গেল ১৬ এপ্রিল ২০২৪ তারিখে: ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) তৎসহ ১৬১/১৬৪/৪০৬/৪০৯/৪২০/১০৯ দন্ড বিধি, ১৮৬০ ধারা মোতাবেক দায়েরকৃত মামলাটি সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান সিদ্দিকী স্পেশাল পিটিশন মোকদ্দমা নং ০২/২০২৪আমলে নিয়েছেন এবং নামাংকিত আসামী ৮জনের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ১১জুন ২০২৪ তারিখের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
বাদী পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজবীবি এডভোকেট কানন আলম এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন দুদক আদালতের পিপি এডভোকেট নৌশাদ চৌধুরী। মামলাটি গেল ২৫ এপ্রিল আদালত আমলে নেয় এবং উপ—পরিচালক দুদক সমন্বি জেলা কার্যালয়কে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন।
আদালত সুত্র জানায়, গেল ২৫ এপ্রিল মামলার বাদী ইসলাম উদ্দিনের উপস্থিতিতে মামলাটি আমলে নেয়া হয় এবং মামলার আসামীরা হলেন ইসরাইল আলী ইসরাইল আলী সাদেক, পিতা: মজর আলী, সাং: কাজলশাহ, বাসা নং: ১৭৬, ডাকঘর: সিলেট—৩১০০, থানা: কোতয়ালী, এসএমপি, জেলা: সিলেট, পদবী বর্তমানে: সিনিয়র স্টাফ নার্স, সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, থানা: কোতয়ালী এসএমপি, জেলা: সিলেট, আমিনুল ইসলাম, পিতা: মৃত আব্দুল মজিদ, সাং: মেরাসানী, থানা: বিজয়নগর, জেলা: ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, বর্তমানে: জালালী—১০, দরগাহ মহল্লা, থানা। কোতয়ালী, এসএমপি, জেলা: সিলেট, পদবী: সিনিয়র স্টাফ নার্স, সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সিলেট, সুমন চন্দ্র দেব, পিতা: সুনীল কুমার দেব, সাং: মিরাশী, থানা: চুনারুঘাট, জেলা: হবিগঞ্জ, হালসাং: বাসা নং: ১১৬, সোনার বাংলা, আ/এ, কাজলশাহ, থানাঃ কোতয়ালী, জেলা: সিলেট, পদবী: সিনিয়র স্টাফ নার্স, সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সিলেট, জনী চৌধুরী, পিতা: অজ্ঞাত, সাং। ভাতালিয়া, আ/এ, সিলেট, থানা: কোতয়ালী, এসএমপি, জেলা: সিলেট, পদবী: পুলিশ কন্সটেবল, কং নং: ১২২৫, বিপি নং: ৯০১১১২৮৯১০, ডিএসবি, সিলেট জেলা, মো: নাজমুল হাসান, পিতা: অজ্ঞাত, সাং: ওসমানী মেডিকেল কলেজ হল, ডাকঘর: সিলেট—৩১০০, থানা: কেতায়ালী এসএমপি, জেলা: সিলেট, পদবী: ছাত্র, ৫৪ তম ব্যাচ, সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ শাখা, ছাত্রলীগ, রওশন হাবিব, পিতা: মৃত সাবদুল মুল্লা, সাং: বয়রা, ডাকঘর: হাজরাহাটি, থানাঃ শালিকা, জেলা: মাগুরা, মোবাইল নং: ০১৭৮৮— ৮৩৮১৩৫, এনআইডি নং। মো: আব্দুল জব্বার, পিতা: মৃত আব্দুল গণি, সাং: আসফনগর, (পান্ডারগাও ইউপি), ডাকঘর: মঙ্গলকাটা, থানা: দোয়ারাবাজার, জেলা: সুনামগঞ্জ, পদবী: সিকিউরিটি গার্ড, সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতাল, সিলেট, হালসাং: শাপলা ১২০, মেডিকেল স্টাফ কোয়াটার, কাজলশাহ, থানা: কোতয়ালী, জেলা: সিলেট, মো: আব্দুল হাকিম সুমন, পিতা: মুন্য মিয়া, সাং: ১৩/ডি, কুমারপাড়া, মানিকপীর রোড, ডাকঘর: সিলেট— ৩১০০, থানা: কোতয়ালী এসএমপি, জেলা: সিলেট, পদবী: সর্দার, সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতাল, সিলেট, সহ অজ্ঞাত আরো ৫/৬ জন আসামীগণ। তাদের বিরুদ্ধে ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) তৎসহ ১৬১/১৬৪/৪০৬/৪০৯/৪২০/১০৯ পেনাল কোড ১৮৬০ ধারা মোতাবেক নালিশ দায়ের আছে। আদালত মামলার নথি পর্যালোচনা করে নালিশকারীর হলফান্তে গৃহীত জবানবন্দি ও নালিশী দরখাস্তসহ দাখিলকৃত কাগজপত্র পর্যালোচনা করিয়া নালিশটি আমলে নেন এবং মামলাটি তদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপ—পরিচালক, দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, সিলেট—কে নির্দেশনা দেন। এই আদেশের অনুলিপিসহ দাখিলকৃত নালিশের ও আনুষাঙ্গিক কাগজপত্রের ফটোকপি উপ—পরিচালক, দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, সিলেট বরাবরে প্রেরণ করার নির্দেশনাও দেয়া হয়। মামলার পরবর্তি তারিখ ১১/০৬/২০২৪। মামলায় উল্লেখ করা হয় যে, আসামীরা সরকারী চাকুরী বিধি লঙ্গণ করে নানান অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারের সেবামুলক প্রতিষ্ঠানটিকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিনত করেছেন এবং নিজেদের ব্যক্তি স্বার্থে স্বর্গরাজ্যে পরিনত করেছেন।
মামলার বাদী ইসলাম উদ্দিন জানান, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি একটি সিন্ডিকেট চক্রের মাধ্যমে সাধারন মানুষকে সেবা না দিয়ে হয়রানী করে আসছে এবং তাদের নিজেদের বিশাল অর্থ বিত্তের মালিক বানিয়েছে। তাদের টাকার কাছে সবাই হেরে যায়। তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে সর্বমহলের সহযোগিতা কামনা করছি।
এ ব্যাপারে বাদী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট কানন আলম জানান, ওসমানী হাসপাতালের অভিযুক্ত কর্মচারীরা নানান অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক হয়ে দেশ ও জাতির সাথে প্রতারনা করেছেন এবং সরকারের সেবামুলক প্রতিষ্ঠানটিকে একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট চক্রের মাধ্যমে অজ্ঞাত আরও কিছু কর্মকতার্—কর্মচারীদের যোগসাজসে অপরাধের স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছিল এবং সাধারন মানুষকে সেবা না দিয়ে হয়রানী করে আসছে। আশা করছি ওসমানী হাসপাতালের অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনে তদন্তকারী সংস্থা দুদক সবোর্চ্চ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে সার্বিক সহযোগিতা করবেন।