বিশেষ প্রতিবেদন,
তাপজনিত আঘাতের সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা হলো হিটস্ট্রোক। এটিকে চিকিৎসাশাস্ত্রে একটি জরুরি অবস্থা হিসেবে অভিহিত করা হয়। ফলে যখন কারও হিটস্ট্রোক হয় তখন তাকে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা দিতে হয়।
হিটস্ট্রোকের কারণে মৃত্যু, ব্রেন এবং অভ্যন্তরীণ অঙ্গপ্রতঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সাধারণত ৫০ বছর বা তারও বেশি বয়সী মানুষ হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। তবে স্বাস্থ্যবান মানুষও ভয়াবহ এই অবস্থায় পড়তে পারেন।
অতি উচ্চ তাপমাত্রা ও পানিশূন্যতার কারণে হিটস্ট্রোক হয়ে থাকে। হিটস্ট্রোক হলে শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বিকল হয়ে যায়। এরফলে শরীর অস্বাভাবিক গরম হয়ে পড়ে।
হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তির মাঝে কিছু লক্ষণ দেখা যায়। সেগুলো হলো—
মাথা ঝাঁকুনিসহ ব্যথা,
মাথা ঘোরা এবং হালকা মাথাব্যথা,
গরম থাকা সত্ত্বেও শরীর দিয়ে ঘাম বের না হওয়া,
লালচে, গরম এবং শুষ্ক চামড়া,
পেশী দুর্বলতা,
বমি বমি ভাব এবং বমি,
হার্টবিট বেড়ে যাওয়া, যেটি শক্তিশালী হতে পারে আবারও দুর্বলও হতে পারে,
দ্রুত ও অগভীর শ্বাসপ্রশ্বাস (পর্যাপ্ত বাতাস গ্রহণ করতে না পারা),
আচরণগত পরিবর্তন: যেমন বিভ্রান্তি ও হতভম্ব হওয়া,
খিঁচুনি,
অজ্ঞান হয়ে যাওয়া,
এসব লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত সময়ের মধ্যে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। তবে হাসপাতালে নিতে যদি দেরি হয় তাহলে তাৎক্ষণিক কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। সেগুলো হলো—
হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে বাতাস করতে হবে। সঙ্গে স্পঞ্জ বা অন্য কিছু দিয়ে শরীর ভিজিয়ে দিতে হবে।
আক্রান্ত ব্যক্তির বগল, কুঁচকি, গলা এবং পেছন ভাগে বরফ লাগাতে হবে। কারণ শরীরের এসব জায়গায় চামড়ার খুব কাছাকাছি রক্তানালী অবস্থিত। এসব জায়গা ঠান্ডা করলে শরীরের তাপমাত্রা কমে আসবে।
সম্ভব হলে ঠান্ডা পানিতে আক্রান্ত ব্যক্তিকে চুবাতে হবে। তবে বৃদ্ধ, খুবই ছোট শিশু, অন্যান্য রোগে আক্রান্ত এবং ব্যয়াম করার সময় কারও হিটস্ট্রোক হলে তার শরীরে বরফ ব্যবহার করা যাবে না। এতে উল্টো বিপদ ঘটতে পারে।
হিটস্ট্রোক এড়াতে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। ঘরের ভেতর বাতাস সঞ্চালনের ব্যবস্থা রাখতে হবে।