লাইফস্টাইল প্রতিবেদক :
বিশ্বব্যাপী সৌন্দর্য পিয়াসী নারীরা বর্তমানে কালোর চেয়ে বাহারি রঙের চুলই বেশি পছন্দ করছে। তাই তো চুলের ফ্যাশনে বিভিন্ন রঙের চুল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বাদামি, বেগুনি, নীল, গোলাপি, লাল, কমলা ইত্যাদি রং দিয়ে অনেকেই এখন চুল রাঙাতে পছন্দ করেন। আর হেয়ার কালার তো সুন্দরীদের লুকটাই অনেক পরিবর্তন করে দিতে পারে। বর্তমানে চুলে কালার করার চাহিদা অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে ঈদের আগে কমবেশি সবাই চুল কাটতে বা চুল রাঙাতে পার্লারে ভিড় করেন। তবে অতিরিক্ত ভিড় সামলে পার্লারে না গিয়ে বরং ঘরে বসেই করে নিতে পারেন মনের মতো পছন্দের হেয়ার কালার। আর এই বিষয়েই কিছু পরামর্শ দিয়েছেন বিউটিশিয়ান কানিজ ফাতেমা সুমাইয়া।
এক/দুই দিন আগে চুলে শ্যাম্পু করে নিন :
যেদিন চুল রং করবেন, তার এক বা দুই দিন আগে চুল অবশ্যই শ্যাম্পু করে নেবেন। এর ফলে চুল যেমন পরিষ্কার থাকবে, অন্যদিকে শ্যাম্পুর কারণে নষ্ট হয়ে যাওয়া চুলের প্রাকৃতিক তেলের আস্তরণও ফিরে আসে। মাথার স্ক্যাল্পে তেল জমে থাকলে রঙের কারণে প্রদাহ হয় না, রঙও চুলের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই মিশে যায়। এতে চুলে অনেক বেশি সময় ধরে রঙ স্থায়ী হয়।
পছন্দের রং আর সরঞ্জাম বেছে নিন :
চুলের রঙ বাছাই করার সময় তাড়াহুড়ো করবেন না। একটু সময় নিয়ে রঙ বাছাই করুন। চুল হাইলাইট করুন বা পুরো রঙ করুন – সব সময় উন্নত গুণমানের হেয়ার কালার বেছে নেবেন। রঙ করার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সব হাতের কাছে গুছিয়ে এবং পরিষ্কার রাখুন। তোয়ালে, গ্লাভস, রঙ মেশানোর বাটি, মোটা দাঁড়ার চিরুনি, প্লাস্টিকের ক্লিপ, রঙ লাগানোর ব্রাশ, সিলভার ফয়েল পেপার আর অবশ্যই হেয়ার কালার। বাড়িতে চুল রঙ করার সময় হাতের কাছে রাখুন ময়শ্চারাইজার বা ভেসলিন পেট্রোলিয়াম জেলি। কপালে হেয়ারলাইন বরাবর, কানের চারপাশে আর ঘাড়ে মোটা করে মেখে নিন। এটা করলে ত্বকে রঙ লেগে না যায়।
চুল প্রি-লাইটেন করে নিন :
স্বাভাবিক চুলের ওপরে হেয়ার কালারের রঙ ধরে না। তাই হেয়ার কালারের রঙ বোঝার জন্য আগে থেকে চুলের স্বাভাবিক রঙ একটু হালকা করে নিতে হয়। তাই কালারিং শুরু করার আগে প্রস্তুতি দরকার। বেশিরভাগ হেয়ার কালারের সঙ্গেই ব্লন্ডার পাউডার আর ডেভেলপার থাকে, এটা চুলের রঙ হালকা করতে সাহায্য করে।
আসল ও নকল প্রসাধনীর মধ্যে পার্থক্য যেভাবে বুঝবেন :
কোন রঙের পোশাকে স্লিম দেখায় ? তবে আপনার কালার বক্সে যদি তা না থাকে, তাহলে আলাদা করে কিনতে হবে। এসব জিনিস দোকানে সহজেই পেয়ে যাবেন। দুটি জিনিস ভালো করে মিশিয়ে চুলের যে অংশ রঙ করতে চান সেখানে লাগান। এরপর রঙ করা চুলের গোছা সিলভার ফয়েলে জড়িয়ে রাখুন। এরপর আধা ঘণ্টা থেকে ৪৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর চুল ধুয়ে ভালো করে শুকিয়ে নিন। তবে মনে রাখতে হবে – চুল রঙ করার অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে কালার মিক্সের টেস্ট করে নেওয়া উচিত। রঙের রাসায়নিক থেকে ত্বকে কোনো অ্যালার্জি বের হচ্ছে কি না সেটা বোঝার যথেষ্ট সময় পাবেন।
এবার সময় হলো রঙ করার :
চুল শুকিয়ে গেলে কালার করার পালা। চুল ভালো করে আঁচড়ে নিন খেয়াল রাখবেন যেনো জট না থাকে। এবার কালার মিক্স তৈরি করে নিন (বক্সে প্রয়োজনীয় নির্দেশ পাবেন), প্রি-লাইটেনড চুলের গোছায় অ্যাপ্লিকেটর ব্রাশ দিয়ে হেয়ার কালার লাগান। চুল বেশ কয়েকটা ভাগে ভাগ করে নিয়ে রঙ লাগানোই ভালো। এতে রঙ সমানভাবে ও ভালোভাবে লাগানো যায়। প্রতিটি ভাগ রঙ লাগানো হয়ে গেলে সিলভার ফয়েলে জড়িয়ে নিন। তারপর আরও ৩০-৪৫ মিনিট অপেক্ষা করুন।
সবশেষে চুল ধুয়ে শুকিয়ে নেওয়ার পালা :
চুল কালার করা হয়ে গেলে ধুয়ে নিয়ে আর একবার শ্যাম্পু করুন। এক্ষেত্রে সালফেট ফ্রি শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। আর অবশ্যই চুলে সঙ্গে কন্ডিশনার ব্যবহার করতে ভুলবেন না। চুল ধোয়ার সময় রঙ গলে বেরিয়ে যেতে দেখবেন, কিন্তু তাতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এটি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। চুল রঙ করার পর প্রথম কয়েকবার এমন হতে পারে। আরেকটি কথা – চুল ধোয়া হয়ে গেলে খোলা হাওয়ায় শুকিয়ে নিন অথবা ব্লো ড্রাই করুন। ততক্ষণে চুলে সুন্দর রঙ হয়ে যাওয়ার কথা। হয়তো একটু পরিশ্রম হবে, কিন্তু নিজের হাতে চুল রঙ করতে পারবেন আর এতে আপনার পয়সাও বাঁচবে!
মডেল : প্রিয়া অনন্যা