মতিউর রহমান দুলাল,(গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি):::
সিলেট বিভাগের রোগ নিয়ন্ত্রকের সহকারী পরিচালক ডাক্তার মোহাম্মদ নুরে আলম শামীম বলেন, “এমবিবিএস এর প্রথম বর্ষে প্রথম ধাপে কৃতকার্য হতে তোমাদের বেশি বেশি পড়তে হবে,বেশি বেশি করে পড়া ছাড়া প্রথম ধাপে কৃতকার্য হওয়ার আর কোন বিকল্প পথ নেই। অকৃতকার্য হলে পরে শুরুতেই ঝরে পড়ার আশঙ্কা থাকে। তখন আর সামনে এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায় এবং তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মেয়েদের বেলায় হয়ে থাকে। তাই প্রথম থেকেই পড়ালেখায় মনোযোগী হতে হবে। এমবিবিএস-এ পড়ার সুযোগ পাওয়া সবে মাত্র তোমাদের শুরু। সামনে অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। নিজস্ব কৌশল অনুযায়ী পরিকল্পনা তৈরি করে সে অনুযায়ী প্রস্তুতি চালিয়ে যেতে হবে। কঠোর অধ্যবসায় ও নিয়মিত পড়াশুনার মাধ্যমে ভাল ফলাফল অর্জন সম্ভব। কোনো পরিস্থিতিতেই হতাশ হলে চলবে না, হাল ছাড়া যাবে না বরং আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে প্রস্তুতি নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। প্রয়োজনে গ্রুপ করে পড়তে হবে, একজন পড়বে অন্যজন শুনবে এভাবে সাফল্য আসবেই। এখানে তোমাকে কোন শিক্ষক পাশ দিবে না, কারণ তোমারা মানুষের ডাক্তার হবে। এখানে তোমাদের নিজেদের যোগ্যতা ও মেধা দিয়ে পাস করতে হবে”। গোয়াইনঘাট ছাত্র পরিষদের আয়োজনে দেশের বিভিন্ন মেডিকেলে এমবিবিএস-এ চান্স প্রাপ্ত গোয়াইনঘাটের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডাক্তার শামীম বলেন, এমবিবিএস পাশ করার পাশাপাশি পোস্ট গ্রাজুয়েশন করা অত্যন্ত আবশ্যক। এমবিবিএস পাশ করেছ এমবিবিএস হয়েছে। পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন করার মাধ্যমে এর পরিপূর্ণতা আনতে হবে। এটা তোমাদের মাথায় রাখতে হবে।
তিনি আরো বলেন, তারপর বিসিএস এর ব্যাপারটা ভুলে গেলে চলবে না, একজন এমবিবিএস ডাক্তার, পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ও বিসিএসসহ তিনের সমন্বয়ে চাকুরী জীবনের পরিপূর্ণতা লাভ করে। তাই যে কোন মূল্যে তোমাদের বিসিএস অর্জন করতে হবে। যারা প্রাইভেট পড়ায় তাদের মেধা জাগ্রত থাকে, তারা খুব সহজেই বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারে। কারণ বিসিএস পরীক্ষায় তোমাদের ছোটবেলার লেখাপড়া থেকে শুরু করে বর্তমান বিশ্বপরিক্রমা পর্যন্ত প্রশ্ন থাকে। বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হলে চলমান মেধার প্রয়োজন। তার জন্য প্রয়োজন তোমাদের কঠোর অধ্যবসায় অনুশীলন অধ্যাবসায় অনুশীলন। সর্বোপরি তিনি এমবিবিএস থেকে শুরু করে চাকরিজীবন পর্যন্ত যা করনীয় তা খন্ড খন্ড আকারে চমৎকার বিশ্লেষণের মাধ্যমে তাঁর দীর্ঘ আলোচনায় এমবিবিএস-এ চান্স প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে তুলে ধরেন।
শুক্রবার ৮ মার্চ রাত ৮টায় আম্বরখানা একটি অভিজাত হোটেলে গোয়াইনঘাট ছাত্র পরিষদের সভাপতি শিব্বির আহমদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. মুছলেহ উদ্দিন মুনাঈমের সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রঞ্জন বিশ্বাস।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজের এনাটমি বিভাগের অধ্যাপক ডা: মোহাম্মদ আল মোহাইমিন, সোনালি ব্যাংক ওসমানি মেডিকেল শাখার ম্যানেজার ও সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার ফারুক আহমদ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক সালুটিকর শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আব্দুল মুছাব্বির, সাবেক সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন বাবুল, সিনিয়র সহ-সভাপতি সাদিক আহমদ রুবেল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম, সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা: শাহানারা আক্তার পারভীন।
এছাড়া বক্তব্য রাখেন,গোয়াইনঘাট ছাত্র পরিষদের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক শাহানুর সাহান, উপ স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক তাহেরা আফরীন।
কৃতী শিক্ষার্থীর গর্বিত বাবার অনুভূতি ব্যক্ত করেন নোয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কবির উদ্দিন, গর্বিত মায়ের অনুভূতি ব্যক্ত করেন গোয়াইনঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী রেহেনা খাতুন। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মুফতি নাসির উদ্দিন।
সরকারি মেডিকেল কলেজে চান্সপ্রাপ্ত গোয়াইনঘাটের ছয় জন হলেন জুবায়ের আহমদ কামরান, সুরাইয়া জান্নাত, সুন্নাহ আক্তার কনা, শান্তা আক্তার দিনা, সাহাব উদ্দিন, নিশাত তাসনিম।
উপস্থিত ছিলেন মিজানুর রহমান, তারেকুজ্জামান, নাদিম হাসান, সেলিম আহমদ, মিসবাহ আল মামুন, মামুন আহমদ, মামুনুর রশীদ, মইনুল হক, তারেক আহমদ, তুহিন, আকিব, আরিফ, রাজু, জুনেদ, দুলাল, লুৎফুর, তানিম, তাহসিন, মর্তুজ আলী, মামুন, রিয়াদ, সাদিক, আশরাফুল, নাবিল প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা গোয়াইনঘাট ছাত্র পরিষদের বর্তমান কার্যক্রমের প্রশংসা করে বলেন, গোয়াইনঘাট কে এগিয়ে নিয়ে যেতে স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করতে হবে। প্রয়োজনে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষা সেমিনারসহ শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকল বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তবেই গোয়াইনঘাট এগিয়ে যাবে আর এটা সম্ভব হবে গোয়াইনঘাট ছাত্র পরিষদের দ্বারা।