Saturday, November 23, 2024
Homeঅন্যান্যকৃষিবৃষ্টির পর দ্রুত কুঁড়ি ছাড়ছে চা গাছ

বৃষ্টির পর দ্রুত কুঁড়ি ছাড়ছে চা গাছ

বিশেষ প্রতিনিধি:

মৌলভীবাজার: বৃষ্টি মাখা মেখে সমৃদ্ধির সূচনা শুরু করে দিয়েছে চা-গাছেরা। প্রথমে ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি তারপর এসেছে ঝুমঝুম বৃষ্টির সতেজতা।

 

এরই সাথে রয়েছে এই বসন্তে বৃষ্টিময় শীতের অসলতা জাগানো আমেজ। এগুলোই চা-গাছদের সাহায্য করেছে কুঁড়িগুলোর প্রকৃতির মাঝে দ্রুত বের করে আনতে।

চা বাগানের হিসাব অনুযায়ী গড় উৎপাদন বাড়ার লক্ষ্যে প্রতি বছরে একবার করে চা-গাছে প্রুনিং করা হয়। চা-বাগানে একে বলে ছাঁটাই করা।

 

সেটা শুরু হয় ডিসেম্বরের পর থেকে। একেক বাগানে এই প্রুনিং এর তারিখ একেক সময় অর্থাৎ কিছু আগে-পিছে হয়ে থাকে।

 

প্রতি বছর যেসব সেকশনে (চা বাগানের সুনির্দিষ্ট এলাকা) প্রুনিং হয়ে থাকে তা নয়। পর্যায়ক্রমে গড়ে দুই-তিন বছর পর পর চলে প্রতি সেকশনে এই ছাঁটাইকরণ কার্যক্রম। তখন চা বাগানকে দেখা যায় অন্যরকম বিচিত্রভাবে। সবুজ সতেজ পাতাগুলো বিলীন হয়ে তখন ফুটে ওঠে শুধু ডালের উপস্থিতি।

 

একেকটি চা-গাছে থাকে শক্ত শক্ত স্থুল-সরু ডাল। ডালের ওই কেটে ফেলা অংশটি থাকে ঠিক ওপরের দিকে। তারপর সময় গড়ায়। চা-বাগান থেকে ধীরে ধীরে শীত বিদায় নেন। চলে আসে ঋতুরাজ বসন্ত। তবে শীতের আমেজ পুরোপুরি উধাও হয়ে যায় না। সকালে এবং সন্ধ্যের আধারে নামে শীতের উপস্থিতি। এর মাঝেই প্রুনিং করা চা-গাছেরা প্রহর গুণতে থাকে বৃষ্টির।

 

মেঘেরা কালো হয়ে জড়ো হয় আকাশে। সূর্যের প্রগাঢ় কিরণ ঢেকে ফেলে মুহূর্তে। ছায়াঘন আবহ ছড়ায় চা-প্রকৃতি। সাথে শীতল বাতাস। এরপরই দুটি-চারটি দানায় নামে প্রতীক্ষিত বৃষ্টিপাত। ফোঁটায় ফোঁটায় নবধারা জলের দুরন্ত স্নিগ্ধতা।

 

 

বৃষ্টি জমাটবদ্ধতার পরিমাপের গাণিতিক একক হিসেবে সম্প্রতি (৫ দিন) বৃহত্তর সিলেটে বৃষ্টিপাত হয়েছে ১০৪ দশমিক ১ মিলিমিটার। চায়ের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃত শ্রীমঙ্গলের সাম্প্রতিক সময়ের বৃষ্টিপাত হয়েছে সিলেট বিভাগের মাঝে সর্বাধিক। ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি শ্রীমঙ্গলে মোট বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে ৭৩ মিলিমিটার।

 

শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক আনিসুর রহমান এ তথ্য জানান।

 

সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়া সহকারী অমল তালুকদার বলেন, ওই ৫ দিন সিলেট শহরে বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে ৩১ দশমিক ১ মিলিমিটার।

 

বাংলাদেশীয় চা সংসদের (বিসিএস) সিলেট ব্রাঞ্চ চেয়ারম্যান এবং সিনিয়র টি-প্লান্টার গোলাম মোহাম্মদ শিবলি সিলেটের কাগজ কে বলেন, আমরা এই বৃষ্টির অপেক্ষায় ছিলাম। বৃষ্টিপাত চায়ের জন্য অনেক উপকারী। বিশেষত ‘ইয়াং টি’ মানে নতুন চা গাছ যেগুলো আছে তারা উপকার পাবে। তারপর প্রুনিংকৃত চা গাছগুলো দ্রুত কুঁড়ি ছাড়বে। অলরেডি চা গাছগুলো কুঁড়ি ছাড়তে শুরু করে দিয়েছে। বৃষ্টির জন্য ঠিকমতো চা–গাছের কুঁড়ি চলে আসবে। আমরা তাড়াতাড়ি ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে (চা প্রক্রিয়াজাতকরণ) যেতে পারবো।

 

নতুন কুঁড়ি না আসা, পানির সংকট, লাল মাকড়সার আক্রমণসহ নানান সমস্যা দূর হয়ে চা–গাছগুলোতে সজীবতা ফিরে এসেছে এই বৃষ্টিপাতে। তবে অধিক বৃষ্টিপাতও চা–বাগানের জন্য মঙ্গলজনক নয় বলে জানান তিনি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments