Friday, November 8, 2024
Homeঅন্যান্য৬০ বছরের মুশতাকের মধ্যে যা দেখেছেন একাদশ শ্রেণির তিশা

৬০ বছরের মুশতাকের মধ্যে যা দেখেছেন একাদশ শ্রেণির তিশা

বিশেষ প্রতিনিধি:

 

ঢাকার মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী সিনথিয়া ইসলাম তিশা (১৮) বিয়ে করেছেন ৬০ বছরের খন্দকার মুশতাক আহমেদকে। ভালোবাসার সপ্তাহে অসম বয়সি দুজনের লাভস্টোরি হট টপিক।

 

মুশতাকের বয়স তিশার বাবার থেকেও ৮ বছর বেশি। কিন্তু এতে কোনো সমস্যা নেই তাদের। তাদের গল্প হার মানাচ্ছে সিনেমা বা উপন্যাসের কাহিনিকেও।

 

 

১৮ বছরের তিশা জানান, ভালোবেসে এবং স্বেচ্ছায় তিনি বিয়ে করেছেন ৬০ বছরের মুশতাক আহমেদকে। স্বামীকে নিয়ে খুব সুখেই আছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। বিয়ের আগে তাদের সেভাবে কেউ না চিনলেও এখন নতুনভাবে বেশ পরিচিতি লাভ করেছেন তারা।

 

ঢাকার মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদের সঙ্গে তিশার প্রেমের শুরু ফেসবুকে। তিশাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠান মুশতাক। কথাবার্তা হয়েছিল ফেসবুকে নতুন পরিচিত কারও সঙ্গে যেমনভাবে হয়, ঠিক তেমনভাবেই।

প্রথম দেখা হয়েছিল ঢাকার আইডিয়াল স্কুল ও কলেজের নবীনবরণ উৎসবে। সেখানে তিশা গিয়েছিলেন নতুন ছাত্রী হিসেবে। আর মুশকাক খন্দকার ওই কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য রূপে।

 

এই সাক্ষাতেই ধীরে ধীরে মজবুত হয়। পরিণত হয় প্রেমে। তিশাকে মুশতাক জিজ্ঞাসা করেছিলেন, এই সম্পর্কের পরিণতি ঠিক কী হতে চলেছে? জবাবে তিশা জানান, তিনি বিয়ে করতে রাজি। তবে তিশার বাড়ির লোক এই সম্পর্কটা মেনে নেননি।

তিশাকে ঘরে তালাবন্ধ করে রাখেন তার বাবা-মা। কিন্তু বাড়ির ছাদ থেকে লাফিয়ে পালিয়ে যান তিশা। ঠাকুরগাঁও থেকে তিনি চলে যান ঢাকায় খন্দকার মুশতাকের কাছে। সেখানে ধর্মীয় রীতির পরে আইন মেনে বিয়ে করেন তারা।

 

তাতেও তিশার মা-বাবা এই সম্পর্ক মেনে নেননি। তারা থানায় খন্দকার মুশতাকের বিরুদ্ধে মেয়েকে অপহরণের অভিযোগ আনেন। বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন তিশাকে কিছু দিন হোমে কাটাতে হয়। মুশতাকের আইনজীবী সাহাবুদ্দিন খান জানান, তিশার বাবা সাইফুল ইসলাম একটি মামলা করে তাকে নাবালিকা হিসাবে দাবি করেন।

কিন্তু আদালতে তিশা এসে জবানবন্দি দিয়েছেন যে, স্বেচ্ছায় তিনি মুশতাককে বিয়ে করেছেন। বিচারকের কাছে তিশা জানান, তিনি সাবালিকা। স্বামীর কাছেই স্বেচ্ছায় থাকতে চান। স্বামীর সঙ্গে তার বয়সের ব্যবধান ৪০ বছরের বেশি। তবু তিশার দাবি, তিনি তার স্বামীর সঙ্গে সুখে ঘর-সংসার করছেন।

 

এক কন্যাসন্তান রয়েছে খন্দকার মুশতাকের। নতুন মা তিশার থেকে বয়সে বড় সে। সম্পর্কে মা হলেও সেই মেয়ের সঙ্গে বেশ বন্ধুর মতো মানিয়ে নিয়েছেন তিশা। সংবাদমাধ্যমকে তিশা জানিয়েছেন, স্বামীকে বুড়ো বলে মনে করেন না তিনি। তার স্বামীর সেই মনটা ৩৭ বছরের তরতাজা যুবকের মতো। তাই বয়সের ব্যবধান তাদের সম্পর্কে বাধা হয়ে ওঠেনি। স্বামীর অনুপ্রেরণাতেই লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন তিশা।

 

অনেকেই মন্তব্য করেছেন যে টাকার জন্য বিয়ে করেছে তিশা। কিন্তু মুশতাক বলেন, ‘তিশা ভালো পরিবারের সন্তান। সে ভালোবেসে আমাকে বিয়ে করেছে। এখানে টাকা-পয়সার লোভের প্রশ্নই আসে না’।

 

এদিকে একুশে বইমেলা উপলক্ষ্যে মিজান পাবলিশার্স থেকে তাদের ‘তিশা অ্যান্ড মুশতাক’ ও ‘তিশার ভালোবাসা’ নামে দুটি বই প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশনা ও পাঠকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের উদ্দেশে শুক্রবার বিকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত অমর একুশে বইমেলায় যান তারা। এ সময় ক্রেতা ও ভক্তদের সঙ্গে মতবিনিময়, ছবি তোলা ও অটোগ্রাফ দেন।

 

হঠাৎ উপস্থিত অজ্ঞাতনামা কিছু লোক তাদের হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্দেশে নানা ধরনের মন্তব্য করতে থাকেন। এ সময় খন্দকার মুশতাক আহমেদের প্রকাশিত কয়েকটি বই ছিঁড়ে ফেলা ও প্রাণনাশের হুমকি দেন।

 

এ ঘটনায় শনিবার রাত ৯টার পর খন্দকার মুশতাক আহমেদ শাহবাগ থানায় নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments