Saturday, November 9, 2024
Homeইসলামআজ মুসলিম উম্মাহ'র পবিত্র শবে মেরাজ

আজ মুসলিম উম্মাহ’র পবিত্র শবে মেরাজ

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:

 

পবিত্র শবে মেরাজ আজ বৃহস্পতিবার। ইসলাম ধর্মে বছরে যে কয়টি রাত ফজিলতপূর্ণ এর একটি শবে মেরাজ। ২৬ রজব এই রাতটি ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হয়। সে হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতই পবিত্র শবে মেরাজ। মুসলিমরা রাতটি বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে ইবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে পালন করবেন।

 

লায়লাতুল মেরাজ বা শবে মেরাজ প্রিয়নবী সা.-এর মেরাজের স্মৃতির সঙ্গে জড়িত। নবুওয়াত লাভের একাদশ বর্ষের রজব মাসের ২৬ তারিখ দিবাগত রাতে আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হজরত জিবরাঈল আলাহিস্সালামের সঙ্গে পবিত্র কাবা হতে ভূমধ্যসাগরের পূর্ব তীর ফিলিস্তিনে অবস্থিত পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস হয়ে সপ্তাকাশের ওপর সিদরাতুল মুনতাহা হয়ে সত্তর হাজার নূরের পর্দা পেরিয়ে আরশে আজিমে মহান আল্লাহ তায়ালার দিদার লাভ করেন এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম নিয়ে দুনিয়াতে প্রত্যাবর্তন করেন। তিনি অবলোকন করেন সৃষ্টি জগতের সব কিছুর অপার রহস্য।

 

 

ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত সফরকে ‘ইসরা’ এবং মসজিদুল আকসা থেকে সাত আসমান পেরিয়ে আরশে আজিম সফরকে ‘মিরাজ’ বলা হয়। ইতিহাসের নিরিখে নবুওয়াতের দশম বছর ৬২০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ রজব দিবাগত রাতে মহানবী (সা:) আল্লাহর সান্নিধ্যে মিরাজ গমন করেন। পবিত্র কোরআনের সূরা বনি ঈসরাইল ও সূরা নজমের আয়াতে, তাফসিরে এবং সব হাদিস গ্রন্থে মিরাজের ঘটনার বর্ণনা রয়েছে।

 

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনের সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা ‘মি‘রাজ’। মি‘রাজ ইসলামের ইতিহাসে এমনকি পুরা নবুওয়াতের ইতিহাসেও এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। কারণ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব ও রসুল হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছাড়া অন্য কোনো নবী এই পরম সৌভাগ্য লাভ করতে পারেননি। আর এ কারণেই হজরত মুহাম্মদ রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বশ্রেষ্ঠ নবী। এ মি‘রাজ রজনিতেই মানব জাতির শ্রেষ্ঠ ইবাদত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হয়।

 

মি‘রাজ শব্দটি আরবি, অর্থ ঊর্ধ্বারোহণ। ঊর্ধ্বলোকে পরিভ্রমণ। এ মেরাজের বড়দাগে অর্থ দাঁড়ায়—সপ্তম আসমান, সিদরাতুল মুনতাহা, জান্নাত-জাহান্নাম পরিদর্শন ও ধনুক কিংবা তার চেয়ে কম দূরত্ব পরিমাণ আল্লাহ তা‘আলার নৈকট্য পর্যন্ত ভ্রমণ।

এ ছিল আল্লাহ তাআলার মহান কুদরত, অলৌকিক নিদর্শন, নবুয়তের সত্যতার স্বপক্ষে এক বিরাট আলামত, জ্ঞানীদের জন্য উপদেশ, মোমিনদের জন্য প্রমাণ, হেদায়েত, নেয়ামত, রহমত, মহান আল্লাহর একান্ত সান্নিধ্যে হাজির হওয়া, ঊর্ধ্বলোক সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান অর্জন, অদৃশ্য ভাগ্য সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান লাভ, ইহকাল ও পরকাল সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন, স্বচক্ষে জান্নাত-জাহান্নাম অবলোকন, পূর্ববর্তী নবী-রসুলগণের সঙ্গে সাক্ষাত ও পরিচিত হওয়া, সুবিশাল নভোমণ্ডল পরিভ্রমণ করা এবং সর্বোপরি এটিকে একটি অনন্য মু‘জিযা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।

 

পারিভাষিক অর্থে বিশেষ রাতের শেষ প্রহরে হজরত মুহাম্মদ রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিব্রাইলের (আ.) সঙ্গে আল্লাহর নির্দেশে তার খাস রহমতে বায়তুল্লাহ হতে বায়তুল মুক্বাদ্দাস পর্যন্ত ‘বোরাক্বে’ ভ্রমণ, অতঃপর সেখান থেকে অলৌকিক সিঁড়ির মাধ্যমে সপ্ত আসমান পেরিয়ে আরশে আল্লাহর সান্নিধ্যে গমন ও পুনরায় বায়তুল মুক্বাদ্দাস হয়ে বোরাক্বে আরোহণ করে প্রভাতের আগেই মক্কায় নিজ গৃহে প্রত্যাবর্তনের ঘটনাকে ‘মি‘রাজ’ বলা হয়।

 

ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও যথাযথ মর্যাদায় এ দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরাও আজ কুরআনখানি, নফল সালাত, জিকির আসকার, ওয়াজ মাহফিল, দোয়া-দরুদ পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে পবিত্র শবে মেরাজ পালন করবেন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments