বিশেষ প্রতিনিধি:
নিজে ফেসবুকের সুবাদে এমপি হলেও এর পেছনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ডিজিটাল বাংলাদেশের ফসল হিসেবে তুলেছেন।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের প্রসঙ্গ ধরে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যখন তার দেখা হয়, তিনি আমাকে হেসে হেসে বলেছিলেন- তুমি তো ফেসবুকের মধ্য দিয়ে এমপি হয়ে গিয়েছ। আমি একটা জিনিস পরিষ্কার করতে চাই— আমি ফেসবুককে ব্যবহার করে (এমপি) হয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশটাকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর করেছেন, সেটির প্রোডাক্ট হচ্ছে ফেসবুক। এই ডিজিটাল বাংলাদেশ না করলে আমি ফেসবুকে ৭ মিলিয়ন ফলোয়ার তৈরি করতে পারতাম না। এই বিবেচনায় আপনি বলতেই পারেন যে আমি ফেসবুকের এমপি। কিন্তু আমাকে ফসল হিসেবে তুলেছেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সামনের দিকের আসনে বসা স্বতন্ত্র ও বিরোধী সদস্যদের সবকিছুই তিনি দেখতে পান। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর পেছনে যারা বসেন, তারাই ক্ষমতার উৎস। তাদেরকেও একটু চেক করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান জানান তিনি। এসময় সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হাসতে দেখা গেছে।
সায়েদুল হক সুমন বলেন, যারা স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রয়েছেন, তাদেরকে অনেকে জিজ্ঞাসা করেন— সংসদে অবস্থান কী। নিজের ব্যক্তিগত অবস্থান তুলে ধরে বলেন, তিনি সরকারের বিরোধিতা করবেন, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ ও বঙ্গবন্ধুর ব্যাপারে স্বতন্ত্রদের অবস্থান হবে এক ও অভিন্ন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে দেশের উন্নয়ন কাজের ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, যে উন্নয়ন তিনি করেছেন বাংলাদেশের ইতিহাসে তা হয়নি। হৃদয়ে যদি দেশপ্রেম থাকে, টাকা কোনও সমস্যা না—এটা প্রমাণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। চাইলেই এদেশকে বহুদূর নিয়ে যাওয়া সম্ভব।
সরকারের উন্নয়নের প্রশংসা করে সুমন বলেন, এত সফলতার মধ্যেও কিছু সমস্যা আছে। দ্রব্যমূল্যের অবস্থা খুবই খারাপ। ব্যাংকগুলোর অবস্থা খুব খারাপ। টাকা পাচার কোনোভাবে রোধ করা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, সৌভাগ্য কি দুর্ভাগ্য জানি না, প্রধানমন্ত্রীর একেবারে সামনেই পড়েছে আমার সিট। তিনি সব দেখতে পান। আমাদের নড়াচড়ার কোনও সুযোগ নাই। সব বিরোধী দল এবং স্বতন্ত্ররা প্রধানমন্ত্রীর চোখের সামনে পড়ে গেছে। আমরা সংসদের বাইরেও নড়তে পারবো না, ভেতরেও নড়তে পারতেছি না। তবে ভয় পাই প্রধানমন্ত্রীর পেছনে যারা বসছেন, তারা তো সকল ক্ষমতার উৎস। তাদের হয়তো প্রধানমন্ত্রী সবসময় চোখে দেখতে পান না। তবে তার বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রী আমাদের (স্বতন্ত্রদের) যেভাবে দেখবেন, তার পেছনে যারা আছেন— তাদেরকেও যদি একটু চেক করেন…।
রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বতন্ত্র সদস্য হুছামুদ্দীন চৌধুরী বলেছেন, তাকে সংসদ নির্বাচনে আসার প্রেরণা ও স্নেহছায়া দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, সব ধর্মের সহাবস্থান নিশ্চিত করার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী ইসলামি শিক্ষার জন্য যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা দেশের ইতিহাসে কেউ করতে পারেননি।
শিক্ষা ব্যবস্থা ও পাঠ্যক্রমের দিকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে হুছামুদ্দীন বলেন, কারিকুলাম কিছুটা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। পাঠ্যবইয়ে ফিলিস্তিনের মানচিত্রের পরিবর্তে ইসরাইলের মানচিত্র দেওয়া হয়েছে। ফিলিস্তিনকে মুছে দেওয়া হয়েছে। এটা দুঃখজনক।