লাইফস্টাইল:
পুষ্টিবিদের পরামর্শ শুনলে চোখ কপালে উঠে যায়। এরপরও রোজ রোজ ডিম খেতে অনেকেই পছন্দ করেন। তবে এতে শরীরের লাভ না ক্ষতি হয়, এই বিষয়ে বেশিরভাগই খবর রাখেন না। তাই অনেকেই বুকে ভয়ে নিয়েই ডিম খান। তাই এই বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হলো পুষ্টিবিদদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে। এমনকী ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল থাকলে কতকগুল5 ডিম খাওয়া উচিত, সেই বিষয়েও মতামত পাওয়া গেছে। তাই দ্রুত এই প্রতিবেদনটি পড়ে ফেলুন।
অনেকেই ডিমের প্রেমে পাগল। তাই তো তারা প্রায় রোজই ডিমের পোচ, হাফ বয়েল, ফুল বয়েল বা ঝাল-ঝাল ডিমের কারি খেয়েই রসনাতৃপ্তি সারেন। আর ডিম ভক্ত এই মানুষদের দেখেই চোখ কপালে ওঠে কিছু সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষজ্ঞদের। এইসব স্বঘোষিত বিশেষজ্ঞদের কথায়, ডিমের মতো একটি উপকারী খাবারও নাকি রোজ রোজ খাওয়া উচিত নয়। এই ভুলের ফাঁদে পা দিলে নাকি একাধিক রোগের খপ্পরে পড়ার আশঙ্কাই বাড়ে। আর সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষজ্ঞদের এহেন সাবধানবাণী শোনার পর অনেকের মনেই প্রশ্ন আসে যে, সত্যিই কি প্রতিদিন ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যের আদৌ পক্ষে ক্ষতিকর ?
পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন, একটি ডিম থেকে পাওয়া যায় মোটামুটি ৭২ ক্যালোরি, ৫ গ্রাম ফ্যাট, ২০৬ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল, ৬৫ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, ০৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট এবং ৬ গ্রাম প্রোটিন। সেই সঙ্গে এতে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, ক্যালশিয়াম এবং আয়রনের মতো অত্যন্ত উপকারী কিছু ভিটামিন এবং খনিজের ভাণ্ডার। তাই নিয়মিত ডিম খেলে যে দেহে পুষ্টির ঘাটতি মিটে যাবে, তা তো বলাই বাহুল্য। এমনকী এই খাবারের গুণে একাধিক রোগব্যাধিও থাকবে দূরে। তাই সুস্থ থাকতে যত দ্রুত সম্ভব ডিমের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়ে নিন।
পুষ্টিবিদদের মতে – যেকোনো মানুষ দিনে একটি ডিম খেতেই পারেন। তাতেই শরীরে অ্যালবুমিন নামক একটি প্রোটিনের ঘাটতি মিটে যাবে। এমনকী ডায়াবেটিস, হাই প্রেশারের মতো অসুখ থাকলেও রোজ একটা গোটা ডিম খাওয়াই যায়। তাই এইসব অসুখ থাকলেও ডিম খাওয়া বন্ধ করবেন না। এই ভুলটা করলে কিন্তু শরীরে পুষ্টির ঘাটতি হওয়ার আশঙ্কাই বাড়বে।
অনেকেই মনে করেন, ডিম খেলে বোধ হয় কোলেস্টরল বাড়বে। তবে কথাটা আংশিক সত্য বলেই জানান পুষ্টিবিদরা। তাদের মতে – ডিমের কুসুমে খারাপ কোলেস্টেরল থাকলেও তা খুবই নগণ্য মাত্রায় রয়েছে। তাই দিনে একটা ডিম খেলে কোলেস্টেরল বাড়ার আশঙ্কা তেমন একটা থাকে না বললেই চলে। তবে কোলেস্টেরল রোগীরা দিনে একটার বেশি ডিম কোনো ভাবেই খাবেন না। তাহলে কিন্তু সমস্যা বাড়তে পারে।
বয়স কম থাকলে দিনে দুইটি ডিম অনায়াসে খাওয়া যায়। তবে বয়স ৩৫ এর গণ্ডি পেরিয়ে গেলে একটি ডিম গলাধঃকরণ করার মধ্যেই নিজেকে আটকে রাখার চেষ্টা করুন। তাতেই শরীর থাকবে সুস্থ – সবল। আর ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, কোলেস্টেরল থাকলেও দিনে একটি ডিমই খেতে হবে। নইলে শরীরের স্বাস্থ্য বিগড়ে যেতে সময় লাগবে না। তাই এবার থেকে ডিম খাওয়ার সময় সংখ্যার এই হিসাবটা মাথায় রাখবেন।
অনেকেই হাফ বয়েল বা পোচ করে ডিম খেতে ভালোবাসেন। তবে এভাবে অর্ধসিদ্ধ ডিম খেলে শরীরে প্রবেশ করতে পারে অ্যাভিডিন নামক একটি উপাদান। আর সমস্যা হলো, আমাদের শরীর কিন্তু এই উপাদানটিকে হজম করতে পারে না। ফলে ডিম হাফ বয়েল বা পোচ খাওয়ার পর গ্যাস – অ্যাসিডিটির ফাঁদে পড়ার আশঙ্কা বাড়ে। তাই এবার থেকে ডিম খেতে হলে ফুল বয়েল খান।