খেলাধুলা প্রতিদিন:
বিপিএল,
দেশি-বিদেশি ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণ, আর্থিক হিসাব-নিকাশ ও আঞ্চলিক দল হিসাব করলে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) দেশের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট।
তবে বিপিএলের বাইরের চেহারা যতটা উজ্জ্বল, ভেতরের আয়োজন ততই শ্রীহীন। সাত দল নিয়ে আজ বসছে বিপিএলের দশম আসর।
কিন্তু নেই কোনো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের এলাকা দেখেও বোঝার উপায় নেই যে, কিছু একটা হতে চলেছে। একাডেমির পাশে অবশ্য মাইকে ঘোষণা দিয়ে টিকিট বিক্রি চলছে দুদিন ধরে। একই সময়ে বিশ্বের আরও পাঁচটি টি ২০ টুর্নামেন্ট চলায় নেই বিদেশি তারকা ক্রিকেটারদের সমাহার।
তবুও বিসিবির সবচেয়ে আগ্রহের টি ২০ টুর্নামেন্ট নিয়ে উৎসাহের কমতি নেই অনেকেরই। তিন ভেন্যুতে ৪৩ দিন ও ৪৬ ম্যাচের টুর্নামেন্ট শুরু মিরপুর থেকে।
উদ্বোধনী ম্যাচে বেলা আড়াইটায় বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মুখোমুখি হবে দুর্দান্ত ঢাকা। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বর্তমান রানার্সআপ সিলেট স্ট্রাইকার্সের প্রতিপক্ষ চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। সরাসরি দেখা যাবে টি স্পোর্টস ও জিটিভিতে।
বিপিএলের সঙ্গে একই সময়ে চলবে বিশ্বের আরও পাঁচটি টুর্নামেন্ট। সংযুক্ত আরব আমিরাতে আইএল টি ২০, দক্ষিণ আফ্রিকায় এসএ টি ২০, অস্ট্রেলিয়ায় বিগ ব্যাশ লিগ এবং নিউজিল্যান্ডে সুপার ম্যাশ। তবুও বিপিএলের দলগুলো মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয়ে ভালো কিছু বিদেশি ক্রিকেটার ধরে রাখার চেষ্টা করেছে।
এই তালিকায় শীর্ষে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
শুরু থেকে সব ভালো খেলোয়াড় না পেলেও মোহাম্মদ রিজওয়ান, সুনীল নারিন, মঈন আলী, আন্দ্রে রাসেল ইফতেখার অহমেদ, রশিদ খান, জনসন চার্লসের মতো ক্রিকেটারদের রেখেছে কুমিল্লা। শুরুতে তাদের না পাওয়া গেলেও শেষের দিকে খেলার সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়া নাজিবউল্লাহ জাদরান, এভিন লুইস, ইব্রাহিম জাদরান, শোয়েব মালিক, ফখর জামান, পল স্টার্লিং, বেনি কাটিং, সামিরা সামারাবিক্রমার মতো ক্রিকেটার খেলবেন এবারের বিপিএলে।
শুরুতে আটটি ম্যাচ হবে মিরপুরে। এরপর বিপিএল চলে যাবে সিলেটে। ২৬ জানুয়ারি সিলেটে প্রথম ম্যাচ। সিলেটে হবে ১২টি ম্যাচ। দ্বিতীয় পর্বে বিপিএল আবার ফিরবে মিরপুরে। ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে আট ম্যাচ হয়ে এবার চট্টগ্রামে। ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে সেখানেও হবে ১২টি ম্যাচ। এরপর ২১ ফেব্রুয়ারি মিরপুরে ফিরে ১ মার্চ ফাইনাল।
টুর্নামেন্টের সবচেয়ে সফল দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। নয় আসরে চারবার তারা চ্যাম্পিয়ন। মাশরাফির হাত ধরে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ইমরুল কায়েস এই দলকে শিরোপা জিতিয়েছেন তিনবার। এবার তাদের নেতৃত্ব দেবেন লিটন দাস।
টুর্নামেন্ট নিয়ে বৃহস্পতিবার লিটন বলেন, ‘আমাদের দলটা ভারসাম্যপূর্ণ। দেশি-বিদেশি অনেক ভালো ক্রিকেটার রয়েছে। প্রথম ম্যাচ নিয়ে একটু সমস্যা হতে পারে। বিদেশি ক্রিকেটাররা চলে আসায় দ্বিতীয় ম্যাচ থেকে কোনো সমস্যা হবে না।’ তাদের প্রতিপক্ষ দুর্দান্ত ঢাকা। দলে তেমন বড় নাম নেই। স্থানীয়দের মধ্যে তাসকিন আহমেদ, শরীফুল ইসলাম, মোসাদ্দেক হোসেনরা রয়েছেন। দলটির নেতৃত্ব দেবেন মোসাদ্দেক।
তারকা ক্রিকেটার তাসকিন বলেন, ‘টি ২০ ক্রিকেটে নির্দিষ্ট দিনে পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলতে হয়। বলেকয়ে অনেক সময় সব কিছু হয় না। আগামীকাল (আজ) থেকে আমাদের টুর্নামেন্ট শুরু। একই খেলা। শুধু নামটা বিপিএল। সব সময় চাপ থাকে।’
দ্বিতীয় ম্যাচে সিলেট ও চট্টগ্রাম মুখোমুখি হবে। এবারও সিলেটের অধিনায়ক মাশরাফি মুর্তজা। দীর্ঘদিন ক্রিকেটের বাইরে থাকায় প্রথম ম্যাচে খেলার অবস্থায় নেই জাতীয় দলের এই সাবেক অধিনায়ক।
সহঅধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন বলেন, ‘দল হিসাবে আমরা কীভাবে পারফরম্যান্স করতে পারি, অন্যদের সঙ্গে তুলনায় না গিয়ে কীভাবে ভালো করতে পারি, এসব নিয়েই ভাবছি। নিজেদের কাজে ফোকাস রাখছি।’ গতবার ভালো করতে না পারলেও চট্টগ্রামের অধিনায়ক শুভাগত হোম এবার আশাবাদী।
তিনি বলেন, ‘তামিম (তানজিদ হাসান), শহিদুল, আল আমিনদের মতো তরুণ খেলোয়াড় আছে দলে। সব মিলিয়ে আমার খুব একটা সমস্যা হবে না। সবাই খুবই হেল্পফুল, নিজেদের ভ‚মিকাটা জানে। আমার জন্য কাজটা সহজ হবে।’
এবার ডিআরএস প্রথম থেকেই পাওয়া যাবে। এছাড়া টাইমড আউটের মতো আউটও থাকছে এবারের বিপিএলে। এছাড়া প্লে-অফ থেকে প্রতিটি ম্যাচে থাকছে রিজার্ভ ডে। টুর্নামেন্টের ধারাভাষ্যকারদের মধ্যে আছেন-ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোর্টলি অ্যামব্রোস, দক্ষিণ আফ্রিকার এইচডি অ্যাকারম্যান, পাকিস্তানের রমিজ রাজা ও আমির সোহেল এবং শ্রীলংকার রাসেল আরনাল্ড। তাদের সঙ্গে স্থানীয় চার ধারাভাষ্যকার।