দোয়ারাবাজার প্রতিনিধি:
নির্বাচনের দিন আওয়ামী লীগ প্রার্থী মুহিবুর রহমান মানিক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শামীম আহমদ চৌধুরীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার জেরে দোয়ারাবাজার সদরে যুবলীগ নেতার উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এই ঘটনার পর দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে সাংবাদিকসহ অন্তত ৫০জন আহত হয়েছে। বর্তমানে সেখানে থমথমে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে মাসুদ রানা সোহাগ নামের এক সংবাদ কর্মী সংঘর্ষের ভিডিও ধারণ করতে গেলে আহত হন।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা সদরে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে ১০৪ রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে এবং ৯জনকে আটকর করে। এসময় ঘটনাস্থল ৩টি রামদা, একটি পরিত্যক্ত গুলি ও বিপুল পরিমাণ দেশী অস্ত্র জব্দ করে।
জানা যায়, ভোটের দিন রোববার (৭ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে দোয়ারাবাজার সদর ইউনিয়নের সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মুহিবুর রহমান মানিক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শামীম আহমদ চৌধুরীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এই ঘটনার জেরে বুধবার (১০ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১ টায় পূর্ব মাছিমপুর গ্রামের আমরু মিয়ার ছেলে ইমরান আহমদ, শামীমসহ ২৫ থেকে ৩০ জন উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ও জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুল খালেকের ছেলে আবুল মিয়া উপর তার বাসার সামানে অতর্কিত হামলা চালায়।
এসময় ভাতিজাকে রক্ষা করতে গিয়ে দোয়ারাবাজার প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক আশিক মিয়ার উপর ও হামলা চালানো হয়। হামলায় যুবলীগ নেতা আবুল মিয়া ও সাংবাদিক আশিক মিয়া গুরুতর আহত হন। এ ঘটনার পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে সংঘর্ষ থামাতে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
গুরুতর আহতদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। সংঘর্ষে আহতরা হলেন জাবেদ মিয়া (২৫), জুয়েল মিয়া (২৮), রুস্তম আলী (৬০), আব্দুছ সাত্তার (৪৫), সেলিম (৪৫), সুজন মিয়া (২৬), আলী নুর (২০), আক্তার হোসেন (৩২), রোয়াব আলী (৩০), ছদরুল ইসলাম (৪০), জিয়াউল (২৫), গিয়াস উদ্দিন (৩৫), ধনাই মিয়া (৫০) প্রমুখ।
উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক আহত আবুল মিয়া বলেন, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আমার বাসার সামনে গেলে পূর্ব মাছিমপুর গ্রামের আমরু মিয়া দুই ছেলেসহ আগে থেকে ওৎপেতে থাকা ঈগল প্রতীকের ২৫ থেকে ৩০ জন সমর্থক অতর্কিতভাবে আমার উপর হামলা চালায় এবং আমরু মিয়ার ছেলে শামীম আমাকে লক্ষ্য করে তার হাতে থাকা পিস্তল থেকে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে থাকে।
এসময় আমার মোবাইল, পকেটে থাকা নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। আমাকে বাঁচাতে এলে আমার চাচা সাংবাদিক আশিক মিয়াকেও পেছন দিক থেকে হামলা চালিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয়। পরে পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
এএসপি (ছাতক-দোয়ারাবাজার সার্কেল) রণজয় চন্দ্র মল্লিক বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে আগে থেকেই উত্তেজনা চলছিল। বুধবার সকালে জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুল খালেকের ছেলে আবুল মিয়ার উপর হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় দুই পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দিলে পুলিশ ১০৪ রাউন্ড শর্ট গানের গুলি ছুঁড়ে। এসময় ৩ টি রামদা, একটি পরিত্যক্ত পিস্তলের গুলি ও বাঁশের লাটিসোটা উদ্ধার করা করা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।