দোয়ারাবাজার সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় এবছর রেকর্ড পরিমান সরিষার চাষ বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে, কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক।গত বছরের তুলনায় এ বছর দোয়ারাবাজার উপজেলায় ৩২ শতাংশ সরিষা চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানা যায়।বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের পার্শ্ববর্তী মাঠে সরিষা ফুলের হলুদের সমারোহ। অগ্রাহায়নের শীতল হাওয়ায় দোল খাচ্ছে হলুদ সরিষা ক্ষেত।
সরিষার রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত যেমন মাঠ, তেমনি বাম্পার ফলনের হাতছানিতে কৃষকের চোখেমুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের হাসি। যেন সরিষার হলুদ হাসিতে স্বপ্ন দেখছে কৃষক।মাঠজুড়ে ফুলের মৌ-মৌ গন্ধে মধু সংগ্রহ করতে দলে-দলে উড়ে আসছে মৌমাছি।
এতে করে সরিষার পাশাপাশি মধুও সংগ্রহ করছেন উদ্যেক্তাগণ। এ বছর প্রত্যেক সরিষা চাষী অধিক মুনাফা লাভ করবে বলেও মনে করছেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।বছরের পর বছর স্থানীয় জাত চাষ করে ফলন কম হওয়া ও উৎপাদনে সময় বেশি লাগায় কৃষকরা সরিষা চাষ কমিয়ে দিয়েছিল।ভোজ্য তেলের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সরকার ইতোমধ্যেই বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা গেছে। গত ৩ বছর ধরে মৌসুমের শুরুতে কৃষি বিভাগ অধিক ফলনশীল (উফশী) বিনা-৯,বারি-১৪ ও বারি-১৭ জাতের সরিষা চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে।উন্নত জাতের সরিষা চাষে ফলন বেশি হওয়ার পাশাপাশি সময়ও কম লাগে।এলাকার যে উচু জমিগুলো রয়েছে সেগুলোতে সরিষার ফসল ঘরে তুলার পরেও বোরো ফসল আবাদ করা যায়।তাই সরিষা চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে বলে জানা যায়।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৯ ইউনিয়নে গত বছর সরিষা চাষ করা হয়েছিল ৩৫০ হেক্টর জমিতে। এ বছর এই ৬ টি ইউনিয়নেই সরিষার চাষ করা হয়েছে ৪৯৭ হেক্টর জমিতে,যা গত বছরের তুলনায় ৩৫ শতাংশ বেশি।৩৫০ হেক্টর জনিতে সরিষার উপৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫০ মেট্রিকটন যার আনুমানিক বাজার মূল্য ধরা হয়েছে ২কোটি ৭০ লক্ষ টাকা। সরিষা চাষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে এবছর দোয়ারাবাজার উপজেলায় বিনামূল্যে কৃষককে সার ও উন্নত জাতের বীজ সরবরাহ করছেন বলেও জানান কৃষি অফিস।
উপজেলার সরিষা চাষ কারীরা জানান ফসলে পোকার আক্রমণ বা অন্যান্য প্রাকৃতিক কোন বিপর্যয় দেখা না দিলে ভাল ফলন পাবেন বলেও জানান চাষীরা। আগামী বছর আরও অধিক পরিমাণ জমিতে সরিষা চাষ করবেন বলেও দৈনিক ভোরের ডাক ও দৈনিক একাত্তরের কথা প্রতিনিধিকে জানান চাষীরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ মোঃ মহসিন বলেন, আমরা সরিষা চাষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারিভাবে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। নির্দিষ্ট সময়ে সরকারি প্রণোদনা কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে কৃষকদের দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে ভোজ্য তেল ফসলের আবাদ বৃদ্ধি করতে কৃষকদের সাথে মতবিনিময় সভা করা হয়েছে।কৃষকরা যতক্ষণ ফসল ঘরে না তুলছেন ততক্ষণ কৃষি বিভাগ তাদের পাশে থাকবে।এবছর কৃষকরা উন্নত জাতের সরিষা বীজ বিনা-৯,বারি-১৪, বারি-১৭ সরিষা বপনের ফলে অধিক লাভবান হবে বলেও জানান তিনি।