বোলিং ও ব্যাটিংয়ের কারণেই সৌম্যকে নেওয়া হয়েছে। সাকিব আল হাসানের বিকল্প সৌম্য নন। তবে অলরাউন্ডার হিসেবে দুই বিভাগে তিনি ‘গুরুত্বপূর্ণ’ অবদান রাখবেন, সৌম্যের কাছে এমন প্রত্যাশা বাংলাদেশের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের। সৌম্য সরকারের সমস্যা কী তিনি তা জানেন না।
বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের অনুপস্থিতিতে নিউজিল্যান্ড সফরের দলে ফেরানো হয় সৌম্যকে। বৃষ্টিবিঘ্নিত প্রথম ম্যাচে বিশেষজ্ঞ পঞ্চম বোলারের অনুপস্থিতিতে ৬ ওভারে ৬৩ রান দেন ডানহাতি মিডিয়াম পেসে, এরপর ইনিংস উদ্বোধনে নেমে ৪ বল খেলে কোনো রান না করেই ফিরে আসেন ড্রেসিংরুমে।
২০২২ সালে প্রায় এক বছরের বিরতি দিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে দলে ফিরেছিলেন সৌম্য, প্রথম খেলেছিলেন নিউজিল্যান্ডেই ত্রিদেশীয় সিরিজে। তবে বিশ্বকাপের পর বাদ পড়েন আবার, এরপর সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে দেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে দলে এসেছিলেন। যদিও বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাননি।
সীমিত ওভারে দুই সংস্করণ মিলিয়ে সর্বশেষ ৫ ম্যাচের ৪ ইনিংসে ৩ বারই আউট হয়েছেন শূন্য রানে। নেলসনে আগামীকাল ভোরে দ্বিতীয় ওয়ানডের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় সৌম্য প্রসঙ্গে হাথুরুসিংহে বলেন, ‘গত পাঁচ ম্যাচ? আমি জানি না। আমি তাকে এবার কেবল এক ম্যাচ দেখলাম। আমি জানি না, তার কী সমস্যা। সে তো ঘরোয়া ক্রিকেটে রান করছিল।’
ঘরোয়াতে সৌম্য যে অনেক রান করছিলেন, ব্যাপারটি ঠিক তেমন নয়। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সর্বশেষ মৌসুমে তার গড় ছিল ২৬.৬৩। ১টি করে শতক ও অর্ধশতকও করেছিলেন। সর্বশেষ বিপিএলে গড় ছিল ১৪.৫০। সর্বোচ্চ ছিল ৫৭। ৫০ ছাড়ানো স্কোর ওই একটাই। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে চলমান বিসিএলের প্রথম রাউন্ডের ম্যাচে দুই ইনিংস মিলিয়ে করেছেন ৪০ রান। জাতীয় লিগে অবশ্য একটু ভালো। ১১ ইনিংসে ৪টি অর্ধশতকসহ ৪৮.৮৮ গড়ে করেছিলেন ৪৩৬ রান।
সৌম্যকে নেওয়ার পেছনে তার বোলিং সামর্থ্যের ভূমিকার কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন হাথুরুসিংহে- ‘আমরা এমন একজন চাই, যে বোলিং ও ব্যাটিং করতে পারে। এখানে সাকিব আল হাসান নেই, বাংলাদেশ দল গত ১৭ বা ১৫ বছর ধরে সাকিবকে নিয়ে খেলে অভ্যস্ত। তাকে ছাড়া দলের ভারসাম্য ঠিক রাখা কঠিন। এজন্য সে (সৌম্য) অলরাউন্ডার হিসেবে আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’
প্রথম ম্যাচে কেন স্বীকৃত কোনো পঞ্চম বোলার ছাড়াই নেমেছিল, সৌম্যের ওপর নির্ভরশীলতার বাইরে এর পেছনে আরেকটি কারণও বলেছেন হাথুরুসিংহে- ‘গত ম্যাচেও রিশাদকে (লেগ স্পিনার) খেলানোর জন্য আমরা উদ্গ্রীব ছিলাম; কিন্তু এখানে আমাদের পরিসংখ্যান ভালো না, সব ম্যাচই হেরেছি। শুরুতে অনেক উইকেট পড়ে যায়। এ কারণে বাড়তি একজন ব্যাটার আমরা রাখতে চেয়েছি।’
তবে দুবার বৃষ্টি এসে তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়েছে বলে দাবি হাথুরুর- ‘ম্যাচ হার সব সময়ই হতাশার; কিন্তু আবহাওয়ার কারণে আমরা বেশি কিছু করতে পারিনি। আমাদের অনেক পরিকল্পনা বৃষ্টির কারণে বাধাগ্রস্ত হয়েছে দুবার। আমরা ভালো শুরু করেছিলাম, কিন্তু শেষে ভালো বোলিং করতে করিনি। আমরা কন্ডিশন কাজে লাগাচ্ছিলাম, কিন্তু দুবার বৃষ্টি বিরতির পর অধিনায়ক বোলিং সামলাতে চাপে পড়ে যায়। ১০ ওভার বাকি থাকতে তাদের হাতে ৮ উইকেট ছিল।’
ডানেডিনে আবহাওয়া প্রতিকূল থাকলেও নেলসনে বাংলাদেশকে স্বাগত জানিয়েছে রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া। প্রকৃতির পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেদের ভাগ্য বদলাবে বলেও আশা হাথুরুসিংহের- ‘এই উইকেট ভালো মনে হচ্ছে। ২০১৭ সালে যখন শেষ এসেছিলাম, দুটি ম্যাচ খেলেছিলাম। ২০১৫ বিশ্বকাপেও মনে পড়ে (উইকেট) বেশ ভালো ছিল ব্যাটিংয়ের জন্য। ভালো আউটফিল্ড দ্রুতগতির। বড় স্কোর আশা করছি।