জীবনযাপন:
হৃদরোগীদের জন্য শীতকাল খুব একটা সুখকর নয়। যার ফলাফলস্বরূপ হাসপাতালে হৃদরোগীদের ভর্তি লক্ষণীয়ভাবে বৃদ্ধি পায়। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, শীতকালে মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন, এনজিনা পেকটোরিস, এট্রিয়াল ও ভেন্ট্রিকুলার এরিদমিয়া, হার্ট ফেইলিওর, উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়।
শীতকালে হৃদরোগীদের সাবধানতা সম্পর্কে জানাচ্ছেন—
ডাক্তার, ইয়াছমিন আক্তার, সিলেট উইমেন্স মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।
ঠাণ্ডা আবহাওয়া, বিশেষত যখন তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামে, তখন দেহের তাপমাত্রা ঠিক রাখতে মানবদেহের বিপাক বৃদ্ধি পায়।
ফলে হৃদযন্ত্রের কাজ বৃদ্ধি পায়, যা আপনার হৃদস্পন্দন এবং রক্তচাপ বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। তা ছাড়া ঠাণ্ডায় রক্তনালি সংকুচিত হয় এবং হৃৎপিণ্ডকে রক্ত পাম্প করতে আরো কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। ঠাণ্ডায় রক্তে ফিব্রিনোজেন, ক্যাটাকোলামাইনের মতো কিছু প্রোটিন ও হরমোন বৃদ্ধি পাওয়ায় রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতাও বেড়ে যায়। পুরুষদের মধ্যে এই প্রবণতা অধিক।
কিছু পরোক্ষ কারণও হৃদরোগের আশঙ্কা ও জটিলতা বৃদ্ধি করে। যেমন—ঠাণ্ডাজনিত সর্দি-কাশি, ঘরে অবস্থান ও কম কায়িক শ্রম, অধিক ক্যালরিযুক্ত খাদ্য গ্রহণ ইত্যাদি।
করণীয়,
১, আপনার যদি হৃদরোগ বা উচ্চ রক্তচাপ (উচ্চ রক্তচাপের) মতো সমস্যা থাকে, তাহলে নিয়মিত চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চেকআপ করাবেন। সামান্য বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, অস্বস্তি বা বুক ধড়ফড় করাকে অবহেলা করবেন না।
২, অধিক কায়িক পরিশ্রম থেকে বিরত থাকবেন। তবে নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করবেন।
৩, ঠাণ্ডাজনিত রোগ এড়াতে গরম কাপড় ও মাস্ক ব্যবহার করবেন।
৪, ধূমপান পরিহার করবেন।
৫, অধিক ক্যালরি সমৃদ্ধ খাদ্য, যেমন—মিষ্টি, পিঠা, তেল, ঘি, লবণ যথাসম্ভব এড়িয়ে চলবেন।
প্রচুর পরিমাণে তাজা ফলমূল ও শাক-সবজি খাবেন। অতি ভোজন পরিহার করবেন। যথেষ্ট পরিমাণ পানি পান করুন।
৬, পুরুষ ও মহিলাদের হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলো জেনে নিন।
৭, মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ এড়িয়ে চলুন। রাতে ভালো ঘুম নিশ্চিত করুন।
৮, অতিরিক্ত গরম পোশাক পরা থেকে বিরত থাকুন এবং স্তরে স্তরে গরম কাপড় ব্যবহার করুন। যাতে গরম লাগলে আপনি একটি একটি করে পোশাক খুলে রাখতে পারেন। বেশি গরমও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।