Saturday, November 23, 2024
Homeইসলামযে সুরায় মুমিনদের বিজয়ের বার্তা দেওয়া হয়েছে

যে সুরায় মুমিনদের বিজয়ের বার্তা দেওয়া হয়েছে

 

ইসলামী জীবন:

ই.আ.খান,

পবিত্র কোরআনের ৪৮ নম্বর সুরার নাম আল-ফাতহ। সুরাটি মদিনায় অবতীর্ণ হয়েছে। মোট আয়াত ২৯। সুরার প্রথম শব্দ ফাতহ থেকে এর নামকরণ হয়েছে।

 

 

ফাতহ শব্দের অর্থ বিজয়। আল্লাহ তাআলা হুদাইবিয়ার সন্ধির মাধ্যমে রাসুল (সা.) ও মুসলমানদের বিজয় দান করেছেন। বেশির ভাগ আয়াতে ঐতিহাসিক সন্ধির ঘটনা ও সংশ্লিষ্ট অন্য বিষয় আলোচিত হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এই সুরার সংক্ষিপ্ত আলোচনা নিম্নরূপ :

সুরা ফাতহের শানে নুজুল,

 

ষষ্ঠ হিজরির জিলকদ মাসে রাসুল (সা.) ওমরাহ করার উদ্দেশে সাহাবায়ে কেরামের বিশাল জামাত নিয়ে মক্কার পথে যাত্রা করেন।

 

 

‌ মুশরিকরা পথে বাধা সৃষ্টি করে। ওমরাহ করার নিষেধাজ্ঞা ও সন্ধির প্রস্তাব করে। রাসুল (সা.) চুক্তিতে সম্মত হলেও সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ছিল। সাহল ইবনে হুনাইফ (রা.) বলেন, হুদাইবিয়ার দিন অর্থাৎ নবী করিম (সা.) এবং মুশরিকদের মধ্যে যে সন্ধি হয়েছিল আমরা তা দেখেছি।

যদি আমরা একে যুদ্ধ মনে করতাম, তাহলে অবশ্যই আমরা যুদ্ধ করতাম। এ সময় ওমর (রা.) রাসুল (সা.)-এর কাছে এলেন এবং বলেন, আমরা কি হকের ওপর নই? আর তারা কি বাতিলের ওপর নয়? আমাদের নিহত ব্যক্তিরা জান্নাতে আর তাদের নিহত ব্যক্তিরা জাহান্নামে যাবে না? তিনি বলেন, হ্যাঁ। তখন ওমর (রা.) বলেন, তাহলে কেন আমাদের দ্বিনের ব্যাপারে অবমাননাকর শর্ত আরোপ করা হবে এবং আমরা ফিরে যাব? অথচ আল্লাহ আমাদের এই সন্ধির ব্যাপারে কোনো নির্দেশ দেননি। তখন নবী (সা.) বলেন, এ খাত্তাবের পুত্র! আমি আল্লাহর রাসুল। আল্লাহ কখনো আমাকে ধ্বংস করবেন না।

ওমর (রা.) ক্ষুণ্ণ মনে ফিরে গেলেন। তিনি ধৈর্য ধারণ করতে পারলেন না। তারপর তিনি আবু বকর সিদ্দিক (রা.)-এর কাছে গেলেন। বলেন, হে আবু বকর! আমরা কি হকের ওপর নই এবং তারা কি বাতিলের ওপর নয়? তিনি বলেন, হে খাত্তাবের পুত্র! নিশ্চয়ই তিনি আল্লাহর রাসুল। আল্লাহ কখনো তাঁকে ধ্বংস করবেন না। এ সময় সুরা ফাতহ নাজিল হয়। (বুখারি, হাদিস : ৪৪৮৪ )

হুদাইবিয়ায় মহানবীর মুজিজা,

 

হুদাইবিয়ায় অবস্থানকালে রাসুল (সা.)-এর একটি আশ্চর্য মুজিজা প্রকাশ পায়। বারা ইবনে আজিব (রা.) বলেন, তোমরা মক্কা বিজয়কে বিজয়রূপে গণ্য করে থাকো, কিন্তু আমরা হুদাইবিয়ায় সংঘটিত বাইয়াতে রিজওয়ানকে বিজয় হিসেবে গণ্য করি। আমরা এক হাজার ৪০০ সাহাবি আল্লাহর রাসুলের সঙ্গে এই ঘটনাস্থলে ছিলাম। হুদাইবিয়া নামক একটি কূপ ছিল। আমরা ওই কূপ থেকে আমাদের প্রয়োজনমতো পানি নিতে শুরু করি। অল্পক্ষণ পরে ওই কূপের সব পানি শুকিয়ে যায়। এক ফোঁটা পানিও অবশিষ্ট ছিল না। কূপের পানি শুকিয়ে যাওয়ার ঘটনা শেষ পর্যন্ত রাসুলের কানেও পৌঁছে। তিনি কূপের কাছে এসে তার ওপর বসে পড়েন। অতঃপর এক বালতি পানি চেয়ে নিয়ে অজু করেন। এরপর তিনি কুলি করেন। তারপর দোয়া করেন এবং ওই পানি ওই কূপে ফেলে দেন। অল্পক্ষণ পর আমরা দেখলাম কূপটি সম্পূর্ণরূপে পানিতে ভরে গেছে। ওই পানি আমরা নিজেরা পান করলাম। আমাদের সাওয়ারি উটগুলোকে পান করালাম। নিজেদের প্রয়োজন পুরা করলাম এবং পাত্রগুলো পানিতে ভরে নিলাম। (ফাতহুল বারি : ৭/৫০৫)

 

সুরা ফাতহের গুরুত্ব ও ফজিলত,

 

সুরা ফাতহ ব্যক্তিজীবন এবং জাতীয় অনুষ্ঠানেও পাঠ করা যায়। আব্দুল্লাহ ইবনে মুগাফফাল (রা.) বলেন, নবী করিম (সা.) মক্কা বিজয়ের দিন সুরা ফাতহ সুমধুর কণ্ঠে পাঠ করেছেন । মুআবিয়া (রা.) বলেন, আমি ইচ্ছা করলে নবী কারিম (সা.)-এর কিরাত তোমাদের নকল করে শোনাতে পারি। (বুখারি : ৪৪৭৬।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments