বিশেষ প্রতিনিধি:
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের প্রতি সম্মান জানিয়ে নির্বাচনে প্রার্থী না হওয়ার ঘোষণা দিলেন সিলেট মহানগর জাতীয় পার্টির আহবায়ক নজরুল ইসলাম বাবুল।
নজরুল ইসলাম বাবুলের এই ত্যাগে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাতে বুধবার বিকালে হঠাৎ তার সিলেট গোটাটিকরস্থ ব্যবসায়িক কার্যালয়ে হাজির হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
কুশল বিনিময় করেন বাবুলের সঙ্গে, জানান ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের নজরুল ইসলাম বাবুল বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পরিবার একটি অভিজাত পরিবার। তার ভাই সাবেক অর্থমন্ত্রী মরহুম আবুল মাল আব্দুল মুহিত সিলেটের উন্নয়নের অনেক কিছু করেছেন। তিনিও অসামান্য অবদান রেখে চলেছেন সিলেটের জন্য। এ অবস্থায় সিলেট-১ আসনে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা আমার পক্ষে উচিত মনে করছি না। তাই দলীয় সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করেই আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি। এতে যদি দল আমাকে বহিষ্কার করে তবু আমার কিছু যায় আসে না। কারণ আমি পদের লোভে রাজনীতি করি না।
এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, এই মানুষটির সঙ্গে (বাবুল) আমার কোনো ব্যক্তিগত সখ্য নেই। নির্বাচন বিষয়ে তার সঙ্গে কোনো আলাপও হয়নি; কিন্তু আমার জন্য তিনি দলীয় সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে সিলেট-১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না। তাই আমার মনে হলো তার সঙ্গে একবার দেখা করে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানানো দরকার।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সিলেটে একটি রাজনৈতিক ঐতিহ্য রয়েছে। এখানে ভিন্ন মত-দলকে আমরা কখনো অসম্মান করি না। এটাকে ধরে রাখতে চাই। আমাদের চিন্তাধারা ভিন্নতা থাকতে পারে তবে আমরা একই শহরের মানুষ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, তিনি (বাবুল) সদ্য অনুষ্ঠিত সিসিক নির্বাচনে মেয়র পদে দাঁড়িয়ে নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে প্রায় ৬০ হাজার ভোট পেয়েছেন। সেটি কম কথা নয়। তিনি চাইলেই সিলেট-১ আসনে আমার বিরুদ্ধে লড়তে পারতেন কিন্তু আমার জন্য সরে দাঁড়িয়েছেন। তার এই আত্মত্যাগ সিলেটের সম্প্রীতির রাজনীতির একটি অনন্য উদাহরণ।
গত সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সিলেট মহানগর জাতীয় পার্টির আহবায়ক নজরুল ইসলাম বাবুল। এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি সিলেট-৩ আসনে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন; কিন্তু দল তাকে সিলেট-১ আসনে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে। এতে তিনি দলের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দলের এ সিদ্ধান্ত না মেনে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের প্রতি সম্মান জানিয়ে অবশেষে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন।