বিশেষ প্রতিনিধি:
১৯৮০ সালে ভারতীয় উপমহাদেশের বিখ্যাত দ্বিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দারুল উলুম দেওবন্দের শতবার্ষিকী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তাতে অংশ নেন আরব ও আজমে সমাদৃত ইসলামী চিন্তাবিদ সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভি (রহ.)। তিনি সম্মেলনের একাধিক অধিবেশন ও সেমিনারে সভাপতিত্বও করেন। সেখানে দেওয়া এক ভাষণে তিনি দেওবন্দি মতাদর্শের অনুসারী আলেমদের চারটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেন।
তা হলো-
১. যারা বিরোধপূর্ণ বিষয় এড়িয়ে চলে : দারুল উলুম দেওবন্দের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো, তারা বিরোধপূর্ণ বিষয়গুলোর পরিবর্তে তাওহিদ ও সুন্নতের প্রতি মনোযোগ আবদ্ধ রাখেন। এই উত্তরাধিকার তারা শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভি (রহ.), শাহ ইসমাইল শহীদ (রহ.) ও সাইয়েদ আহমদ শহীদ (রহ.)-এর মাধ্যমে লাভ করেছেন। এবং এখনো পরম যত্নে আগলে রেখেছেন।
২. যারা সুন্নাহের অনুসরণী : তাদের ভেতর নবীজি (সা.)-এর সুন্নাহর অনুসরণের অনুপ্রেরণা ও চিন্তা সর্বদা সক্রিয় থাকে।
৩. যারা আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক রাখে : আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলা, সর্বদা তাঁর জিকির ও স্মরণে থাকা এবং নিজেকে ঈমান ও ইহতিসাব (আত্মপর্যালোচনা) দেওবন্দি আলেমদের গৌরব করার মতো একটি বৈশিষ্ট্য।
৪. যারা দ্বিন প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে : দারুল উলুম দেওবন্দের উত্তরসূরিরা আল্লাহর দ্বিনকে বিজয়ী করতে সর্বদা প্রয়োজনীয় চেষ্টা-সংগ্রাম করে যায়।
এগুলোই দেওবন্দি মতাদর্শের প্রধান উপাদান। এই চার বৈশিষ্ট্য যাদের ভেতর পাওয়া যাবে, তারাই প্রকৃতপক্ষে দেওবন্দের অনুসারী।
যদি কারো ভেতর এই চার উপাদানের কোনোটির অপূর্ণতা থাকে, তবে সে পুরোপুরি দেওবন্দি মতাদর্শের অনুসারী নয়। দেওবন্দি মতাদর্শের অনুসারী হওয়ার জন্য মাদরাসায় পড়া অপরিহার্য নয়, বরং একজন সাধারণ মানুষ যদি কোরআন ও সুন্নাহ মেনে চলে, রাসুল (সা.)-এর সুন্নত জীবনে ধারণ করে, অন্তরে আল্লাহর স্মরণ জাগ্রত রাখে এবং সাধ্যানুসারে আল্লাহর দ্বিনকে বিজয়ীয় করার চেষ্টা করে তারাও দেওবন্দি কাফেলার সদস্য বলে গণ্য হবে।