Sunday, November 24, 2024
Homeবিনোদনলাইফস্টাইললজ্জাশীল লজ্জাবতী গাছ লজ্জা পায় কেন?

লজ্জাশীল লজ্জাবতী গাছ লজ্জা পায় কেন?

লাইফস্টাইল:

 

 

মানুষ কোনো কারণে খুব বেশি লজ্জা পেলে মাথা নিচু করে ফেলে। মানুষেরে মতোই গাছেরও কী লজ্জা আছে? লজ্জাবতীর আচরণ দেখে তেমনটাই মনে হয়।

 

লজ্জাবতী গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ, স্পর্শকাতর লতাবিশেষ। লজ্জাবতী গাছের পাতা ছুঁয়ে দিলে পাতা সংকুচিত করে ফেলে, নিচের দিকে নুয়ে পড়ে।

 

 

 

এর মানে কী? তাহলে কি এ গাছেরও অনুভূতি আছে ?

 

বিখ্যাত বাঙালি বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু মনে করতেন, গাছেরও অনুভূতি রয়েছে। মানুষ যেমন আগুনের ছেঁকা লাগলে বা গরম অনুভব করলে হাত সরিয়ে নেয় কিংবা চোখে কোনো ক্ষুদ্র বস্তু বা বালি পড়লে পানি আসে; এসব প্রমাণ করে মানুষের অনুভূতি রয়েছে। জগদীশচন্দ্র বসু, গাছের অনুভূতি প্রমাণ করার জন্য ক্রেস্কোগ্রাফ নামের একটি যন্ত্র তৈরি করেন। যা দিয়ে গাছের অতি সূক্ষ্ম বৃদ্ধি থেকে শুরু করে নড়াচড়ার — সব কিছুই বোঝা যেত।

 

তিনি যন্ত্রটিতে একটা গাছকে বেঁধে তার পাতায় বিষাক্ত ব্রোমাইড দ্রবণ ঢেলে দেন। এতে দেখা যায়, যন্ত্রটির কাঁটা নড়তে শুরু করেছে, অনেকটাই জ্যান্ত প্রাণীকে যন্ত্রণা দিলে কষ্টে যেমন কাতরায়, ঠিক তেমন করে। এর মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করার চেষ্টা করেন, গাছেরও অনুভূতি রয়েছে। তবে এখন জানা গেছে, গাছের ভেতরে অনুভূতি তৈরি বা জমা হওয়ার মতো সিস্টেম নেই।

 

 

তাহলে লজ্জাবতী গাছের পাতা স্পর্শ পেলে নুয়ে পড়ে কেন?

 

লজ্জাবতীর ছোট ছোট পাতাগুলো আলো পেলে খুলে যায়, অন্ধকারে বন্ধ হয়। স্পর্শ করলে গুটিয়ে যায়।

 

লজ্জাবতী গাছের পাতা হঠাৎ স্পর্শ করলে একটা তড়িৎ প্রবাহ গাছের দেহে ছড়িয়ে পড়ে। অ্যাসিটাইল কোলিন নামের এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থের মাধ্যমে এই তড়িৎ প্রবাহিত হয়। রাসায়নিক পদার্থটি খুব দ্রুত এক কোষ থেকে আরেক কোষে যেতে পারে।

 

লজ্জাবতী গাছের দিকে ভালোভাবে লক্ষ করলে বোঝা যায়, গাছের পাতার গোড়া একটু ফোলা। এর ভেতরে রয়েছে অনেক কোষ, কোষগুলো পানি এবং খনিজ পদার্থে পরিপূর্ণ থাকে। রাসায়নিক পদার্থটির প্রভাবে পাতার গোড়ায় ফোলা কোষ থেকে খনিজ লবণসহ পানিও বের হয়ে আসে। পানি বের হলে কোষগুলো চুপসে যায়। চুপসানো কোষে পানির চাপ কম থাকে, তাই লজ্জাবতীপাতার ডাঁটা বা কাণ্ড আর সোজা থাকতে পারে না । কাণ্ড নিচের দিকে নুয়ে পড়ে। লজ্জাবতীর যে পাতা স্পর্শ করা হয়, ব্যাপারটা শুধু তার মধ্যে দেখা যায় না, ধীরে ধীরে পাতাটার ওপরে-নিচে সব পাতায়ই ছড়িয়ে পড়ে এবং একইভাবে সব পাতা নুয়ে পড়ে। কাণ্ড, পাতাগুলো শুধু নুয়ে পড়ে না, দুটো পাতার মধ্যবর্তী ফাঁকা স্থানও জোড়া লেগে বন্ধ হয়ে যায়।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments