Friday, November 8, 2024
Homeইসলামনিজের গুনাহ মাফ হবে অন্যকে ক্ষমা করলে

নিজের গুনাহ মাফ হবে অন্যকে ক্ষমা করলে

 

ইসলামী জীবনঃ

ক্ষমা শব্দের অর্থ অপরাধ মার্জনা, সহিষ্ণুতা, সহনশীলতা। অন্যের অপরাধ মাফ করে দেওয়ার নাম ক্ষমা। ক্রোধ হজম করে প্রতিশোধ গ্রহণ না করাই ক্ষমা ও সহিষ্ণুতা। ব্যক্তিগত ও সামাজিক বহু ক্ষেত্রে ক্ষমা ও সহিষ্ণুতার পথ অবলম্বন করলে পরিবার ও সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকে।

 

 

অন্যকে ক্ষমা করার দ্বারা নিজের পাপ মোচন হয়। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘আর যদি তোমরা তাদের মার্জনা করো, দোষ-ত্রুটি উপেক্ষা করো এবং ক্ষমা করো, তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াবান।’ (সুরা : তাগাবুন, আয়াত : ১৪)

 

আল্লাহ তাআলা আরো বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা ঐশ্বর্য ও প্রাচুর্যের অধিকারী, তারা যেন এমন শপথ না করে যে তারা আত্মীয়-স্বজনকে, অভাবগ্রস্তদের এবং আল্লাহর পথে যারা গৃহত্যাগ করেছে, তাদের কিছুই দেবে না। তারা যেন তাদের মার্জনা করে ও দোষ-ত্রুটি এড়িয়ে যায়।

 

 

তোমরা কি চাও না যে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করেন? বস্তুত আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়াবান।’ (সুরা : নূর, আয়াত : ২২)

ইসলামের প্রথম খলিফা আবু বকর (রা.) অত্যন্ত ক্ষমাশীল ছিলেন। যখন তিনি মিসতা বিন আসাসা (রা.)-এর জন্য কিছুই ব্যয় করবেন না বলে কসম করেন, তখন আলোচ্য আয়াত নাজিল হয়। কারণ মিসতা আয়েশা (রা.)-এর বিরুদ্ধে অপবাদ রটনাকারীদের সঙ্গে শরিক ছিলেন এবং এ জন্য তাকে অপবাদের শাস্তিস্বরূপ ৮০টি বেত্রাঘাত করা হয়।

 

তিনি তাওবা করেন এবং আবু বকর (রা.)-এর কাছে ক্ষমা চান। কিন্তু আবু বকর (রা.) তাকে ক্ষমা না করে তাকে কিছুই দেবেন না বলে কসম করে বলেন, ‘আল্লাহর কসম! আয়েশার বিরুদ্ধে মিসতা যে অপবাদ দিয়েছে তাতে আমি মিসতার জন্য কিছুই ব্যয় করব না। তখন আল্লাহ তাআলা আবু বকর (রা.)-কে ক্ষমা ও সহিষ্ণুতার প্রতি উৎসাহিত করে উল্লিখিত আয়াত নাজিল করেন। ফলে আবু বকর (রা.) বলেন, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই আমি চাই যে আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করুন। অতঃপর তিনি কসম ভঙ্গ করেন এবং মিসতার কাছে গিয়ে তাকে আগের মতো খরচ দেওয়া শুরু করেন।

উল্লেখ্য যে মিসতা (রা.) ছিলেন মুহাজির ও মিসকিন সাহাবিদের অন্যতম। অভাবের কারণে আবু বকর (রা.) তাঁর সংসারের ব্যয় নির্বাহ করতেন। (ইবনে কাসির : ৬/৩১)

 

ক্ষমাকারী ব্যক্তি মহান আল্লাহর অফুরন্ত ক্ষমা লাভে ধন্য হয়। যে অন্যকে ক্ষমা করে সে মহান আল্লাহ ও মানুষের ভালোবাসা পায়। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘যদি তোমরা কোনো সৎকর্ম প্রকাশ করো বা গোপন করো কিংবা কোনো অপরাধ মার্জনা করো, তাহলে আল্লাহ নিশ্চয়ই মার্জনাকারী ও সর্বশক্তিমান।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ১৪৯)

 

মানুষের ভুল ক্ষমা করার দ্বারা পরকালে পার যাওয়া যাবে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের ভুল ক্ষমা করবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার ভুল ক্ষমা করবেন। (ইবন মাজাহ, হাদিস : ২১৯৯)।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments