দোয়ারাবাজার সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: আবু সালেহ মোঃ আলা উদ্দিন ।
দোয়ারাবাজার মডেল মসজিদে পেশ ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেম নিয়োগের সাম্প্রতিক বিজ্ঞপ্তিকে ঘিরে এলাকায় তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে পেশ ইমাম পদে বয়সসীমার পরিবর্তন ও অসামঞ্জস্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আগ্রহী প্রার্থীরা। অভিযোগ উঠেছে—বয়সসীমা ইচ্ছাকৃতভাবে পরিবর্তন করে নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে সুবিধা দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে।
জানা যায়, একই জেলার জগন্নাথপুর মডেল মসজিদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে পেশ ইমামের বয়সসীমা অনূর্ধ্ব ৫৫ বছর নির্ধারণ করা হলেও দোয়ারাবাজার মডেল মসজিদের বিজ্ঞপ্তিতে তা হঠাৎ করে ৪৫ বছর করা হয়েছে। বয়সের এমন অস্বাভাবিক পার্থক্য নিয়োগ প্রক্রিয়াকে ঘিরে সন্দেহ আরও ঘনীভূত করেছে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অরূপ রতন সিংহ বলেন,
“নিয়োগ সংক্রান্ত দায়িত্ব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পপ কর্মকর্তার ওপর দেওয়া হয়েছে। তিনি বিষয়টি ভালো জানেন।”
কিন্তু নিয়োগ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পপ কর্মকর্তা আবু সালেহীন খান জানান,
“বয়সসীমা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত উপজেলা ইফা ফিল্ড সুপারভাইজারের জানা আছে।”
অন্যদিকে উপজেলা ইফা ফিল্ড সুপারভাইজার মাওলানা জয়নাল আবেদীন বলেন,
“বয়সসীমা উপজেলা নিয়োগ কমিটির আলোচনার ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবে বয়সসীমা নির্ধারণের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।”
এদিকে আগ্রহী বহু আবেদনকারী অভিযোগ করে জানান, বিজ্ঞপ্তির বয়সসীমা এবং অন্যান্য শর্ত এমনভাবে সাজানো হয়েছে, যা নির্দিষ্ট কিছু প্রার্থীকে সুবিধা দিতে পারে। তাদের ভাষায়,
“এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং স্বচ্ছতার পরিপন্থী সিদ্ধান্ত ছাড়া আর কিছু নয়।”
সুনামগঞ্জের অন্যান্য মডেল মসজিদগুলোর বিজ্ঞপ্তিতে যেখানে পেশ ইমামের বয়সসীমা ২৫–৩৫ বছর বা অনূর্ধ্ব ৫৫ বছর ছিল, সেখানে দোয়ারাবাজারের বিজ্ঞপ্তিতে অস্পষ্ট, পরস্পরবিরোধী ও পরিবর্তিত শর্ত স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র পরিচালনা নীতিমালা–২০২১ অনুযায়ী বয়সসীমা ও অন্যান্য শর্ত নির্ধারিত হওয়ার কথা। কিন্তু দোয়ারাবাজারের বিজ্ঞপ্তি সেই নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় প্রশাসনিক স্বচ্ছতার প্রশ্ন উঠছে।
স্থানীয় সচেতন মহল ও আগ্রহী আবেদনকারীরা অভিযোগ করে বলেছেন,
“বয়সসীমার এই হঠাৎ পরিবর্তন নির্দিষ্ট কাউকে সুযোগ করে দেওয়ার ইঙ্গিত দেয়। এ বিষয়ে স্বচ্ছ তদন্ত হওয়া জরুরি।”
ঘটনার পর এলাকায় ক্ষোভ বাড়ছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দ্রুত তদন্ত ও প্রশাসনের কার্যকর হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তাদের প্রত্যাশা—
ন্যায়সঙ্গত যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থীদের অধিকার নিশ্চিত করা হোক।
