মতিউর রহমান গোয়াইনঘাট (সিলেট) প্রতিনিধি:
প্রশাসনিক কাজ, দাপ্তরিক সভা কিংবা উন্নয়ন প্রকল্প এসবই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) প্রতিদিনের চিত্র। কিন্তু এবার সেই পরিচিত দৃশ্য ভেঙে ভিন্ন রূপে হাজির হলেন সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার রতন কুমার অধিকারী। তিনি হঠাৎই শ্রেণিকক্ষে গিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য হয়ে গেলেন শিক্ষক।
গতকাল রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) উপজেলার পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রাম বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আকস্মিক পরিদর্শনে গেলে ইউএনও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান করেন। এ সময় তিনি অন্যান্য শ্রেণিকক্ষও ঘুরে দেখেন এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রাণবন্ত আলোচনা করেন।
শিশুদের চোখে ছিলো এ যেন অন্যরকম ক্লাস:
শিক্ষার্থীরা জানায়, ইউএনও স্যার ক্লাসে এসে নানা প্রশ্ন করেছেন, মজার মজার গল্প বলেছেন এবং পড়া মনে রাখার সহজ কৌশল শিখিয়ে দিয়েছেন। শুধু পাঠদানই নয়-খাওয়া, ঘুম, পড়াশোনা, খেলাধুলা ও ইবাদতের বিষয়ে অভিভাবকের মতো পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সালমা আক্তার বলেন, “ইউএনও স্যার আমাদের বিদ্যালয়ে এসে দ্বিতীয় শ্রেণির শিশুদের পাঠদান করেছেন। শুধু শিক্ষার্থীরাই নয়, আমরা শিক্ষকরা তাঁর কাছ থেকে শিক্ষা বিষয়ে নতুন অনেক দিকনির্দেশনা পেয়েছি।” খুব ভালো লাগলো।
ইউএনওর অনুভূতি:
নিজ অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে রতন কুমার অধিকারী বলেন, বাচ্চাদের পড়াতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। শিক্ষাজ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়ার মতো আনন্দ আর কিছুতেই নেই। এতে শিক্ষার্থীদের শেখানোও হয়, আবার সরেজমিনে বিদ্যালয়ের সমস্যা চিহ্নিত করাও যায়।
তিনি আরও বলেন, উন্নত ও সমৃদ্ধ জাতি গঠনে শিক্ষার বিকল্প নেই। সরকারি কর্মকর্তা ও দেশের একজন নাগরিক হিসেবে শিক্ষা খাতে অবদান রাখতে পারা আমার জন্য গর্বের বিষয়।
এ সময় সীমান্ত এলাকায় এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলায় স্থানীয় যুব সমাজের প্রশংসা করেন এবং বিদ্যালয়টি পরিচালনায় ও অবকাঠামো উন্নয়নে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাসও দেন তিনি।
ছবি ক্যাপশন: গুচ্ছগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান করছেন ইউএনও রতন কুমার অধিকারী।