শাবিপ্রবি প্রতিনিধি,
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) পূর্ব ঘোষিত সময় অনুযায়ী প্রকৌশলী অধিকার রক্ষায় বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ জুন) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে এ সমাবেশ হয়। এতে সিভিল, আইপিই, মেক্যানিক্যাল ও ইইইসহ বিভিন্ন প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। শিক্ষার্থীদের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে শিক্ষকরাও এতে উপস্থিত ছিলেন।
সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, ডিপ্লোমা-ভিত্তিক সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারদের ৯ম গ্রেড পদে অতিরিক্ত ও অনিয়মিতভাবে পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে। এতে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য সংশ্লিষ্ট এন্ট্রি-লেভেল চাকরির সুযোগ সংকুচিত হচ্ছে। পাশাপাশি অভিযোগ রয়েছে, ডিপ্লোমাধারীরা ১০ম গ্রেডের টেকনিক্যাল পদে আবেদন করতে পারলেও বিএসসি ডিগ্রিধারীদের জন্য সুযোগ সীমিত রাখা হচ্ছে, যা বৈষম্য সৃষ্টি করছে।
এই প্রেক্ষাপটে শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি উত্থাপন করেন,
১.পরীক্ষার মাধ্যমে ৯ম গ্রেডে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়োগ
২.১০ম গ্রেড উন্মুক্তকরণ
৩.“বিএসসি ছাড়া ইঞ্জিনিয়ার নয়” নীতি বাস্তবায়ন।
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ উপস্থিত ছিলেন। তারা শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে সবসময় পাশে থাকার আশ্বাস দেন। সিভিল, আইপিই, মেক্যানিক্যাল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এবং ইইই বিভাগের শিক্ষকসহ মোট ১২ জন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষকদের বক্তব্য শেষে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে গোলচত্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক হয়ে নিকটস্থ পিডিবি অফিসের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে নির্বাহী প্রকৌশলী ও কয়েকজন সহকারী প্রকৌশলীর সাথে দেখা করে তারা নিজেদের দাবি উপস্থাপন করেন এবং বৈষম্যের প্রমাণসহ কিছু নথি ও লিফলেট প্রদান করেন।
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান ড. নুরুজ্জামান সাকিব বলেন, “ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা সহজেই বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের পদে চাকরি ও প্রমোশন পাচ্ছে। নামমাত্র পড়াশোনা করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নিয়ে তারা ৯ম গ্রেডের পদে দখল করে নিচ্ছে। ৯ম গ্রেডের নিয়োগ বা প্রমোশন অবশ্যই পরীক্ষার মাধ্যমে হতে হবে, শুধু সার্টিফিকেট দিয়ে নয়।”
প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলন, শাবিপ্রবির আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মাছুদ বলেন, “সন্ত্রাসী কায়দায় ১৩ম গ্রেডের ব্লক সুপারভাইজার, টেকনিশিয়ান বা মেকানিক থেকে ১০ম গ্রেড ১০০% কোটায় দখল করা হচ্ছে। আবার বিসিএস ক্যাডারের মতো মর্যাদাপূর্ণ ৯ম গ্রেডের প্রথম শ্রেণির পদও ৬০-৭০% কিংবা তারও বেশি ডিপ্লোমা কোটায় দখল করা হচ্ছে। অথচ যাদের ১৫ম গ্রেডের আবেদনের যোগ্যতা নেই, তারা কোটার জোরে ৯ম ও ১০ম গ্রেডে প্রবেশ করছে।”
শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দিয়েছেন, তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। প্রয়োজনে তারা সারা দেশের প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের একত্রিত করে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।