স্বাস্থ্যসেবা প্রতিদিন,
বর্ষাকালে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পায়। এতে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েন। কারণ তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে থাকে। তাই বর্ষাকালে সুস্থ থাকতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা, সুষম খাবারের পাশাপাশি মশার উপদ্রব থেকে বাঁচা প্রয়োজন।
বর্ষাকালে বিভিন্ন রোগ যেমন জ্বর, সর্দি, কাশি, কলেরা, চিকনগুনিয়া, টাইফয়েড, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু ইত্যাদি হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই, এই সময় অসুস্থ বোধ করলে বা জ্বর, পেট খারাপ, শরীর ব্যথা কিংবা কাশি হলে উপেক্ষা করা উচিত হবে না। প্রয়োজন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সতর্কতা অবলম্বন করা।
আসুন জেনে নিন, বর্ষায় সুস্থ থাকার কিছু নিয়ম:
১.বাড়ির আশপাশে জমে থাকা পানি পরিষ্কার করুন,
মশা ডেঙ্গু এবং ম্যালেরিয়ার মতো রোগ ছড়ায়। এ ধরণের মশা স্বচ্ছপানিতে বংশবৃদ্ধি করে। তাই বাড়ির কাছে ফুলের টব, পুরানো টায়ার বা খোলা পাত্রে যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখুন। এ এছাড়া নিয়মিত পানির ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করতে হবে।
২. মশা নিরোধক ব্যবহার করুন,
বর্ষাকালে মশা থেকে অনেক রোগ শরীরে বাসা বাধে। তাই মশা নিরোধক প্রয়োগ করুন। বিশেষ করে সন্ধ্যা ও রাতে। রাতে মশারির নিচে ঘুমানোর অভ্যাস করুন। এতে মশাবাহিত রোগের ঝুঁকি কমবে।
৩. ফিল্টার করা পানি পান করুন,
কলেরা এবং টাইফয়েডের মতো পানিবাহিত রোগ বর্ষাকালে ছড়ায়। তাই বিশুদ্ধ পানি পান করুন। এ ছাড়া বাইরে গেলেও বোতলজাত পানি পান করুন। এ ছাড়া ফিল্টারের পানি আর না হয় পানি ফুটিয়ে পান করুন।
৪.সতেজ ও ঘরের রান্না করা খাবার খান,
বর্ষাকালে বাইরের রাস্তার খাবার খাবেন না। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়বে। তাই ঘরে তৈরি করা খাবার এবং সতেজ খাবার খান এবং রান্না করার আগে শাকসবজি অবশ্যই ভালো করে ধুয়ে নিন।
৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করুন,
সুস্থ থাকতে হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। তাই আপনার খাদ্যতালিকায় আদা, রসুন, আমলকী, তুলসী, কমলা, লেবুর মতো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী খাবার রাখুন। এ ছাড়া ভেষজ চা, স্যুপ খেতে পারেন। এসব পানীয় আপনার শরীরকে বিভিন্ন সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করবে।
৬. ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন,
ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মানে ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা এবং সুস্থ থাকার জন্য কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলা। তাই প্রতিদিন নিয়মিত গোসল করুন, দাঁত মাজুন, নখ কাটুন, পরিষ্কার জামাকাপড় পরিধান করুন, হাত ধুয়ে নিন, বিশেষ করে খাওয়া বা রান্না করার আগে।
৭. আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার রাখুন,
আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার এবং শুষ্ক রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মাধ্যমে রোগ-জীবাণু ছড়ায়। স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পায়। তাই জুতা ও কাপড় শুষ্ক রাখুন এবং সংক্রমণ এড়াতে নিয়মিত ঘরের মেঝে জীবাণুমুক্ত রাখুন।
৮. বৃষ্টিতে ভিজবে না,
বৃষ্টি উপভোগ্য হলেও, বৃষ্টিতে ভিজলে শরীরের তাপমাত্রা কমে যেতে পারে। এতে ঠান্ডার সমস্যা বাড়তে পারে। তাই বৃষ্টিতে না ভেজার জন্য ছাতা, রেইনকোট বা রাস্তার ছাউনির আশ্রয় নিতে পারেন।