Thursday, July 3, 2025
Homeবিনোদনলাইফস্টাইলমাথাব্যথার যত কারণ

মাথাব্যথার যত কারণ

স্বাস্থ্যসেবা প্রতিদিন,

 

যেসব কারণে একজন মানুষের কর্মক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তার মধ্যে অন্যতম একটি মাথাব্যথা। স্নায়ুরোগের মধ্যেও মাথাব্যথার হার সবচেয়ে বেশি। মাথাব্যথার রোগীদের শতকরা প্রায় ৭০ জনের হয় ‘টেনশন টাইপ হেডেক’। এ ছাড়া ১১ শতাংশের ‘মাইগ্রেন’ বা আধকপালি মাথাব্যথা এবং প্রায় ৩ শতাংশের ‘ক্রনিক ডেইলি হেডেক’ বা দীর্ঘস্থায়ী মাথাব্যথা হয়।

 

মাথাব্যথা প্রধানত দুই প্রকার। প্রথমত, প্রাইমারি হেডেক, যেমন মাইগ্রেন, টেনশন টাইপ হেডেক, ক্লাস্টার হেডেক ইত্যাদি। দ্বিতীয়ত, সেকেন্ডারি হেডেক, যেমন সাইনুসাইটিস, মাসটয়ডাইটিস, গ্লুকোমা, স্ট্রোক, আঘাতজনিত, মস্তিষ্কের টিউমার ইত্যাদি।

 

মাইগ্রেন,

পুরুষের তুলনায় নারীদের মাইগ্রেন হয় বেশি। কৈশোর থেকে মাইগ্রেনের লক্ষণ দেখা দেয় এবং ৪০-৫০ বছর বয়স পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এতে মাথার যেকোনো এক পাশে ব্যথা হয়। একবার এক পাশে হলে পরবর্তীবার অন্য পাশে ব্যথা হতে পারে। ব্যথা ৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। রক্তনালি বা শিরা টনটন করছে বলে মনে হয়। ব্যথা অত্যন্ত তীব্র হয় এবং এ সময় কোনো কাজ করা যায় না। আলো বা শব্দে ব্যথার তীব্রতা বাড়ে। বমিভাব বা বমি হতে পারে। ব্যথা শুরুর আগে চোখের সামনে আলোর নাচানাচি, আঁকাবাঁকা লাইন ইত্যাদি দেখে রোগী মাইগ্রেন যে শুরু হয়েছে তা বুঝতে পারে। অন্ধকার ঘরে শুয়ে থাকলে ব্যথার তীব্রতা কমে।

 

টেনশন টাইপ হেডেক,

এটিও মাইগ্রেনের মতো কৈশোরে শুরু হয় এবং বেশি হয় নারীদের। মাথার মাংসপেশির সংকোচনের কারণে এই মাথাব্যথা হয়। এর লক্ষণ হলো মাথাজুড়ে চাপ-চাপ বা ব্যান্ডের মতো ব্যথা অনুভূত হওয়া। মাইগ্রেনের মতো ব্যথা ততটা তীব্র নয়। রোগী ব্যথা নিয়ে সব ধরনের কাজ করতে পারেন; বরং কাজের সময় ব্যথা কম অনুভূত হয়। কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক দিন পর্যন্ত থাকতে পারে এই ব্যথা। দুশ্চিন্তা, পারিবারিক বা পেশাগত মানসিক চাপের সঙ্গে এ ধরনের মাথাব্যথার সম্পর্ক আছে।

 

ক্লাস্টার হেডেক,

এ ধরনের মাথাব্যথা হয় কম। পুরুষদের এটি বেশি হয়। এটি ক্ষণস্থায়ী কিন্তু বারবার হয়। অত্যন্ত তীব্র ব্যথা, চোখের চারপাশে বা পেছনে ব্যথা হয়। চোখ লাল হয়ে যায় এবং পানি পড়ে। চোখের ওপরের পাতা পড়ে যেতে পারে। প্রতিদিন একই সময়ে বা দিনে কয়েকবার ব্যথা হয় এবং কয়েক সপ্তাহব্যাপী স্থায়ী হয়। এরপর ব্যথা চলে যায় এবং কয়েক মাস পর আবার ব্যথা শুরু হয়।

 

সেকেন্ডারি হেডেক,

বিভিন্ন রোগের কারণে আমাদের মাথাব্যথা হতে পারে। যেমন সংক্রমণ (টাইফয়েড, ভাইরাস জ্বর) মস্তিষ্কের আবরণী প্রদাহ (মেনিনজাইটিস), সাইনুসাইটিস, মাসটয়েডাইটিস, মস্তিষ্কের টিউমার, রক্তক্ষরণ বা স্ট্রোক ইত্যাদি।

 

রোগনির্ণয় ও চিকিৎসা,

মাথাব্যথার কারণ নির্ণয় করতে পারলে চিকিৎসা সহজ। প্রাইমারি হেডেকের চিকিৎসা দুই স্তরের। প্রথমত, অ্যাবরটিভ চিকিৎসা বা মাথাব্যথার তাৎক্ষণিক নিরাময়। এ জন্য বিভিন্ন বেদনানাশক ওষুধ সেবন করা যায়। আবার অতিরিক্ত বেদনানাশক ওষুধ সেবনও মাথাব্যথার কারণ হতে পারে, যাকে মেডিসিন ওভার ইউজ হেডেক বলা হয়। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। দ্বিতীয়ত, প্রোফাইলেকটিক চিকিৎসা। বারবার যেন মাথাব্যথা না হয় এবং ব্যথার তীব্রতা যেন কম থাকে—এ জন্য চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খেতে হবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments