লাইফস্টাইল প্রতিবেদন,
কম বয়স বা পঁয়তাল্লিশের আগে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার হার কম হলেও এখন আমাদের জীবনযাত্রা, পরিবেশের পরিবর্তন ও কিছু জেনেটিক কারণে কম বয়সে হার্ট অ্যাটাক দিন দিন বাড়ছে।
কয়েক দিন আগে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে মাত্র ২৩ বছরের এক ছাত্র এসেছেন, বুকে ব্যথা নিয়ে। ইসিজি করে দেখা গেল হার্ট অ্যাটাক। মা–বাবা কোনোভাবেই মানতে পারছেন না, এত অল্প বয়সে হার্ট অ্যাটাক! অবাক লাগলেও সত্যি, অনেক কম বয়সেও হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। আজকে আমরা জানব, কেন অল্প বয়সে হার্ট অ্যাটাক হয়?
অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা,
ধূমপান:
অল্প বয়সে হার্ট অ্যাটাকের একটি বড় কারণ ধূমপান। ধূমপানে রক্তনালিতে ক্ষত তৈরি হয় এবং রক্তনালির ভেতর চর্বি জমাট বাঁধার প্রবণতা বেড়ে যায়।
মাদকাসক্তি:
হার্ট অ্যাটাকের আরেকটি বড় কারণ মাদকাসক্তি। কোকেন, ইয়াবা, গাঁজা, ইন্ট্রাভেনাস অ্যাবিউজিং ড্রাগ হার্টের রক্তনালির ক্ষতি করে এবং হৃৎস্পন্দন এলোমেলো করে, যা হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে।
মানসিক চাপ:
অতিরিক্ত উদ্বেগ, মানসিক চাপ হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
স্থূলতা:
হার্ট অ্যাটাকের আরেকটি বড় কারণ ওবেসিটি বা স্থূলতা। অতিরিক্ত ওজনের কারণে উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে চর্বি জমা বা কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়াসহ অনেক ধরনের অসুস্থতার ঝুঁকি থাকে।
অপর্যাপ্ত ঘুম:
দিনে কমপক্ষে ৮ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ে।
অলস জীবনযাপন:
নিয়মিত শরীরচর্চা করলে হার্টের কাজ করার ক্ষমতা যেমন বাড়ে, তেমনি উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও রক্তের চর্বির পরিমাণও কমে। অলস জীবন যাপন করলে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বেড়ে যায়।
অস্বাস্থ্যকর খাবার:
এখন অল্প বয়সীদের মধ্যে ঘরের বাইরে বা রেস্টুরেন্টে খাওয়ার প্রবণতা বেশি। বাইরের খাবারে অস্বাস্থ্যকর স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ট্রান্স ফ্যাট, অতিরিক্ত লবণ ও চিনি থাকে। এ খাবারগুলোর কারণে রক্তনালিতে চর্বি জমাট বাঁধাসহ হার্টের ক্ষতি হতে পারে।
বংশগত কারণ:
পরিবারে হৃদ্রোগের ইতিহাস থাকলে কম বয়সেও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি থাকে। তাই রোগীর পারিবারিক ইতিহাস জানা খুব গুরুত্বপূর্ণ। বাবা, বড় ভাই বা চাচাদের কেউ হার্টের অসুখে ভুগলে এর কারণ জানতে হবে এবং বংশগত কিছু আছে কি না দেখতে হবে।
প্রতিরোধের উপায়,
ধূমপান ও মাদকদ্রব্য পরিহার করতে হবে।
নিয়মিত শরীরচর্চার অভ্যাস ছোটবেলা থেকেই গড়ে তুলতে হবে।
স্বাস্থ্যকর খাবার, যেমন ফলমূল, শাকসবজি ও মাছ খেতে হবে এবং চর্বিযুক্ত খাবার, যেমন গরু ও খাসির মাংস, ফাস্ট ফুড ইত্যাদি খাওয়া কমাতে হবে।
পরিবারের হৃদ্রোগের ইতিহাস থাকলে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে।
ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ থাকলে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
মানসিক চাপ কমাতে মেডিটেশন করা যেতে পারে।