নিজস্ব প্রতিবেদক,
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং বালু মিশ্রিত পাথর কোয়ারিতে অবৈধ পাথর উত্তোলন ও পরিবেশ বিধ্বংসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে এক সাঁড়াশি মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গতকাল ২৪শে জুন, ২০২৫ তারিখে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলা এই অভিযানে অবৈধ কার্যকলাপ বন্ধে প্রশাসনের কঠোর অবস্থান স্পষ্ট হয়েছে।
এসময় জাফলং-এর প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা এবং খনি ও খনিজ সম্পদ বিধিমালা, ২০১২ এর যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করাই ছিল এই অভিযানের মূল লক্ষ্য। সিলেট জেলা প্রশাসন এবং গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় এই মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়। বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর (বিএমডি) থেকে সহকারী পরিচালক মোঃ আল-আমিন প্রসিকিউশন কর্মকর্তা হিসেবে এবং হুমায়ুন কবির, সাঁটলিপিকার কাম কম্পিউটার অপারেটর, পেশকার এই অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এছাড়াও সিলেট জেলা পুলিশ, গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ সদস্য, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং আনসার বাহিনীর সদস্যরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে অভিযানের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করেন।
পরিদর্শনকৃত এলাকা ও প্রাপ্ত চিত্র
অভিযান কার্যক্রম বল্লাঘাট এলাকা থেকে শুরু হয়ে জাফলং-এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিস্তৃত হয়। এসময় বল্লাঘাট, চৈলাখাল ১ম খন্ড, চৈলাখাল ২য় খন্ড, চৈলাখাল ৩য় খন্ড ও জুমপাড়া এলাকা পরিদর্শন করা হয়।
এসময় পরিদর্শনকালে কোয়ারির মধ্যে কোনো পাথর ভাঙ্গার মেশিন বা অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের কোনো প্রত্যক্ষ চিত্র পরিলক্ষিত হয়নি। তবে, অবৈধভাবে উত্তোলিত পাথর পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত বেশ কিছু নৌকা ঘাটে ভেড়ানো অবস্থায় দেখা যায়। উল্লেখ্য, নৌকাগুলো খালি ছিল এবং ঘটনাস্থলে কোনো নৌকাচালককে পাওয়া যায়নি। এটি
এছাড়াও অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন এবং পরিবেশের ক্ষতি সাধনের বিরুদ্ধে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। জাফলং-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় প্রশাসন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। যদিও অভিযানে কোনো সক্রিয় অবৈধ কার্যকলাপ ধরা পড়েনি, ঘাটে ভেড়ানো নৌকাগুলোর উপস্থিতি ভবিষ্যতে আরও নজরদারি এবং কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরে।
মনিজা খাতুন, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (সিনিয়র সহকারী সচিব), জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ, এর নেতৃত্বে এ অভিযান সফলভাবে পরিচালিত হয়েছে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের আকস্মিক অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং অবৈধ কার্যক্রমের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না। জাফলং-এর প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা এবং টেকসই খনিজ সম্পদ ব্যবস্থাপনার জন্য এই ধরনের পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি।