Monday, June 9, 2025
Homeলিড সংবাদপাহাড়ি ঢল আর বৃষ্টিতে সিলেটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, বন্যার শঙ্কা

পাহাড়ি ঢল আর বৃষ্টিতে সিলেটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, বন্যার শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক,

ভারি বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে সিলেটের একাধিক উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বাড়ছে নদ-নদীর পানি। ফলে সিলেটজুড়ে দেখা দিয়েছে আকস্মিক বন্যার শঙ্কা।

 

মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জের বেশকিছু নিচু এলাকা পানির নিচে চলে গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জাফলং।

 

সোমবার সকাল থেকে ভারতের মেঘালয় থেকে নামা পাহাড়ি ঢল প্রবেশ করতে শুরু করে জাফলংয়ের পিয়াইন নদীতে। মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে নদীর পানি বিপজ্জনক হারে বাড়তে থাকে। ওইদিন সকালে জাফলংয়ের জিরো পয়েন্টসহ আশপাশের পর্যটন ও আবাসিক এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ে। ফলে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সব ধরনের পর্যটন কার্যক্রম। প্রশাসনের নির্দেশে নিরাপত্তার স্বার্থে বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলা হয়েছে।

 

অন্যদিকে, পিয়াইন নদীর প্রবল স্রোতে শুরু হয়েছে ভাঙন। নদী তীরবর্তী বসতি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো পড়েছে হুমকির মুখে। নদীর পানির গতি ও চাপ বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় অনেক কাঁচা ঘরবাড়ি ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভাঙনের খবর পাওয়া গেছে, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলাতেও।

 

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সিলেট অঞ্চলে মাত্র তিন ঘণ্টায় ১০১ মিলিমিটার এবং সকাল ৬টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত নয় ঘণ্টায় রেকর্ড হয়েছে ১৮৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত। এছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টায় আরও ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এর ফলে নদ-নদীর পানি আরও বাড়তে পারে। বিশেষ করে সুরমা, কুশিয়ারা ও সারি নদীতে পানি বেড়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

 

এছাড়া ভারতের মেঘালয় ও আসামেও টানা ভারী বর্ষণ চলছে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে আরও ঢল নামতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

 

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, আপাতত নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে থাকলেও প্রবল বর্ষণ ও ঢলের কারণে পরিস্থিতি দ্রুত অবনতির দিকে যেতে পারে।

 

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসন, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা’ ঘোষণা করে আগাম সতর্কতা জারি করেছে। উদ্ধার ও সহায়তা কার্যক্রমের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে সেনাবাহিনী, রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবক দল এবং প্রয়োজনীয় নৌকা ও সরঞ্জাম। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনগণকে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থাকার এবং প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে।

 

ওইসব জেলার বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করে সতর্কতা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার অনুরোধ করা হচ্ছে।

 

তাছাড়া সিলেট মহানগর ও আশপাশের এলাকায় দিনভর বৃষ্টির কারণে দেখা দিয়েছে সাময়িক জলাবদ্ধতা। সড়কে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। অনেকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে বের হচ্ছেন না। নাগরিক জীবনে নেমে এসেছে ভোগান্তি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments